জ্ঞানের উৎস ও স্বরুপ সম্পর্কে ইয়ানুয়েল কান্টের বিচারমূলক অভিমত ব্যাখ্যা অথবা জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে বিচারবাদী দার্শনিকের মতামত | একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ থেকে তোমাদের বড় প্রশ্ন রয়েছে। wb class xi philosophy 2nd অধ্যায়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " জ্ঞানের উৎস ও স্বরুপ সম্পর্কে কান্টের বিচারমূলক অভিমত ব্যাখ্যা করো বা, জ্ঞানের উৎপত্তি এবং জ্ঞানের স্বরূপ সম্পর্কে বিচারবাদী দার্শনিক কান্টের মতবাদ " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আজকের এই ব্লগে আমরা জ্ঞানের উৎস এবং জ্ঞানের স্বরূপ সম্পর্কে নরমপন্থী বিচারবাদী দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের মতবাদটি সবিস্তারে আলোচনা করবো।।
Table Of Contents
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদী দার্শনিকের মতামত
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতামত
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে ইমানুয়েল কান্টের মতবাদ
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে নরমপন্থী বিচারবাদী দার্শনিকের মতবাদ
• কান্টের মতে জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধির ভূমিকা
• জ্ঞানের স্বরূপ সম্পর্কে বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতার ভূমিকা
•একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
• wb class 11 philosophy Question answer & notes
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতামত
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে ইমানুয়েল কান্টের মতবাদ
• জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে নরমপন্থী বিচারবাদী দার্শনিকের মতবাদ
• কান্টের মতে জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধির ভূমিকা
• জ্ঞানের স্বরূপ সম্পর্কে বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতার ভূমিকা
•একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
• wb class 11 philosophy Question answer & notes
জ্ঞানের উৎস ও স্বরুপ সম্পর্কে ইয়ানুয়েল কান্টের বিচারমূলক অভিমত ব্যাখ্যা অথবা জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে বিচারবাদী দার্শনিকের মতামত | একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
ভূমিকা : পাশ্চাত্য দর্শনের জ্ঞানের উৎস এবং স্বরুপ সম্পর্কে দুটি বিরোধী মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। একটি বুদ্ধিবাদীদের অভিমত এবং অপরটি হলো অভিজ্ঞতাবাদীদের অভিমত। জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদীদের মতামত হল -বুদ্ধিই হল যথার্থ এবং প্রকৃত জ্ঞানের একমাত্র উৎস। এবং অপরদিকে অভিজ্ঞতাবাদীদের মতামত হল ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতাই হলো যথার্থ জ্ঞানের একমাত্র উৎস। এই দুটি সম্পূর্ণ বিরোধী মতবাদকে একত্রিত করে জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট, জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছেন। এবং তিনি নিজের মতো করে জ্ঞানের উৎস এবং স্বরুপ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন।
◆ জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে ইমানুয়েল কান্টের মতবাদ : জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদের মতামত হলো- বুদ্ধিই হল যথার্থ এবং প্রকৃত জ্ঞানের একমাত্র। প্রকৃত জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োজন হয় না।অপরদিকে জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদের মতামত হল, অভিজ্ঞতাই হল যথার্থ জ্ঞানের একমাত্র উৎস। জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো বুদ্ধির প্রয়োজন নেই। কান্ট এই দুই বিরোধী মতকে একত্রিত করে বলেছেন - যথার্থ এবং প্রকৃত জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে আমাদের বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা দুইয়েরই প্রয়োজন। অভিজ্ঞতা আমাদের যথার্থ জ্ঞান লাভের উপাদান দেয় এবং বুদ্ধি জ্ঞান জ্ঞানের উপাদান দেয়। সুতরাং এই দুইয়ের সমন্বয়ে আমাদের প্রকৃত এবং যথার্থ জ্ঞান লাভ হয়। ওয়ালস তার রিজেন এন্ড এক্সপেরিয়েন্স নামক গ্রন্থে কান্টের এই মতবাদ নরমপন্থী বুদ্ধিবাদ নামে অভিহিত করেছেন।
