একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর || WB Class 11 history chapter 5 questions and answers in bengali
![]() |
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় "( Class 11 history chapter 5 questions and answers in bengali ) "অর্থনীতির বিভিন্ন দিক" এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় "মধ্য যুগে ভারতীয় বাণিজ্যের বিকাশে বিভিন্ন গিল্ডের ভূমিকা আলোচনা করো।" বিষয়টি বিস্তারে আলোচনা করবো। তোমাদের সামনের ইতিহাস পরিক্ষার জন্য " মধ্য যুগে ভারতীয় বাণিজ্যের বিকাশে বিভিন্ন গিল্ডের ভূমিকা আলোচনা করো। " প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নটি class 11 history exam 2020 তে এসেছিল। তাই এই প্রশ্নটি তোমাদের মন দিয়ে পড়া উচিৎ।।
মধ্য যুগে ভারতে বাণিজ্যের বিকাশে বিভিন্ন গিল্ডের ভূমিকা আলোচনা করো।
উওরঃ গিল্ড বলতে বোঝায়, যখন বিভিন্ন বণিকরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সংগঠন গড়ে তুলতো, তখন তাকে বলা গিল্ড বলা হতো। প্রাচীন ইউরোপের বিভিন্ন রকমের গিল্ডের অস্তিত্ব ছিল।যেমন বণিকদের গিল্ড, ভিক্ষুকদের গিল্ড, কারিগরদের শিল্পীদের গিল্ড প্রভৃতি। কিন্তু ভারতের শুধুমাত্র বিভিন্ন বণিকদের গিল্ড ই প্রধান ছিল। ভারতে সেই সমস্ত গিল্ডগুলো ভারতের বাণিজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। যেমন-
বিভিন্ন বণিকদের অর্থপ্রদানঃ ভারতের প্রাচীন গিল্ডগুলি বর্তমানকালের ব্যাংকের মতো কাজ করতো। যদি কোনো ব্যবসায়ীর কোনো সময় অর্থের প্রয়োজন হতো, তাহলে গিল্ডের কাছ থেকে বিভিন্ন শর্তের বিনিময়ে ঋণ গ্রহন করতে পারতো। গিল্ডের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার সুবিধা থাকায় অনেক ব্যবসায়ী এরকম ভাবে গিল্ড এর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ ব্যবসায় নিয়োগ করার সুযোগ পেয়েছিল। যার ফলে ভারতে ব্যবসার বিকাশ ঘটতে শুরু করেছিল।
স্থানীয় বাণিজ্য এবং শিল্পের রক্ষাঃ স্থানীয় অঞ্চলের বাণিজ্য এবং শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য যদি কোনো বৈদেশিক বাণিজ্য বা শিল্পের প্রবেশ ঘটতো,তাহলে গিল্ডগুলি সেই সমস্ত বৈদেশিক বাণিজ্য এবং শিল্পের প্রবেশ রোধ করে স্থানীয় বাণিজ্য এবং শিল্পকে রক্ষা করার মাধ্যমে শিল্পের উন্নতি ঘটাতো।
শ্রমিক এবং কাঁচামাল সরবরাহঃ গিল্ডগুলি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, বিভিন্ন বাণিজ্য কেন্দ্র এবং শিল্পকেন্দ্রের সবসময় কাঁচামাল সরবরাহ অব্যাহত রাখা এবং সেই বাণিজ্য ও শিল্পকেন্দ্রে যথেষ্ট দক্ষ এবং পরিশ্রমী শ্রমিকের জোগান দেওয়া। এছাড়াও গিল্ডগুলি শ্রমিকদের স্বার্থে বিভিন্ন রকম কাজকর্ম করতোন যেমন-
• শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করা।
• তাদের কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা ইত্যাদি।
এভাবে তারা শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে বলে, তা ভারতের বানিজ্য বিকাশে সহায়ক হয়ে উঠেছিল।।
গিল্ডগুলি সদস্যদের আর্থিক সহায়তাঃ গিল্ডের কোনো সদস্য যদি কোনো সময়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো, তাহলে গিল্ডের দায়িত্ব থাকতো সেই সদস্যকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা এবং সেই সদস্যের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া। গিল্ডের এরকম ভূমিকার জন্য অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং গিল্ডের সদস্য পদ গ্রহণের মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়োগ।।
বিভিন্ন পণ্যের গুণমান এবং মূল্য নির্ধারণঃ গিল্ডগুলি সবসময়ই বিভিন্ন শিল্পজাত দ্রব্য বা বাণিজ্যিক দ্রব্যের গুনাগুন নির্ধারণ করতো। তারা সময়ই সেই সমস্ত পণ্যের গুণমান উন্নত করার চেষ্টা করতো। এছাড়াও বিভিন্ন বাণিজ্যিক পণ্য বা দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করার করতো। এভাবে গিল্ডগুলি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করে যেত। এভাবে গিল্ডের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষিত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের পুঁজির পরিমাণ বাড়তে থাকে। ফলে ব্যবসায়ীরা পরবর্তীতে আরো নতুন নতুন ব্যবসায় নিজেদের সেই পুঁজি নিয়োগ করার সুযোগ পেয়েছিল। এভাবে তা ভারতের রাজ্যের বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।।
রাজস্ব প্রদানঃ গিল্ডগুলি নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করে রাজকীয় কাজে সাহায্য করতো। গিল্ডের প্রধান করা রাজস্বে রাজকোষ যথেষ্ট পরিমাণে শক্তিশালী হয়ে উঠতোন এর ফলে রাজা গিল্ডগুলির সহায়তা করার জন্য অর্থাৎ বাণিজ্যের বিকাশের জন্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন। যেমন বণিকদের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে নানা আইন প্রনয়ণ,যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, বণিকদের নিরাপত্তা বাড়ানো ইত্যাদি নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে রাজা পরোক্ষভাবে গিল্ডের মাধ্যমে বাণিজ্যের বিকাশে সহায়তা করতো।।
এরকম আরো নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে ভারতীয় গিল্ডগুলি ভারতের বাণিজ্যের বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।।