ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে উল্লেখিত জিয়াউদ্দিন বরনির রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উওর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় " রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও তার শাসনযন্ত্র " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় " ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে উল্লেখিত জিয়াউদ্দিন বরনির রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আলোচনা " বা 'সুলতানি রাষ্ট্রনীতি কেমন হওয়া উচিত' সেই সম্পর্কে জিয়াউদ্দিন বরনির রাষ্ট্রনীতি আলোচনার " বিষয়টি বিস্তারে আলোচনা করবো।
ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে উল্লেখিত জিয়াউদ্দিন বরনির রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
ভুমিকা : দিল্লির সুলতান মুহাম্মদ বিন তুঘলকের সভাসদ ছিলেন জিয়াউদ্দিন বরনী। জিয়াউদ্দিন বরনি রচিত ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে তিনি রাষ্ট্র এবং ও রাজতন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। জিয়াউদ্দিন বরনী রচিত ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থ উল্লেখিত রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। -
ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে উল্লেখিত জিয়াউদ্দিন বরনির রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আলোচনা
◆ রাজা বা সুলতান ই হলেন সর্বোচ্চ শাসক : জিয়াউদ্দিন বরনী তার ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, সাম্রাজ্যে সুলতান ই হবেন সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনি হবেন সব প্রকার বাঁধন থেকে মুক্ত। সুলতানের ক্ষমতা হবে বংশানুক্রমিক অর্থাৎ সুলতানের পর তার জ্যেষ্ঠপুত্রই পরবর্তী শাসক। বরনি দিল্লির সুলতানি সাম্রাজ্যেকে পারস্যের সাসানীয়া সাম্রাজ্যের অনুকরণে গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন।।
◆ সদস্যমন্ডলী : বরনি ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে একপ্রকার বিশেষ সদস্য মন্ডলীএ কথা উল্লেখ করেছেন,,যারা সুলতানকে তার রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া অথবা প্রশাসনিক কার্যে সুলতানকে সাহায্য করতে পারবে।। সুলতানের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সুলতান তার বিশিষ্ট মন্ত্রী মণ্ডলের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করবেন। এবং সেখানে বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নিজস্ব মতামত প্রকাশ করবেন। এবং সুলতান তাদের মতামত বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে তিনি স্বাধীনভাবে সেই বিষয়ে তার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
◆ আইনকানুন : বরনি তার ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে যে সমস্ত আইন কানুনের কথা বলেছেন, তা মূলত ইসলামের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরানের বিভিন্ন আদেশ-উপদেশ। জিয়াউদ্দিন বরনী ইসলামের বিভিন্ন নির্দেশকে মেনেই সুলতানের শাষন পরিচালনার কথা বলেছেন।
◆ ইসলামের প্রচার ও প্রসার : বরনি তার ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে সুলতানকে বা রাজাকে ইসলাম ধর্মের সংরক্ষণ,তার প্রচার এবং প্রসারের নির্দেশ দিয়েছেন। জিয়াউদ্দিন বরনী মতে একজন মুসলিম শাসক হিসেবে সুলতানেএ কর্তব্য হলো ইসলামের সমস্ত আদেশ মেনে চলা। এবং ধর্মের সংরক্ষণ, প্রসার ঘটানোর ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
◆ ন্যায়বিচার : ফতোয়া-ই-জাহান্দারি গ্রন্থে সুলতানকে বা রাজাকে তার শাসনে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাতা করার কথা বলা হয়েছে। ন্যায়বিচার বলতে এখানে সত্য, ন্যায় ও ধর্মের প্রতিষ্ঠাতাকে বোঝানো হয়েছে। বরনির মতে ঈশ্বরের রাজ্যে সকলেই সমান অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।।তাই রাষ্ট্রে কেউই কোনো অধিকার থেকে বঞ্চিত হব ন। এবং সেই সম্পর্কে রাজা বা সুলতানকে বিশেষ নজর দিতে হবে। রাজা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করবেন এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথে যাবতীয় বাধাকে প্রতিহত করবেন।। প্রয়োজনে এ বিষয়ে রাজাকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হলে তাকে তাই করতে হবে বল তিনি মনে করতেন।
Tags :