জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ সম্পর্কে দেকার্তের মতবাদ সবিচার আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড় প্রশ্ন উত্তর
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ থেকে তোমাদের বড় প্রশ্ন রয়েছে। wb class xi philosophy 2nd অধ্যায়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ বিষয়ে দেকার্তের বক্তব্য সমালোচনা সহ আলোচনা বা, জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ আলোচনা করো " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
Table Of Contents
• একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
• wb class 11 philosophy Question answer & notes
• জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ বিষয়ে দেকার্তের বক্তব্য সমালোচনা সহ আলোচনা
• জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ আলোচনা করো
• দার্শনিক দেকার্তের মতে ধারণা কত প্রকার? বা দার্শনিক দেকার্ত কত প্রকার ধরনের কথা বলেছেন?
• আগন্তুক ধারণা কি
• কৃত্রিম ধারণা কি
• সহজাত ধারণা কি
• wb class 11 philosophy Question answer & notes
• জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ বিষয়ে দেকার্তের বক্তব্য সমালোচনা সহ আলোচনা
• জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত মতবাদ জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ আলোচনা করো
• দার্শনিক দেকার্তের মতে ধারণা কত প্রকার? বা দার্শনিক দেকার্ত কত প্রকার ধরনের কথা বলেছেন?
• আগন্তুক ধারণা কি
• কৃত্রিম ধারণা কি
• সহজাত ধারণা কি
জ্ঞানের উৎস ও স্বরূপ বিষয়ে দেকার্তের বক্তব্য সমালোচনা সহ আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণীর দর্শন বড় প্রশ্ন উত্তর
ভূমিকা : দেকার্তের মতে জ্ঞানের উৎস : পাশ্চাত্য দর্শনের বুদ্ধিবাদী দার্শনিক দেকার্তের মতে যথার্থ জ্ঞানের একমাত্র উৎস লোক বুদ্ধি। অর্থাৎ দেকার্তের মতে বুদ্ধির মাধ্যমেই আমাদের প্রকৃত ও যথার্থ জ্ঞান লাভ হয়।
বুদ্ধিবাদী দার্শনিক দেকার্তের মতে ধারণা হলো তিন প্রকার। যথা -
• আগন্তুক
• কৃত্রিম
• সহজাত ধারণা
◆ আগন্তুক ধারণা : দার্শনিক দেকার্তের মতে আগন্তুক ধারণা বলতে সে সমস্ত ধারণাকাকে,বোঝায় যে আমরা ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করি এবং প্রত্যেকের ফলে যেসব ধারণা আমাদের মনোজগতে আসে। যেমন- বই,খাতা,টেবিল ইত্যাদি।
◆ কৃত্তিম ধারণা : দার্শনিক দেকার্তের মতে কৃত্তিম ধারণা বলতে সমস্ত ধারণা কে বোঝায়,যার বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। আমরা আমাদের কল্পনার জগতে তা তৈরি করি। আমাদের মন যখন একটি ধারণা সঙ্গে অপর একটি ধারণা পরস্পর যুক্ত করে,একটি নতুন ধারণা সৃষ্টি করি তখন,তাকে বলে কৃত্তিম ধারণা।
যেমন - সোনার পাহাড় পক্ষীরাজ ঘোড়া ইত্যাদি।
◆ সহজাত ধারণা : দার্শনিক দেকার্তত্র মতে আগন্তুক ও কৃত্রিম -এই দুই প্রকার ধারণা স্পষ্ট ও স্বচ্ছ নয়। কিন্তু আমাদের মনের সহজাত ধারণা হলো স্পষ্ট ও স্বতঃসিদ্ধ। সহজাত ধারণা বলতে সেই সমস্ত ধারণাকে বোঝায় যা পূর্ব থেকেই মানুষের মনে থাকে। অর্থাৎ ঈশ্বর আমাদের জন্মের পরেই সেইসব সহজাত ধারণা আমাদের মনে গেঁথে দিয়েছেন। যেমন নিত্যতা, অসীমতা, পূর্ণতা ইত্যাদি ধারনা। এই সহজাত ধারণা স্পষ্ট এবং স্বতঃসিদ্ধ। এগুলো অভিজ্ঞতালব্ধ নয় কারণ এদের দ্বারাই আমাদের অভিজ্ঞতা লাভ সম্ভব হয়।।
