যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর
আজকের এই ব্লগ একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় " সরকারের বিভিন্ন রূপ " থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। এবং সেখান থেকে যেই প্রশ্নটি তোমাদের পরিক্ষায় থাকতে পারে, তা হলো " যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা করো। আজকে আমরা একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় " সরকারের বিভিন্ন রূপ " থেকে " যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য কি কি? - এই প্রশ্নটির মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ নোট তোমাদের সাথে শেয়ার করবো। পরবর্তীতে তোমরা একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় সহ অন্যান্য অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর আমাদের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবে।
Table Of Contents | আজকের বিষয়
• একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উওর
• যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে
?
• যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা কাকে বলে?
• যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?
• যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে
?
• যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা কাকে বলে?
• যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর
◆ যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার অথবা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা
অধ্যাপক কে.সি.হোয়ার বলেছেন - যুক্তরাষ্ট্র হলো এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে সংবিধান অনুসারে সমগ্র দেশের সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে এমন ভাবে ক্ষমতা বন্টিত হয় যাতে উভয় প্রকার সরকারই নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীনভাবে এবং পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে কার্য সম্পাদন করতে পারে।
আবার অধ্যাপক ফাইনারের মতে - যুক্তরাষ্ট্র হলো এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের কিছু অংশ আঞ্চলিক সরকারের হাতে এবং অপর অংশ সরকার কর্তৃক স্বেচ্ছাকৃতভাবে সৃষ্ট কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে।
বর্তমানে বার্চ এর প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুসারে - যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বলতে এমন এক শাসন ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে একটি সাধারণ সরকার ও কতগুলি আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা এমন ভাবে বন্টিত হয় যে,তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং তাদের প্রত্যেকে শাসন বিভাগীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে জনগণকে শাষণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংজ্ঞাকে বিশ্লেষণ লরলে আমরা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই। যেমন -
◆ দুই প্রকারের সরকারের অস্তিত্ব -
যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দুই প্রকারের সরকারের অস্তিত্ব থাকে। যথা একটি হলো কেন্দ্রীয় সরকার এবং অপরটি হল আঞ্চলিক সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় সমস্ত দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করে থাকে কেন্দ্র সরকার। এবং আঞ্চলিকভাবে নির্দিষ্ট অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনা করে ক্ষমতায় থাকা বিভিন্ন আঞ্চলিক সরকারগুলি। এরূপ দুই প্রকারের সরকারের উপস্থিত থাকার ফলে,বিভিন্ন সরকারি কাজকর্ম করতে বিশেষ সুবিধা হয়।
◆ ক্ষমতার বন্টন : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল,এরূপ শাসন ব্যবস্থায় সংবিধান অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতার নির্দিষ্ট করা থাকে। কোন সরকারের হাতে কীকী ক্ষমতা থাকবে, তা সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত হয় এবং উভয় প্রকার সরকার ই ক্ষমতার বিষয়ে সংবিধানের নির্দেশ মেনে চলতে বাধা থাকে। প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক নীতি, মুদ্রাব্যবস্থা প্রভৃতি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকে এবং শিক্ষা স্থানীয় শান্তিরক্ষা, কৃষি,জলসেচ,স্থানীয় সংস্কৃতি প্রভৃতি আঞ্চলিক সরকারের হাতে অস্ত্র থাকে।
◆ সংবিধানের প্রাধান্য : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধান অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকার গুলির মধ্যে ক্ষমতা বন্টন করে দেওয়া হয়।যদি সংবিধানের প্রাধান্য না থাকতো তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বিষয়ে পরস্পরের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হতো। এবং কেন্দ্রীয় সরকার সুযোগ পেলেই আঞ্চলিক সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করতো। সুতরাং,সংবিধানের প্রাধান্য থাকার ফলেই কেন্দ্রীয় সরকার নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে না।
◆ লিখিত সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধান অবশ্যই লিখিতভাবে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে সংবিধান অনুসারে ক্ষমতা বন্টিত হয়, সেহেতু সংবিধানকে লিখিত হতে হয়। সংবিধান যদি লিখিত না হতো? তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা নির্দিষ্ট করা যেত না। ফলে ক্ষমতা নিয়ে দুই প্রকার সরকারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হতো।
◆ যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের উপস্থিতি :
যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় একটি নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন আদালতের উপস্থিতি থাকে। সংবিধানের ব্যাখ্যা এবং রক্ষাকর্তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় একটি স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা থাকে। নিয়ে যদি কখনো কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতার পরিধি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়, তখন সেই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সংবিধানের ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। তখন সেই বিরোধ নিষ্পত্তির কাজটি করে থাকে আদালত।
◆ দ্বি-নাগরিকত্ব ; যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দুই প্রকার নাগরিকত্ব রয়েছে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের অস্তিত্ব রয়েছে, সেজন্য নাগরিকদের দুই প্রকার সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতে হয়। এইভাবে আনুগত্য প্রদর্শন করার ফলে নাগরিকরা একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকার বা সমগ্র দেশের নাগরিক অন্যদিকে তেমন তারা নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যের নাগরিক। সুতরাং এই ভাবে তারা দ্বিনাগরিকত্ব লাভ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এরুপ দ্বিনাগরিকত্ব রয়েছে।
◆ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা : যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার উপস্থিত। আইনসভার নিম্নকক্ষ হলো জনপ্রতিনিধিত্বমূলক কক্ষ। এবং আইনসভার উচ্চকক্ষ হল অঙ্গরাজ্যগুলির প্রতিনিধিদের জন্য। (যেমন - ভারতের ক্ষেত্রে রাজ্যসভা হলো উচ্চকক্ষ এবং লোকসভা হলো নিম্ন কক্ষ।
আশাকরি যে, আজকের ব্লগের একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় " সরকারের বিভিন্ন রূপ " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাষন কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। " তার উওর পেয়ে গেছো। যদি এই পোস্টটি তোমাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোস্ট গুলো পড়ে দেখো।
Tags :