ন্যায় দর্শন মতে প্রত্যক্ষের যে লক্ষণ রয়েছে তদেখা করো || একাদশ শ্রেণীর দর্শনের বড় প্রশ্নোত্তর

0

ন্যায় দর্শন মতে প্রত্যক্ষের যে লক্ষণ রয়েছে তদেখা করো || একাদশ শ্রেণীর দর্শনের বড় প্রশ্নোত্তর


প্রত্যক্ষের লক্ষণঃ ন্যায়শাস্ত্রে ‘প্রত্যক্ষ’ প্রমা এবং প্রমাণ উভয়ই। 

ন্যায় দার্শনিকগণের মতে, 'ইন্দ্রিয়ার্থ সন্নিকর্ষজন্যং জ্ঞানং প্রত্যক্ষম্'। অর্থাৎ ইন্দ্রিয় ও তার অর্থের সন্নিকর্ষের ফলে যে জ্ঞান উৎপন্ন হয়, তাই প্রত্যক্ষ জ্ঞান।  

• ন্যায়সূত্রের প্রণেতা মহর্ষি গৌতম প্রত্যক্ষের লক্ষণ দিতে গিয়ে বলেছেন - " ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে অর্থের ( ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য বিভিন্ন বিষয় ) সন্নিকর্ষের ফলে যে অব্যপদেশ্য, অব্যভিচারী ও ব্যবসায়ত্মক জ্ঞান উৎপন্ন হয়, তাই প্রত্যক্ষ।`

সুতরাং,মহর্ষি গৌতমের এই বক্তব্য থেকে আমরা প্রত্যেকের পাঁচটি লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারি। যথা- 

ইন্দ্ৰিয়ঃ ইন্দ্ৰিয়' শব্দটির দ্বারা চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক এই পাঁচটি বহিরিন্দ্রিয় এবং ‘মন’ নামক অন্তরিন্দ্রিয়কে বুঝতে হবে। পাঁচটি বাহ্য-ইন্দ্রিয়ের দ্বারা বাহ্যবস্তুর প্রত্যক্ষ হয়, আর মনের দ্বারা সুখ, দুঃখ প্রভৃতি আন্তর পদার্থের প্রত্যক্ষ হয়। তবে বাহ্য-ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে মনের সংযোগ না হলে বাহ্য-প্রত্যক্ষ হয় না।

অর্থঃ 'অর্থ' কথাটির অর্থ হল ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়। যেমন—'বর্ণ' হল চক্ষুরিন্দ্রিয়ের গ্রাহ্য বিষয় বা অর্থ। তার মানে–চক্ষু বর্ণের জ্ঞান দিতে পারে।

ঠিক একইভাবে যদি আমরা কর্ণের কথা বলি, তাহলে কর্ণ আমাদের বিভিন্ন শব্দের জ্ঞান দিতে পারে।।

সন্নিকর্ষঃ ‘সন্নিকর্ষ” বলতে ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে অর্থের যে সম্বন্ধ, সেই সম্বন্ধকে বোঝায়। সন্নিকর্ষ নানা প্রকারের হতে পারে। যেমন—সংযোগ, সমবায়, সংযুক্ত সমবায় ইত্যাদি।


অব্যপদেশ্যঃ ‘অব্যপদেশ্য' কথাটির অর্থ হল ‘অশব্দ' অর্থাৎ যা শব্দের দ্বারা ব্যক্ত নয়। সুতরাং গৌতমের মতে, এমন একপ্রকার প্রত্যক্ষ আছে, যা শব্দের দ্বারা ব্যক্ত নয়। এরূপ প্রত্যক্ষকে বলা হয় নির্বিকল্প প্রত্যক্ষ।

অব্যভিচারীঃ ‘অব্যভিচারী' কথাটির অর্থ হল 'যথার্থ বা বিষয়ের অনুরূপ'। কাজেই যে প্রত্যক্ষ বিষয়ের অনুরূপ নয়, তাকে ব্যভিচারী প্রত্যক্ষ বলে। এই ব্যভিচারী প্রত্যক্ষকেই বলা হয় ভ্রম-প্রত্যক্ষ। যেমন—রজ্জুতে সর্পভ্রম। কাজেই ভ্রম-প্রত্যক্ষ ব্যভিচারী, আর যথার্থ প্রত্যক্ষ অব্যভিচারী।

ব্যবসায়ত্মকঃ  ব্যবসায়ত্মক' কথাটির অর্থ হল 'নিশ্চয়াত্মক জ্ঞান। প্রত্যক্ষ জ্ঞানের ক্ষেত্রে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। সংশয়মুক্ত জ্ঞানই প্রত্যক্ষ। সেই সংশয়মুক্ত জ্ঞানকেই বলা হয় ব্যবসায়ত্মক বা নিশ্চয়াত্মক জ্ঞান।

Tags: 

একাদশ শ্রেণির ন্যায় দর্শন বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস xi ন্যায় দর্শন বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস 11 ন্যায় দর্শন 8 মার্কের প্রশ্ন উওর | ক্লাস 11 ভারতীয় দর্শনের বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস xi দর্শন চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর |  ক্লাস 11 দর্শন নোট | ক্লাস ইলেভেন দর্শন বড় প্রশ্ন উত্তর | class 11 philosophy question answer | wb class 11 philosophy Notes | class 11 philosophy suggestion | class 11 philosophy suggestion 2022 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top