আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব | আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের সীমাবদ্ধতা
আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব |
Table Of Contents
• সরকারি নথিপত্র কাকে বলে?
• সরকারি নথিপত্র কত প্রকার ও কি কি?
• আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব
• আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের সীমাবদ্ধতা
• সরকারি নথিপত্র কত প্রকার ও কি কি?
• আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব
• আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের সীমাবদ্ধতা
উওর : আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে অন্যান্য বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে সরকারি নথিপত্র হলো একটি অন্যতম উপাদান। সরকারি নথিপত্র বলতে বোঝায়, সরকারের অধীনস্থে কর্মরত বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী বা আধিকারিকদের বিভিন্ন প্রতিবেদন বা চিঠিপত্রকে।
সরকারি নথিপত্র মূলত চার প্রকার। যথা
• পুলিশ বিভাগের প্রতিবেদন
• গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদন
• সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন
• সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে প্রেরিত বিভিন্ন প্রতিবেদন।
সরকারি নথিপত্রে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিক বা কর্মচারীরা তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন ঘটনাবলির উল্লেখ করে থাকেন। সেক্ষেত্রে সেই সমস্ত চিঠিপত্র বা প্রতিবেদনের মাধ্যমে তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন ঘটনাবলী সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। তাই সেই সমস্ত সরকারি নথিপত্র গুলি তৎকালীন সময়ের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন -
আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব
◆ সরকারি আধিকারিকদের বা কর্মচারীর বিভিন্ন চিঠিপত্র বা রিপোর্ট : পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ, এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিক বা সরকারি কর্মচারীর বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে বিভিন্ন চিঠি পত্র পাঠাতো। সেই সমস্ত চিঠিপত্রে কালীন সময়ে বিভিন্ন গুপ্ত কাজকর্ম, বিভিন্ন বিপ্লব বা বিপ্লবীদের কাজকর্ম এবং বিদ্রোহ সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়।
◆ বিভিন্ন কমিশনের রিপোর্ট : বিভিন্ন সময়ে সরকার তাদের বিভিন্ন সমস্যা গুলি দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কমিশন গঠন করতো। সেই সমস্ত কমিশন সরকারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার জন্য বিভিন্ন ঘটনার বিচার বিশ্লেষণ করে সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন রিপোর্ট সরকার হাতে জমা দিতে। সরকার সেই রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতো। সরকারের কাছে প্রেরণ করা বিভিন্ন কমিশনের রিপোর্টগুলি থেকে তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন ঘটনার কথা জানতে পারা যায়। যেমন - সাইমন কমিশনের রিপোর্ট, হান্টার কমিশনের রিপোর্ট,,নীল কমিশন রিপোর্ট। এরুপ কয়েকটি রিপোর্ট ভারতের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
◆ বিভিন্ন বিদ্রোহ সম্পর্কে : সরকারি নথিপত্রে বিভিন্ন বিদ্রোহ সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়। কোন বিদ্রোহ দমনের ক্ষেত্রে সরকার ক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, তা সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা পুলিশ বিভাগের কাছে প্রেরণ করতো। সুতরাং,এরূপ চিঠিপত্র থেকে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য বিদ্রোহের অবসান সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়।
এছাড়াও, বিভিন্ন সরকারি নথিপত্রে ভারতীয় নানা সংস্কারমূলক কাজের প্রতি ব্রিটিশদের মনোভাব স্পষ্ট ভাবে যায়।
◆ ব্রিটিশের মনোভাব : ব্রিটিশদের আমলে বেশিরভাগ সরকারি নথিপত্র লেখা হতো ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কর্মরত বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের মাধ্যমে। যারা প্রত্যক্ষ ভাবে ব্রিটিশদের শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই ক্ষেত্রে সেই সমস্ত চিঠিপত্রে অনেক সময় ভারতবর্ষের শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও উল্লেখ করা হতো।
আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের সীমাবদ্ধতা :
তবে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে সরকারি নথিপত্রের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন -
• সরকারি নথিপত্রের সাহায্য ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকদের সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ সরকারি নথিপত্র বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে লেখা হতো বলে, উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন,জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও কার্যকলাপ সম্পর্কে সেগুলির মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেতিবাচক বর্ণনা পাওয়া যেত।
• সরকারি নথিপত্র থেকে নিরপেক্ষ ইতিহাস গড়ে তুলতে হলে নথিপত্র ব্যবহার ব্যবহারকারীকে নিরপেক্ষ ও নৈর্ব্যক্তিক হতে হবে।
• বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকারি নথিপত্র
গুলিতে কোন ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ থাকেনা। যার ফলে সরকারি নথিপত্রের উপর ভরসা করে কোন ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস চর্চা বা ইতিহাস রচনা সম্ভব নয়।
• সব সময়ই যে প্রত্যেকটি সরকারি নথিপত্র সঠিক হবে তার কোনো মানে নেই। বিভিন্ন সরকারি নথিপত্রের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণে ভুল থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি নথিপত্র গুলির সঙ্গে অন্যান্য কিছু ঐতিহাসিক উপাদানের সত্যতা যাচাই করে নেয়া প্রয়োজন।