◆ জ্ঞানের বৈশিষ্ট্য : জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্টের মতবাদ অনুসারে জ্ঞানের দুটি বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত। একটি হলো তথ্যবিষয়ক বা নতুনত্ব এবং অপরটি হলো আবশ্যিক বা সার্বিক। বুদ্ধিবাদী দার্শনিকদের মতে প্রতিটি জ্ঞানই হলো আবশ্যিক বা সার্বিক। এবং অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতে প্রতিটি জ্ঞানই হলো তথ্য বিষয়ক। কিন্তু কান্টের মতবাদ অনুসারে যে জ্ঞানে কেবল নতুনত্ব আছে কিন্তু তার কোনো আবশ্যিকতা নেই, তা প্রকৃত জ্ঞান নয়। অপরপক্ষে যে জ্ঞান শুধুমাত্র সার্বিক কিন্তু তার মধ্যে কোনো নতুনত্ব নেই সেটাও প্রকৃত জ্ঞান নয়। প্রকৃত হবে সেটাই যেটা তবে আবশ্যিক বা সার্বিক এবং সেটা হবে তথ্য বিষয়ক । বুদ্ধিবাদী দার্শনিকগণ এবং অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকগন মনে করেন, সার্বিক এবং তথ্য বিষয়ক জ্ঞান কখনোই একটি মাত্র উৎস থেকে উৎপন্ন হতে পারে না বা কোনো জ্ঞান একই সঙ্গে সার্বিক এবং তথ্য হতে পারে না। কিন্তু কান্টের মতে, কোনো কোনো জ্ঞান একই সঙ্গে তথ্য বিষয়ক এবং অবশ্যিক দুই ই হতে পারে। যেমন - ভৌত বিজ্ঞানের বচনগুলো আবশ্যিক ও তথ্য বিষয়ক।
ভৌতবিজ্ঞানে বলা হয় - " প্রতিটি ঘটনার কারণ আছে " - এই বচনটি আবশ্যিক। কেননা - কোনো ঘটনা আছে যার কোনো কারণ নেই, এরকম চিন্তা অসম্ভব।
আবার উক্ত বচনটি তথ্যমূলক। কারণ এই বচনে বিধেয় ( কারণ ) উদ্দেশ্য (ঘটনা) সম্পর্কে নতুন তথ্য দান করছে।
এই ভাবে কান্ট দেখিয়েছেন যে, একই জ্ঞান একইসঙ্গে আবশ্যিক ও তথ্যবিষয়ক হয়। সুতরাং কান্টের মতবাদ অনুসারে জ্ঞানের আবশ্যিকতা হল বুদ্ধির অবদান এবং জ্ঞানের তথ্যপূর্ণতা বা নতুনত্ব হল অভিজ্ঞতার অবদান। সুতরাং এইভাবে কান্ট দেখিয়েছেন যে, জ্ঞানের উৎপত্তিতে একইসঙ্গে বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা দুইয়ের ই ভূমিকা রয়েছে।
জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে কান্টের আরেকটি মত হলো অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমরা জ্ঞানের উপাদানগুলিকে পাই কিন্তু উপাদান গুলি থাকে বিশৃংখল, অবিন্যস্ত অসংলগ্ন। বুদ্ধি এই বিশৃংখল,অবিন্যস্ত উপাদান গুলির তার আকার দান করে। আর তার ফলেই তা জ্ঞান পরিণত হয়। কান্ট বলেছেন - " বুদ্ধির আকার ছাড়া অভিজ্ঞতা অন্ধ আর আবার অভিজ্ঞতা ছাড় জ্ঞানের আকার শূন্যগর্ভ। কাজেই কান্টের সিদ্ধান্ত হলো - জ্ঞানের উৎপত্তির ব্যাপারে অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধি উভয়েরই প্রয়োজন আছে।
আশাকরি আজকের এই ব্লগ পোষ্ট থেকে তোমরা একাদশ শ্রেণীর দর্শন চতুর্থ অধ্যায়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন - " জ্ঞানের উৎস ও স্বরুপ সম্পর্কে ইয়ানুয়েল কান্টের বিচারমূলক অভিমত ব্যাখ্যা অথবা জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে বিচারবাদী দার্শনিকের মতামত " সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছো। যদি আজকের এই " জ্ঞানের উৎস ও স্বরুপ সম্পর্কে ইয়ানুয়েল কান্টের বিচারমূলক অভিমত ব্যাখ্যা অথবা জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে বিচারবাদী দার্শনিকের মতামত " সম্পর্কের আলোচনাটি ভালো লেগে থাকে,তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে করা একাদশ শ্রেণীর দর্শনের বিভিন্ন অধ্যায়ে অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ে দেখতে পারো।
Tags :