প্রাচীন পারস্যের স্ট্র্যাটাপি ব্যবস্থা কী? স্ট্র্যাটাপদের বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। || ক্লাস XI ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
![]() |
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর চতুর্থ অধ্যায় ( Class 11 history chapter 4 questions and answers in bengali ) " রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও তার শাসনতন্ত্র " ( Class 11 history chapter 4 questions and answers ) " থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন " প্রাচীন পারস্যের স্ট্র্যাটাপি ব্যবস্থা কী? স্ট্র্যাটাপদের বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো।" - এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। ক্লাস 11 ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় রাষ্ট্রের প্রকৃতি এবং তার শাসনতন্ত্র থেকে " প্রাচীন পারস্যের স্ট্র্যাটাপি ব্যবস্থা কী? স্ট্র্যাটাপদের বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো।" প্রশ্নটি তোমাদের সামনের পরিক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকের এই ক্লাস 11 এর ইতিহাস প্রশ্ন উওর একটু ভালো করে নোট করে নাও।।
প্রাচীন পারস্যের স্ট্র্যাটাপি ব্যবস্থা কী? স্ট্র্যাটাপদের বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ খ্রিস্টপূর্ব যুগে পৃথিবীতে যে সমস্ত শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, তার মধ্যে প্রাচীন পারস্যের আকিমেনীয় সাম্রাজ্য ছিল একটি অন্যতম সাম্রাজ্য। প্রাচীন আকিমেনীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল প্রাচীন মেসোপটেমিয়া, থ্রেস, মিশর, গ্রিস এবং এশিয়ার বৃহৎ অংশ। এত বিশাল পরিমাণ সাম্রাজ্যকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য, আকিমেনীউ সাম্রাজ্যের শাসনকর্তাদের শাসনকার্য পরিচালনা খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই সেই বিশাল পরিমাণ সাম্রাজ্যকে সঠিকভাবে পরিচালনা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য আকিমেনীয় সাম্রাজ্যের শার্ষনকর্তারা বিভিন্ন ধরনের প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলে।। যেমন - ব্যাকট্রীয়, মিডীও, আইয়োনীয় প্রভৃতি। প্রাচীন পারস্যের আকিমেনীয় সাম্রাজ্যের এরুপ প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থাই স্যাট্রাপি ব্যবস্থা নামে পরিচিত।
স্যাট্রাপি ব্যবস্থা এবং তাদের আত্মপ্রকাশঃ প্রাচীন পারস্যের বিভিন্ন প্রদেশে গুলি স্যাট্রাপি নামে পরিচিত ছিল। এবং প্রদেশগুলোকে সঠিকভাবে পরিচালনা এবং সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সেখানে আকিমেনীয় সাম্রাজ্যের প্রধান কর্মকর্তারা সেখানে একজন করে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিয়োগ করতেন। স্যাট্রাপি ব্যবস্থার প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে বলা হত স্যাট্রাপ। আনুমানিক 648 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে পারস্যের প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা শুরু হয় এবং পারস্যের মহান সম্রাট কাইরাসের সময় থেকে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব 530 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ স্যাট্রাপিদের আত্মপ্রকাশ ঘটে।।
স্ট্র্যাটাপদের বিভিন্ন কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা
স্যাট্রাপদের বিভিন্ন কাজকর্মঃ প্রাচীন পারস্যের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত স্যাট্রাপদের বিভিন্ন রকম প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে হতো। স্যাট্রাপদের ওপর বিভিন্ন কাজকর্মের থাকতো।। এবং তারা সব সময় সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করতো। যেমন-
কর আদায়ঃ প্রাচীন পারস্যের বিভিন্ন প্রদেশে গুলিকে বলা হতো স্যাট্রাপি এবং সেই প্রদেশের প্রধান শাসনকর্তা কে বলা হতো স্যাট্রাপ। সেই নির্দিষ্ট প্রদেশের প্রধান শাসনকর্তা বা স্যাট্রাপের প্রধান কাজ ছিল তার শাসনের অধীনে থাকা প্রদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের রাজস্ব বা কর আদায় করা এবং সেই কর নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বা সম্রাটের রাজকোশে জমা করা।।
বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ দমন করাঃ স্যাট্রাপদের আরো একটি প্রধান কাজ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যদি কখনো কোনো স্থানীয় বিদ্রোহ সংঘটিত হত, তাহলে সেই বিদ্রোহের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে, সেই স্থানীয় বিদ্রোহকেদমন করে কেন্দ্রীয় সরকারের ভিত নড়বড়ে হতে না দেওয়া।
শাসনকার্য পরিচালনা করাঃ একটি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কখনই একটি বিশাল আয়োতন সাম্রাজ্যের শাসন কার্য সঠিকভাবে এবং যথাযথ ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই সাম্রাজের বিভিন্ন প্রদেশের শাসন কার্য পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হতো স্যাট্রাপদের হাতে। স্যাট্রাপরা সেই দায়িত্ব অনুসারে নিজ নিজ প্রদেশে সঠিকভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন।।
বিভিন্ন বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করাঃ স্যাট্রাপগন নিজস্ব সামরিক বাহিনী গঠন করার মাধ্যমে, নিজস্ব শাসন অঞ্চল বা প্রদেশ কি সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও সেই প্রদেশের যদি কোনো বৈদেশিক আক্রমণ করে তাহলে স্যাট্রাপ সেই বৈদেশিক আক্রমণকে প্রতিহিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতো।।
প্রদেশের বাৎসরিক বিবরণঃ সাট্রাপদের নিজস্ব প্রদেশের বিভিন্ন কাজ কর্ম এবং প্রদেশ সংক্রান্ত নানা তথ্যের বিবরণ নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার অথবা সম্রাটের হাতে তুলে দিতে হতো।।
বিচারকার্যঃ স্যাট্রাপগন ছিলেন প্রদেশের প্রধান বিচার কর্তা বা শাসন বিভাগের প্রধান। স্যাট্রাপের হাতে সেই ক্ষমতা ছিল, যার মাধ্যমে স্যাট্রাপ নিজস্ব প্রদেশের বিভিন্ন ফৌজদারি এবং দেওয়ানী মামলার নিষ্পত্তি করতে পারতেন। স্যাট্রাপরা সে ক্ষমতার জোরে নিজের প্রদেশের বিভিন্ন ধরনের মামলার বিচার করতেন।।
এছাড়াও প্রাদেশিক শাসনকর্তা হিসেবে স্যাট্রাপদের বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতে হতো। যেমন- সামরিক ব্যবস্থা রক্ষা করা, বিভিন্ন স্থানীয় সমস্যার মোকাবিলা করা, আমলা নিয়োগ করা ইত্যাদি।।