উনিশ শতকের বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে লেখ | বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমি তোমাদের সঙ্গে দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় " বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন,যেটা প্রায়শই মাধ্যমিকে এসে থাকে সেটা নিয়ে একটি নোট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। " উনিশ শতকের বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে বা বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ " সম্পর্কে প্রশ্নটি তোমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। তাই এই প্রশ্নটি তোমাদের খুব ভালো করে পড়া উচিৎ। ক্লাস টেনের ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় " বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ " এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আমাদের ওয়েবসাইটে আগেও শেয়ার করা হয়েছে। আজকের পোস্টে " উনিশ শতকের বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা বা বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হবে।
উনিশ শতকের বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে লেখ | বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
◆ ভূমিকা : উনিশ শতকে ভারত তথা বাংলায় ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগে পাশ্চাত্য শিক্ষার মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষার বিকাশ শুরু হয়ে ছিল। কিন্তু যদিও এই কারিগরি শিক্ষার বিকাশের পেছনে ব্রিটিশ সরকারের নিজেদের স্বার্থ লুকিয়ে ছিল। কিন্তু তবুও তাদের হাত ধরেই মূলত কারিগরি শিক্ষার প্রসার শুরু হয়েছিল।
◆ কোম্পানির উদ্যোগ : ব্রিটিশ সরকার প্রথমদিকে এদেশের যেকোনো ধরনের শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। কিন্তু পরবর্তীকালে নিজেদের বিভিন্ন বিভাগে সরকারি কর্মচারী নিয়োগের জন্য তারা সাধারণ শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সড়ক পথ,রেল নির্মাণ শিল্প, বিভিন্ন শিল্প,কারখানার কাজ কর্মের ক্ষেত্রে প্রচুর সুদক্ষ কারিগর এর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ফলে ব্রিটিশ সরকার এই প্রয়োজনীয়তা মেটাতে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে নামমাত্র উদ্যোগ নিয়েছিল। কোম্পানির শাসন কালে তৎকালীন সময়ে মাত্র ছয়টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে রুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু সেইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কারিগরি শিক্ষা লাভ করা শিক্ষার্থীরা মূলত কোম্পানীর কেরানি হয়ে উঠতো। এবং ভারতীয়দের গোলাম করেই রাখা হতো।
আরও পড়ুন👇
◆ দেশীয় উদ্যোগে কারিগরি শিক্ষার বিকাশ এর উদ্যোগ : উনিশ শতকের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কোম্পানির কেরারি তৈরির জিনিসটা বুঝতে পারায়,সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোগে এবং ব্রিটিশ শাসনমুক্ত এমন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতভাবে নিজেদের দেশের স্বার্থে কারিগরি শিক্ষা লাভ করতে পারবে। তৎকালীন সময়ে যারা বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন বা উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন,তাদের মধ্যে তৎকালীন আইনজীবী তারকনাথ পালিত ছিলেন উল্লেখযোগ্য।
ক্লাস টেনের ইতিহাস মকটেস্ট দিতে নিচের লিঙ্কের ওপর ক্লিক করো👇
◆ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ : ব্রিটিশ প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধিতা এবং সম্পূর্ণ দেশীয় ধাঁচে একটি বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে 1905 খ্রিষ্টাব্দে 13 ই মার্চ 92 জন সদস্য নিয়ে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গড়ে ওঠে।। জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্দেশ্য ছিল মূলত সাহিত্য,বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার বিকাশ ঘটানো।
◆ বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা : স্বদেশী আন্দোলনের সময় কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বেসরকারি উদ্যোগের যে সমস্ত উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে তৎকালীন সময়ের বিশিষ্ট আইনজীবী তারকনাথ পালিত ছিলেন উল্লেখযোগ্য। তারকানাথ পালিতের প্রচেষ্টা 1906 খ্রিস্টাব্দের 25 শে জুলাই কলকাতায় " বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট " নামক একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। যা কারিগরি শিক্ষার বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
◆ উপসংহার, সুতরাং পরিশেষে বলা যায় যে উনিশ শতকে ব্রিটিশ কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে ভারত তথা বাংলায় কারিগরি শিক্ষার প্রসারে সামান্য উদ্যোগ নিলেও,পরবর্তীকালে বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোগে যে সমস্ত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছিল, মূলত তার মাধ্যমেই কারিগরি শিক্ষার প্রকৃত বিকাশ ঘটেছিল।
আশাকরি যে উপরের আলোচনা থেকে তোমরা ক্লাস টেনের ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় " বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ অধ্যায়ের " উনিশ শতকের বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে বা বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ " সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছো। এই অধ্যায়ের পরবর্তী কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলির উত্তর আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পরবর্তীকালে শেয়ার করব।
Tags :