সংবিধান কাকে বলে? সংবিধানের প্রকারভেদ | লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় প্রশ্ন উওর
কিছুদিন আগেই আমরা একটি পোস্টের মাধ্যমে একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2022 ( wb class 11 political science suggestion 2022 ) এ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন শেয়ার করেছিলাম। আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা সেই রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন ( wb class 11 political science ) এর কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উওর শেয়ার করবো। আজকে একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় " সংবিধান ( Constitution ) " থেকে যেই প্রশ্নটি তোমাদের সামনের পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তার উওর তোমরা পেয়ে যাবে। প্রশ্নটি হলো " সংবিধান কাকে বলে? সংবিধান কত প্রকার ও কী কী? লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য " আজকে আমরা একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় সংবিধান( Constitution ) থেকে শুধুমাত্র " সংবিধান কাকে বলে? লিখিত সংবিধান কাকে বলে? অলিখিত সংবিধান কাকে বলে? সুপরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে? দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে বলে? লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্যগুলি " সম্পর্কে আলোচনার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ নোট শেয়ার করবো। পরবর্তীতে তোমরা একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় সহ অন্যান্য অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর আমাদের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবে।
আজকের বিষয় | Table Of Contents
• সংবিধান কাকে বলে?
• লিখিত সংবিধান কাকে বলে?
• অলিখিত সংবিধান কাকে বলে?
• সুপরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে?
• দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে বলে?
• লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্যগুলি
• লিখিত সংবিধান কাকে বলে?
• অলিখিত সংবিধান কাকে বলে?
• সুপরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে?
• দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কাকে বলে?
• লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্যগুলি
সংবিধান কাকে বলে? সংবিধানের প্রকারভেদ | লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় প্রশ্ন উওর
উওর ;
কোনো রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য একান্তভাবে প্রয়োজনীয় মৌলিক নিয়ম-কানুনের সমষ্টিকে সংবিধান অথবা শাসনতন্ত্র বলা হয়।
সংবিধানকে মূলত দুইভাগে ভাগ করা হয়। যথা - ১- লিখিত ও অলিখিত সংবিধান এবং ২- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান।
◆ লিখিত সংবিধানের সংজ্ঞা : কোনো দেশের শাষন ব্যবস্থা সম্পর্কিত মৌলিক নীতিগুলির অধিকাংশ বা সবগুলোই যখন একটি বা কয়েকটি দলিলে লিপিবদ্ধ করা থাকে, তখন তাকে লিখিত সংবিধান বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুজারল্যান্ড,ভারত প্রভৃতি দেশে লিখিত সংবিধান রয়েছে।
◆ অলিখিত সংবিধান : কোনো দেশের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কিত মৌলিক নীতিগুলি যখন লিখিত না হয়ে সেই দেশের প্রথা, আচার - আচরণ, বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে,তখন তাকে অলিখিত সংবিধান বলে। ব্রিটেনের সংবিধান রয়েছে।
◆ সুপরিবর্তনীয় সংবিধান : সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলতে সেইসব সংবিধানকে বোঝায়,যেসব সংবিধানকে আইনসভা নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে। সুতরাং, আইনসভা যেসব সংবিধানে সাধারন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সংশোধন করতে পারে,তাকে সুপরিবর্তনীয় সংবিধান বলে।
◆ দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলতে সেই সমস্ত সংবিধানকে বোঝায়,যে সংবিধান কোনো পদ্ধতি অনুসারে সংশোধন অথবা পরিবর্তন করা যায় না, সংবিধানের কোনো অংশের পরিবর্তনের জন্য বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়, তাকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য
ভূমিকা : লিখিত ও অলিখিত সংবিধান হলো দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের সংবিধান। তাই লিখিত সংবিধান এবং অলিখিত সংবিধানের মধ্যে একাধিক পার্থক্য রয়েছে। যেমন -
◆ উদ্ভবগতপার্থক্য : লিখিত সংবিধান একটি সংবিধান পরিষদ বা কনভেনশন কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত এবং প্রযুক্ত হয়।
