ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর
![]() |
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ( Class 11 history chapter questions and answers in bengali ) অর্থনীতির বিভিন্ন দিক অধ্যায়ের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর ( Class 11 history chapter 5 questions and answers ) দেবো। এবং সেইসঙ্গে একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস বড় প্রশ্ন উত্তর হিসাবে একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়( Class 11 history questions answers chapter 5 ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য কি কি " প্রশ্নটির উওর একাদশ শ্রেণির ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথা কাকে বলে? ম্যানর ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ ম্যানর প্রথা অথবা ম্যানর ব্যবস্থা হল ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের সঙ্গে জড়িত একটি দিক। ম্যানার ব্যবস্থার অপর নাম হল সিনোরীয় ব্যবস্থা। তৎকালীন ইউরোপের সামন্ততন্ত্রে বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করতো। সামন্ততন্ত্রের অধীনে বসবাসকারী সেই সমস্ত গ্রামীন মানুষদের নিয়ে গঠিত এক বা একাধিক গ্রাম নিয়ে সামন্তপ্রভুদের যে শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠতো তাই ম্যানর প্রথা বা ম্যানর ব্যবস্থা নামে পরিচিত।।
ইউরোপের সেই ম্যানর ব্যবস্থা বা ম্যানর প্রথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ছিল। যেমন -
ম্যানর প্রভুঃ ম্যানর ব্যবস্থা একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ম্যানর প্রভুর অস্তিত্ব। ম্যানর ব্যবস্থার সবচাইতে ক্ষমতাশালী অথবা ম্যানর ব্যবস্থার সবচেয়ে উপরে অবস্থানকারী ব্যক্তিকে ম্যানর প্রভু বলা হতো। ম্যানর প্রভু ম্যানর ব্যবস্থা সাহায্যে তার অধীনস্থ কৃষক,সাধারণ মানুষ, জমির উৎপাদন, শিল্প, বাণিজ্য,বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম, শাসন ইত্যাদির দেখাশোনা করতেন।।
ম্যানর হাউসঃ প্রতিটি ম্যানর ব্যবস্থায় একটি করে ম্যানর হাউস থাকতো। ম্যানর হাউস হল ম্যানর প্রভু বা সামন্ত প্রভুদের আবাসস্থল। সামন্ত প্রভুরা তার আত্মীয় পরিজন ও কর্মচারীদের নিয়ে ম্যানর হাউসে বসবাস করতেন। ম্যানর হাউস গুলি আকৃতিতে হতো বিশাল। সেখানে বসবাস করার জন্য ম্যানর হাউস গুলির মধ্যে নানা ধরনের ব্যবস্থা বা সুযোগ সুবিধা করা হতো।।
জমিঃ ম্যানর ব্যবস্থা গড়ে উঠতো একটি বা একাধিক গ্রাম নিয়ে এবং সেই গ্রামগুলিতে বিপুল পরিমাণ কৃষিজমি,পশুচারণ জমি,পতিত জমি জঙ্গল,জলাভূমি কৃষকদের বাসগৃহ, শ্রমিক ও কারিগরদের বাসগৃহ, গির্জা ইত্যাদি থাকতো। সামন্ত প্রভুরা সেই সমস্ত জমিকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতো। সেই সব জমিতে যেসব ফসল উৎপাদিত হতো, সেখান থেকে সামন্ত প্রভুরা কর বা খাজনা হিসেবে ভোগ করতো। যার ফলে সামন্তপ্রভুরা বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পত্তির মালিক হতো।।
চাষবাসঃ ম্যানর ব্যবস্থা ছিল সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অর্থনৈতিক দিক। সামন্তপ্রভুরা নিজের অধীনে যেসব কৃষকদের রাখতো, সেই সমস্ত কৃষকরা ম্যানর ব্যবস্থায় যে সমস্ত জমি ছিল, সেখানে তাদের খাটিয়ে বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করতো। এবং কৃষকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সামন্ততন্ত্রের অর্থনীতিকে সচল রাখতো।। প্রথমদিকে মূলত ম্যানরগুলির চাহিদা অনুযায়ী ই উৎপাদন কার্য করা হতো। কিন্তু পরবর্তীকালে ম্যানর ব্যবস্থার উৎপাদন বাড়ানো হয়।।
স্বয়ংসম্পূর্ণতাঃ প্রতিটি ম্যানর ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতিটি ম্যানরে বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করতো। যার ফলে বিভিন্ন পেশায় কাজকর্ম করার জন্য ম্যানরের যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হয়ে যেত। তাছাড়াও প্রত্যেকের প্রয়োজনীয় সামগ্রীও ম্যানরেই উৎপাদিত বা তৈরি করা হতো।। বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতো বলে তাদের কোনো কিছুর অভাব হতো না। যার ফলে প্রতিটি ম্যানর ই ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সাজানো গোছানো।
প্রতিটি ম্যানরেই, সামন্তপ্রভুরা ম্যানরের উন্নতির জন্য রাস্তাঘাট,বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা,খামারবাড়ি, চার্চ, যাজকদের ঘর,কবরখানা ইত্যাদি তৈরি করে থাকতো। যার ফলে ম্যানরের বসবাসকারী কারোরই কোনো অভাব হতো না।।
Tags :