|
নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর |
আজের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় উনবিংশ শতকের ইউরোপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত ( WBBSE Class 9 History Question Answer & Notes in Bengali ) অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ 4 মার্কের প্রশ্ন 'মেটারনিক তন্ত্র বা মেটারনিক ব্যবস্থা কাকে বলে? মেটারনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো বা টীকা লেখো।' এর উওর ( WBBSE Class 9 Question Answer & Suggestion 2023 ) তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আর আমরা প্রতিদিন তোমাদের জন্য নোটস শেয়ার করে যাবো। তাই তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকো।।
1848 খ্রিস্টাব্দের ফেব্রূয়ারি বিপ্লবের কারণ গুলি আলোচনা করো
ভূমিকাঃ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুলাই বুরবো বংশের রাজা দশম চার্লস অর্লিয়েন্স বংশের লুইফিলিপকে ফ্রান্সের সিংহাসনে বসান। এবং এভাবেই ফ্রান্সে অর্লিয়েন্স বংশের শাসন শুরু হয়। লুই ফিলিপের প্রতি প্রথমদিকে ফ্রান্সের জনগণের বিশ্বাস এবং সমর্থন থাকলেও পরবর্তীতে তাদের বিশ্বাস অনেকটাই কমে যায় এবং লুই ফিলিপের তাদের বিশ্বাস এবং সমর্থকদের কমতে শুরু করে। এরপর লুই ফিলিপে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং কার্যকলাপে অসন্তুষ্ট জনগণ 1848 খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব শুরু করে। এর পেছনে মূলত যে সমস্ত কারণ ছিল, তা হলো -
দুর্বল শাসন ব্যবস্থাঃ
জুলাই বিপ্লবের কারণ হিসেবে অনেকেই লুই ফিলিপের দুর্বল শাসনব্যবস্থাকে দায়ী করেন। কারণ লুই ফিলিপের শাসনব্যবস্থা ফ্রান্সের জনগণকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। লুই ফিলিপের তার ব্যবস্থা না ছিল রক্ষণশীল না ছিল উদারপন্থী আর নাতো ছিল নরমপন্থী।।
দ্রব্যের মূল্যে বৃদ্ধিঃ
ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের একটি অন্যতম কারণ ছিল
1846-47 খ্রিস্টাব্দের খাদ্য এবং অর্থসংকট। এই সময়টাতে ইউরোপে খাদ্যশস্যের অজন্মা থেকে খাদ্য সঙ্কটের সৃষ্টি হয়। ফলে ফ্রান্সে ময়দার দাম অনেকটাই বেড়ে যায়। কিন্তু তখন সাধারণ মানুষের সেই অতি মূল্যবান ময়দা কেনার ক্ষমতা তাদের হাতে ছিল না। যার ফলে দেশের জনসাধারণকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংকটের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু এই খাদ্য সংকট কাটিয়ে ওঠার মতো কোনো পদক্ষেপ লুই ফিলিপ গ্রহণ করেনি বা গ্রহণ করতে সক্ষম হননি।।
নিম্ন বুর্জোয়াশ্রেণীর ক্ষোভঃ
ঐতিহাসিক জ্যাক ড্রহ মনে করেন যে, 1848 খ্রিস্টাব্দে ফেব্রূয়ারি বিদ্রোহ ছিল উচ্চ বুর্জোয়াশ্রেণীর বিরুদ্ধে নিম্ন বুর্জোয়াশ্রেণীর বিদ্রোহ কারণ। উচ্চ বুর্জোয়াশ্রেণীর লোকেরাই একচেটিয়া মুনাফা এবং ভোট অধিকার ভোগ করতো। এবং লুই ফিলিপ সবসময় তাদেরকেই অধিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকতেন। কিন্তু অন্যদিকে তিনি কখনোই সাধারণ নিম্ন বুর্জোয়াশ্রেণীর মানুষদের গুরুত্ব দেননি বা তাদের অধিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার সুযোগ দেননি। যার ফলে সাধারণ বা নিম্ন বুর্জোয়াশ্রেণীর ক্ষোভ সাধারণভাবেই লুই ফিলিপ এবং উচ্চ বুর্জোয়াশ্রেণীর মানুষের উপর এসে পড়ে।
ভোটাধিকার সংক্রান্ত সমস্যাঃ
ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের একটি অন্যতম কারণ ছিল ফ্রান্সের শ্রমিক শ্রেণীর ভোটাধিকার এবং কর্মহীন ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের দাবি। কিন্তু লুই ফিলিপ সাধারণ শ্রমিক শ্রেণীর ভোটাধিকার এবং কর্মহীন ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের দাবীর মধ্যে কোনটাই গুরুত্ব দেননি অথবা মেনে নিতে চাননি। তৎকালীন সময়ে ফ্রান্সের দুই কোটি কুড়ি লক্ষ মানুষের মধ্যে ভোটাধিকার প্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র 2 লক্ষ। ভোটাধিকারের ক্ষেত্রে এই অসামান্যতা এবং নির্বাচন ব্যবস্থার অনেক ভুল ত্রুটি-বিচ্যুতি জনগণকে বিপ্লবের পথে ঠেলে দেয়।।
লুই ফিলিপের স্বৈরাচারীতাঃ
জুলাই বিপ্লবের পর যখন লুই ফিলিপ সিংহাসনে বসে ছিলেন, তখন তিনি তার শাসন ব্যবস্থায় সাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার শপথ নিলেও তিনি বাস্তবে তা প্রয়োগ করেনি। তিনি মূলত ধনী অথবা উচ্চ বুর্জোয়াশ্রেণীর
সাহায্যে তিনি স্বৈরশাসন চালাতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে ফ্রান্সের জনসাধারনের সব আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের কথা তিনি চিন্তাই করেননি। তিনি মূলত সাধারণ মানুষের স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে ভুলে গিয়েছিলেন।
দুর্বল পররাষ্ট্রনীতিঃ
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মতো লুই ফিলিপও একটি শক্তিশালী পররাষ্ট্র নীতি গড়ে তুলতে পারেননি। তিনি পোল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েও নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিলেন। বেলজিয়ামের স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পরাজিত হন। বেলজিয়ামের অধিবাসীরা লুই ফিলিপের পূত্রকে সিংহাসনে বসাতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু পামারস্টোনের কূটকৌশলে তিনি রাজি হননি। এরকম অভ্যন্তরীণ এবং পররাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সে লুই ফিলিপের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ ক্ষুব্ধ হয় এবং তারা বিপ্লবের পথে নিজেদের নিয়ে যায়।।
মূলত উপরোক্ত কিছু কারণ ছাড়াও আরও নানা ছোটখাটো কারণে ফ্রান্সের বিক্ষুব্ধ জনগণ, লুই ফিলিপে শাসনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বিপ্লব শুরু করেন। 1848 খ্রিস্টাব্দের 22 এবং 23 শে ফেব্রুয়ারি রাজধানী প্যারিসের সর্বত্র তারা দাঙ্গা এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে এবং তারা রাজার পদত্যাগ দাবি করে। এর ফলে রাজা ফিলিপ 24 শে ফেব্রুয়ারি সিংহাসন ত্যাগ করে ইংল্যান্ডে চলে যান এবং এভাবেই ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটে।।
Tags :
নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস 9 ইতিহাস উনবিংশ শতকের ইউরোপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস 9 ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | class 9 history first chapter notes | wb class 10 history question answer | wb class 9 history suggestion 2023 | History question answer