সপ্তাঙ্গ বলতে কি বোঝো? কৌটিল্য ভূমির ব্যবহার ও কৃষি এবং আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি সম্পর্কে কী বলেছেন তা আলোচনা করো
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় " রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও তার শাসনযন্ত্র " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় " সপ্তাঙ্গ তত্ত্ব বলতে কি বোঝা বা বোঝ? ভূমির ব্যবহার ও কৃষি এবং অর্থনীতির আত্মনির্ভরশীলতা সম্পর্কে কৌটিল্য কি বলেছেন " অথবা, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে বর্ণিত রাষ্ট্রনীতি " সম্পর্কের কিছু অংশ " বিস্তারে আলোচনা করবো। এবং এই বিষয়ে একটি সুন্দর নোট তোমাদের কাছে তুলে চেষ্টা করবো।
সপ্তাঙ্গ বলতে কি বোঝো? কৌটিল্য ভূমির ব্যবহার ও কৃষি এবং আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি সম্পর্কে কী বলেছেন তা আলোচনা করো।
ভূমিকাঃ প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত কূটনীতিবিদ কৌটিল্য তার রচিত অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে' একটি রাষ্ট্রকে জীবদেহের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জীবদেহে যেমন বিভিন্ন অঙ্গ রয়েছে, ঠিক তেমনই কৌটিল্যের মতে একটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সাতটি অঙ্গ থাকা দরকার। এই সাতটি হল - স্বামী ( রাজা ), অমাত্য ( আমলাগোষ্ঠী ) পুর ( দুর্গ - শহর ), জনপদ ( রাষ্ট্র ), কোষ ( অর্থভাণ্ডার ), দন্ড ( শাস্তি বিধান ) এবং মিত্র অর্থাৎ বন্ধু রাজা।। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ সম্পর্কিত এই মতবাদ সপ্তাঙ্গ নামে পরিচিত। অর্থ শাস্ত্রের মতে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের এই সাতটি অঙ্গের পৃথক পৃথক কাজ রয়েছে। তাই একটু রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই সাতটি অঙ্গ থাকা একান্ত প্রয়োজন।।
◆ ভূমির ব্যবহার ও কৃষি কৃষি :
প্রথমতঃ রাষ্ট্রীয় সম্পদের পর্যাপ্ত বিকাশের প্রয়োজনে কৌটিল্য রাষ্ট্রীয় ভূমি সঠিক ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ভূমির উপর সর্বদা রাষ্ট্রীয় তদারকি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
দ্বিতীয়তঃ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র মতে কৃষি কাজের প্রতি রাষ্ট্রের সর্বদা সতর্ক থাকা উচিত। জমিতে বীজ বোনা থেকে শুরু করে ফসল কাটা পর্যন্ত সময় চাষিকে সমগ্র প্রক্রিয়ায় সহায়তা করার জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের সাহায্যে করা উচিত।।
◆ আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি : কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতির দুটি দিক রয়েছে। একটি হলো বাণিজ্যের দিক এবং অপরটি হল বাণিজ্য কর বা শুল্কের দিক।
প্রথমতঃ কৌট্যল্য বলেছেন রাষ্ট্রের অর্থনীতি কখনোই বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল হবে না। রাষ্ট্রের অর্থনীতি হবে সম্পূর্ণভাবে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল।। তাই কৌট্যল্য তাঁর এই মতবাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
দ্বিতীয়তঃ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পণ্যসামগ্রীর প্রতিটি প্রবেশদ্বারে বন্দরে শুল্ক আদায় করতে হবে। তবে বাণিজ্যের সুবিধার এবং শুল্ক ফাঁকি রোধ করার জন্য শুল্কের পরিমান কম রাখতে হবে।
উপসংহার : সবশেষে বলা যায়, কৌট্যল্য প্রাচীন ভারতের একজন রাষ্ট্রনীতিবিদ হওয়া সত্ত্বেও,তিনি তার অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে' রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে যে উৎকর্ষের পরিচয় দিয়েছেন তা,সত্যিই বিস্ময়কর। এজন্য প্রশংসা করেন অধ্যাপক আলতেকার বলেছেন যে, - কৌটিল্য শুধু একজন বিখ্যাত রাষ্ট্রনীতিবিদ ছিলেন না,তিনি রাষ্ট্রনীতিবিদ একটি ধারাও প্রবর্তন করেছিলেন।
Tags :