জ্ঞানের উৎস সম্পর্কিত চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে কী বোঝো? চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণির দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ থেকে তোমাদের বড় প্রশ্ন রয়েছে। wb class xi philosophy 2nd অধ্যায়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে কী বোঝো? চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো। " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ, জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক স্পিনোজার মতবাদ এবং জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক দার্শনিকদের লাইবনিজের মতবাদ ও বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
Table Of Contents :
• চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে বোঝায়?
• নরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে বোঝায়?
• জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ
• জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক স্পিনোজার মতবাদ
• জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক দার্শনিকদের লাইবনিজের মতবাদ
• নরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে বোঝায়?
• জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত দার্শনিক দেকার্তের মতবাদ
• জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক স্পিনোজার মতবাদ
• জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক দার্শনিকদের লাইবনিজের মতবাদ
জ্ঞানের উৎস সম্পর্কিত চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে কী বোঝো? চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণির দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
উওর : জ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ক অথবা জ্ঞানের উৎস বিষয়ক বুদ্ধিবাদবাদীদের মধ্যে দুটি ভাগ রয়েছে। এমটি হলো চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ এবং অপরটি হলো নরম পন্থী বুদ্ধিবাদ।
◆ চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে কী বোঝোয়? : সাধারণত নরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে তাদের বোঝায়,যেই মতবাদ অনুসারে জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়- আমাদের প্রকৃত ও যথার্থ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বুদ্ধি এবং অভিজ্ঞতার দুইয়ের ই প্রয়োজন রয়েছে। এবং অপরদিকে চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে বোঝায়, যেই বুদ্ধিবাদ মতে প্রকৃত জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োয়োজন নেই। যথার্থ জ্ঞান লাভের একমাত্র উৎস হলো বুদ্ধি।
◆ সার্বিক বা আবশ্যিক জ্ঞান : চরমপন্থী বুদ্ধিবাদীদের মতে, বুদ্ধির সাহায্য যে জ্ঞান লাভ হয়, তা হলো সার্বিক বা আবশ্যিক এবং সেই প্রকার জ্ঞানকে যদি অস্বীকার করা হয়, তাহলে তার স্ববিরোধ হয়।
যেমন- যদি বলা হয়, " মানুষ বোধহীন প্রাণী "- তাহলে এই জ্ঞানের স্ববিরোধ ঘটে। কারণ মানুষ বোধ যুক্ত প্রাণী। এই জ্ঞান হলো সার্বিক বা আবশ্যিক জ্ঞান। এবং এই জ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না।।
◆ অধিবিদ্যার গুরুত্ব : চরমপন্থী বুদ্ধিবাদীদের মধ্যে কয়েকজন,যেমন - দার্শনিক সক্রেটিস, প্লেটো প্রমুখ দর্শনের অধিবিদ্যার শাখাকে পরমবিদ্যা বলে অভিহিত করেছেন। গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর মতে দর্শন হলো এমন এক শাস্ত্র, যেখানে বস্তুর জ্ঞান নয় বস্তুর পরমসত্তার বা স্বরূপের জ্ঞান জানার চেষ্টা করা হয়। আর দর্শনের প্রধান কয়েকটি শাখার মধ্যে অধিবিদ্যার শাখায় পরমসত্ত্বা বা অতীন্দ্রীয় বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এবং একমাত্র বুদ্ধির সাহায্যে দর্শনের অধিবিদ্যা সম্পর্কে আলোচনা সম্ভব, অভিজ্ঞতার সাহায্য নয়।
◆ চরমপন্থীরা দার্শনিক দেকার্তের মতামত : আধুনিক চরমপন্থী দার্শনিকদের মধ্যে রেনে দেকার্ত হলেন একজন। দার্শনিক দেকার্তের মতে গণিতের জ্ঞানই হলো আদর্শ জ্ঞান এবং গাণিতিক পদ্ধতি হল আদর্শ অবরোহ পদ্ধতি।। এই পদ্ধতির সাহায্যে যে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় তার সম্পূর্ণ নিশ্চিত
সন্দেহমুক্ত। গাণিতিক যথার্থ জ্ঞানকে আদর্শরূপে গ্রহণ করে নিজের অস্তিত্ব বিষয়ক জ্ঞানে উপনিত হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি যদিও সব কিছুর বিষয়ে সন্দেহ করতে পারেন কিন্তু তিনি নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে কখনোই সন্দেহ করতে পারেন না। এ জন্য তিনি বলেছিলেন - " আমি চিন্তা করি অতএব আমি আছি " - নিজের অস্তিত্বের এই জ্ঞান কেবল বুদ্ধির দ্বারাই লাভ করা যায়, ইন্দ্রিয়র দ্বারা নয়। সুতরাং তার মনে, বিশুদ্ধ বুদ্ধি এই জ্ঞানের একমাত্র উৎস।
◆ চরমপন্থী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক স্পিনোজার মত : দার্শনিক ডেকার্তের মতো স্পিনোজাও বলেছিলেন, আমাদের কিছু কিছু ধারনা সহজাত। দেকার্তের মতে দার্শনিক স্পিনোজাও বলেন,মানুষের সমস্ত জ্ঞানের একমাত্র উৎস হল বিশুদ্ধ বুদ্ধি। দার্শনিক স্পিনোজা দ্রব্য বা ঈশ্বর ন গুণ ও রুপান্তর এই তিন প্রকার সহজাত ধারণা থেকে বুদ্ধির পথ অবলম্বন করে জ্যামিতিক অবরোহ পদ্ধতির সাহায্যে জীবজগতের অস্তিত্ব প্রমাণের চেষ্টা করেছিলেন।
◆ লাইবনিজের মতামত : চরমপন্থী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক লাইবনিজ বলেছিলেন, আমাদের যথার্থ জ্ঞান লাভের একমাত্র উৎস হল বিশুদ্ধ বুদ্ধি। দেকার্ত ও স্পিনোজা বলেছিলেন, আমাদের কিছু কিছু ধারনা সহজাত কিন্তু লাইবনিজ বলেছিলেন আমাদের সব ধরনাই সহজাত। আমরা কেবল বুদ্ধির দ্বারা এই সকল প্রকার ধারণা পাই। লাইবনিজের মতে বুদ্ধির দ্বারাই আমরা সকল প্রকারের ধারণা পাই।। একটি পাথরের মধ্যে মূর্তি যেমন সুপ্ত অবস্থায় থাকে, তেমনি আমাদের মনের ধারণা সুপ্ত অবস্থায় বর্তমান থাকে। খোকা পরে যখন ইন্দ্রিয়ের সাথে বস্তুর সংযোগ ঘটে, তখন আমাদের মনে সুপ্ত অবস্থায় থাকা জ্ঞানের প্রকাশ ঘটে। এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ প্রকৃত জ্ঞান না দিতে পারলেও, আমাদের মনে সুপ্ত অবস্থায় থাকা জ্ঞানকে জাগ্রত করে। সুতরাং এক্ষেত্রে বলা যায়, আমাদের প্রকৃত এবং যথার্থ জ্ঞান লাভের একমাত্র উৎস হলো আমাদের বিশুদ্ধ বুদ্ধি।।
আশাকরি আজকের এই ব্লগ পোষ্ট থেকে তোমরা " একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের " চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ এবং বিভিন্ন চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ দার্শনিকের বিভিন্ন মতবাদ " সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছো। যদি আজকের এই " চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে কী বোঝো? চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ সম্পর্কে "আলোচনাটি ভালো লেগে থাকে,তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে করা একাদশ শ্রেণীর দর্শনের বিভিন্ন অধ্যায়ে অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ে দেখতে পারো।
Tags :