দেকার্তের মতে গণিতশাস্ত্রে যেমন কতগুলি স্বতঃসিদ্ধ সূত্র থেকে অবরোহ পদ্ধতির মাধ্যমে নতুন সার্বিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব,ঠিক তেমনি দর্শনশাস্ত্রের সহজাত ধারণা থাকে অবরোহ পদ্ধতির মাধ্যমে যথার্থ সার্বিক জ্ঞান লাভ করা সম্ভব। এ জন্য পলসন দেকার্তের দর্শনকে গাণিতিক বুদ্ধিবাদ বলে অভিহিত করেছেন। দর্শনে গাণিতিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেকার্ত তাঁর প্রথম " আত্মার সুস্পষ্টতা " আবিষ্কার করেছিলেন। জ্ঞান অর্জন করার জন্য পৃথিবীর যাবতীয় বস্তুর প্রতি সন্দেহ করতে করতে এই সিদ্ধান্ত উপনীত হলেন যে,আমরা যদিও বিশ্বের সব কিছুকে সন্দেহ করতে পারি কিন্তু যে আত্মা বা মন সবকিছুকে সন্দেহ করছে,তাকে সন্দেহ করতে পারি না। সন্দেহ করার মানেই হলো এক প্রকার চিন্তা করা আর চিন্তা করার মানেই হলো তার অস্তিত্ব রয়েছে। এজন্য দেকার্ত বলেন - " আমি চিন্তা করি অতএব আমি আছি " - বুদ্ধির সাহায্যেই দেকার্ত আত্মার অস্তিত্ব প্রমাণ করেন। সুতরাং বুদ্ধিই নিশ্চিত জ্ঞান লাভেরএকমাত্র উৎস।।
দার্শনিক দেকার্তের জ্ঞান সম্পর্কিত মতবাদের সমালোচনা :
দার্শনিক ডেকার্ত জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত যে মতবাদ দিয়েছিলেন তা, বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়ে থাকে। যেমন -
◆ দার্শনিক দেকার্তের বুদ্ধিবাদকে প্রথমত এইভাবে সমালোচনা করা হয় যে - জ্ঞানের উৎপত্তির ক্ষেত্রে বুদ্ধির অবদান রয়েছে তা সত্য। কিন্তু কেবল বুদ্ধির দ্বারা জ্ঞান সম্ভব নয়। বুদ্ধি শুধুমাত্র জ্ঞানের আকার দিতে পারে কিন্তু জ্ঞানের উপাদান দিতে পারে না। যদি বুদ্ধির দ্বারা সহজাত ধারণা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই জ্ঞানের একমাত্র উপায় হয়,তাহলে জ্ঞানের অগ্রগতী বা নতুনত্বের বৈশিষ্ট্যটি পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।
◆ দ্বিতীয়তঃ বুদ্ধিবাদ মুখ্যত সহজাত ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু মানব মনে সহজাত ধারণার অস্তিত্ব সম্বন্ধে অনেক সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। বহু যুক্তির অবতারণা করে লক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে,সর্বজনস্বীকৃত কোনো সহজাত ধারণার অস্তিত্ব নেই। বস্তুত বিনা বিচারে কোনো ধারণাকে স্বতঃসিদ্ধ বলে স্বীকার করে নেওয়ার অর্থ হলো নির্বিচারবাদকে গ্রহণ করা। কাজের স্বতঃসিদ্ধ ধারণা যে যথার্থই স্বতঃসিদ্ধ তা প্রমাণ করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বুদ্ধিবাদীরা তা করেননি।
◆ দেকার্ত যে সহজাত ধারণার কথা বলেছিলেন,তার বিরুদ্ধে বলা হয় সহজাত ধারণা যদি আমাদের সবার মনের মধ্যে থাকতো, তাহলে তা সমান হতো এবং তার যদি ঈশ্বর আমাদের মনের মধ্যে তা দিয়ে থাকেন, তাহলে তা কখনোই একজন শিশুর মনের সহজাত ধারণা এবং একজন বয়স্ক লোকের মনের মধ্যে থাকা সহজাজ ধারণা পরিমাণ আলাদা হবে না।
পরিশেষে বলা যায়, দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ সমালোচিত হলেও,পাশ্চাত্য দর্শনে জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তার মতবাদ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
Tags :