কিন্তু কিন্তু অলিখিত সংবিধান গুলি প্রথা,আচার-ব্যবহার,রীতিনীতি এবং বিচারালয়ের রায় প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
◆ সংবিধানের প্রাধান্য : লিখিত সংবিধানে সংবিধান হলো দেশের সর্বোচ্চ আইন। কোনো সরকার, প্রতিষ্ঠান বা কোনো ব্যক্তিই কখনো সাংবিধানিক আইনের বিরোধিতা অথবা সাংবিধানিক আইন ভঙ্গ হতে পারে না। যদি কেউ সাংবিধানিক আইন ভঙ্গ করে থাকে তাহলে তাকে উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানের সাংবিধানিক আইনের কোনো অস্তিত্ব থাকে না বলে সেখানে আইনসভা প্রণীত আইনই শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে।
◆ সাংবিধানিক আইন এবং সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য : লিখিত সংবিধানে সাংবিধানিক আইন এবং সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। লিখিত সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ায় কেউ সংবিধান বিরোধী কোনো কাজ করতে পারে না। তাই সরকার সবসময় সংবিধান অনুসারে কাজ করতে বাধ্য থাকে। সরকার সাংবিধান ভঙ্গ করে নিজের ইচ্ছামত বা খেয়ালখুশি মতো কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না। সরকার সংবিধান বিরোধী কোনো আইন প্রণয়ন করলে, সুপ্রিমকোর্ট তা বাতিল করে দিতে পারে।
সুতরাং লিখিত সংবিধানে সাংবিধানিক আইন এবং সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানের আইনসভা রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী বলে সরকার যে কোনো যেকোনো যেকোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে। সুতরাং অলিখিত সংবিধানে সাংবিধানিক আইন এবং সাধারণ আইনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
◆ বিচার বিভাগের প্রধান্যে : লিখিত সংবিধানের বিচার বিভাগের প্রাধান্য রয়েছে। কখনো যদি সংবিধান বিরোধী কোনো কাজ করা হয় অথবা সংবিধান বিরোধী আইন প্রণয়ন করা হয়,তাহলে বিচার বিভাগের হাতে ঠিক আছে বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে বা সে আইনকে বাতিল করে দেবার ক্ষমতা রয়েছে। এবং এভাবে বিচারালয় সংবিধানের পবিত্রতা রক্ষা করে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে বিচার বিভাগের হাতে এরুপ কোনো ক্ষমতা নেই। অলিখিত সংবিধানের আইন বিভাগ যেসব আইন প্রণয়ন করে,সেগুলো বাতিল করার ক্ষমতা কারোর থাকেনা।
◆ নাগরিকদের মৌলিক ধিকার সমূহ : লিখিত সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহ লিপিবদ্ধ করা থাকে বলে,নাগরিকদের মধ্যে নিজেদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকে। এবং শাসন বিভাগ বা আইন বিভাগ ওই সব মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে অথবা সেগুলিকে খর্ব করার চেষ্টা করলে জনসাধারণ তার বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে।
তাই লিখিত সংবিধান ব্যক্তি-স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারের রক্ষাকবচ বলে বর্ণনা করা হয়। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহ লিপিবদ্ধ করার থাকে না বলে,নাগরিকদের মধ্যে নিজেদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না। তাই সরকার, শাসন বিভাগ বা আইন বিভাগ যদি কখনো নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করে, তাহলেও নাগরিকরা তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়।
◆ সুস্পষ্টতা :
লিখিত সংবিধানে সংবিধান গুলি লিখিত হওয়ার কারণে সেই সমস্ত লিখিত সংবিধান স্পষ্ট হয়। যার ফলে সেগুলিকে ব্যাখ্যা করা খুব সহজ। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে সংবিধান গুলিলিখিত আকারে থাকে না বলে সেগুলো অস্পষ্ট এবং সেগুলিকে ব্যক্ষা করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা,
লিখিত সংবিধান ও অলিখিত সংবিধান সম্পূর্ণ বিপরীত ধরনের সংবিধান। এবং অলিখিত সংবিধানের চেয়ে লিখিত সংবিধান অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা জনক। কিন্তু আমাদের একটি বিশেষ কথা মাথায় রাখা উচিৎ যে, সংবিধান কখনোই সম্পূর্ণ ভাবে লিখিত বা অলিখিত হতে পারে না। লিখিত সংবিধানের মধ্যেও কিছু অংশ অলিখিত অবস্থায় রয়েছে। এবং অলিখিত সংবিধানের মধ্যেও কিছু অংশ লিখিত ভাবে রয়েছে।
আশাকরি যে, আজকের এই একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় " সংবিধান " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " সংবিধান কাকে বলে? সংবিধানের প্রকারভেদ গুলি আলোচনা করো। লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য " এর উওর পেয়ে গেছো। যদি এই পোস্টটি তোমাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোস্ট গুলো পড়ে দেখো।
Tags :