একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও তার শাসনতন্ত্র বড় প্রশ্ন উত্তর | WB Class XI History Question Answer & Notes

0

সিসেরোর রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করো || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর


আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর চতুর্থ অধ্যায় ( Class 11 history chapter 2 questions and answers in bengali ) " রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও তার শাসনতন্ত্র " থেকে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ( Class 11 history chapter 2 questions and answers ) " সিসেরোর রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করো " প্রশ্নটির উওর একাদশ শ্রেণির ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।

সিসেরোর রাষ্ট্রদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করো || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ  অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর

ভূমিকা : মার্ক তুল্লি সিসেরো ছিলেন প্রাচীন রোমের একজন বিখ্যাত রাষ্ট্রনীতিবিদ ও আইনজ্ঞ। সিসেরো তার বিভিন্ন গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে তিনি তার রাষ্ট্র দর্শন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। " De Republica  "  এবং " De Offices " নামক গ্রন্থে তিনি তার রাষ্ট্র দর্শন সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। যেমন - 

আইনবিধিঃ সিসেরোর রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল বিষয় ছিল আইন-বিধি। সিসেরো মূলত দুই ধরনের আইনের কথা বলেছেন। প্রথমত - প্রাকৃতিক আইন এবং দ্বিতীয়- রাষ্ট্রীয় আইন।

• প্রাকৃতিক আইন বলতে সিসোরো বুঝিয়েছেন - যে আইনের মাধ্যমে ঈশ্বর এই জগত পরিচালনা করেছেন, তাই হলো প্রাকৃতিক আইন।

 সিসেরোর মতো যেসব যুক্তি প্রকৃতির আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ তাই হলো প্রাকৃতিক আইন। প্রাকৃতিক আইন  সর্বজনীন, অপরিবর্তনীয় এবং চিরন্তন। তাই প্রাকৃতিক আইনের প্রতি ব্যক্তির চূড়ান্ত আনুগত্য থাকা উচিত।।


• অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় আইন হলো মানুষের সৃষ্টি করা আইন যা মানুষের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়। তাই প্রতি ব্যক্তি উচিত রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা।  রাষ্ট্রীয় আইন যদি  প্রাকৃতিক আইনের চরিত্র উপলব্ধি করে রচনা করা হয়, তাহলে রাষ্ট্রে কখনোই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।

ন্যায়ের প্রতিষ্ঠাঃ সিসেরো মূলত দার্শনিক প্লেটোর রিপাবলিকা গ্রন্থের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বা প্রভাবিত হয়েই তারা De Republica গ্রন্থের অনেকটা জুড়ে ন্যায় ও ন্যায়বিচার সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। সিসেরো কখনোই রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অন্যায়-অবিচারকে সমর্থন করেনি। সমাজে ন্যায় নীতির অভাবেই সমাজে নানা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সুতরাং সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

আদর্শ রাষ্ট্রঃ সিসেরোর De Republica গ্রন্থের আদর্শ রাষ্ট্রের একটি ভিন্ন ধারণা দিয়েছেন। সিসেরোর মতে রাষ্ট্র তৈরি হয় জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্যে সু। তরাং সকলের উদ্দেশ্যে গঠিত রাষ্ট্রে সকলের অংশগ্রহণ তিনি সমর্থন করেছেন। এবং তিনি রাষ্ট্রকে একটি জনগণের সম্পত্তি বলে উল্লেখ করেছেন।

সাম্যনীতিঃ সিসেরোর রাষ্ট্র দর্শনে সাম্যনীতির কথা লক্ষ্য করা যায়। সিসেরোর মতে প্রাকৃতিক আইনের ক্ষেত্রে যেমন সামনীতি রয়েছে, ঠিক তেমনই রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অথবা রাষ্ট্রীয় আইনের ক্ষেত্রেও সামনীতি থাকা প্রয়োজন।। সিসোরের এর মতে শিক্ষা, সংস্কৃতি, আর্থিক শক্তি, শারীরিক গঠন প্রভৃতি বিষয়এ মানুষের মানুষের পার্থক্য থাকলেও তারা প্রকৃতিগতভাবে সবাই সমান। কিন্তু রাষ্ট্রে অনেক সময়ই কিছু মানুষ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে প্রভুত্বের এবং কিছু মানুষ ক্ষমতা না থাকায় ক্রীতদাসের জীবন যাপন করে।  কিন্তু সিসেরো কখনোই যেই জিনিসটাকে সমর্থন করেননি।।


মিশ্র সরকারঃ চিন্তাবিদ পলিবিয়াসের অনুকরণে সিসেরো তিন প্রকার সরকারের কথা উল্লেখ করেছেন। 

যথা - রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র এবং গণতন্ত্র। অ্যারিস্টোটলের মত অনুসরণ করে সিসেরো বলেছিলেন যে - একজনের শাষন হল রাজতন্ত্র, কয়েকজনের শাষন হল অভিজাততন্ত্র এবং বহু জনের বা রাষ্ট্রের সকলের শাষন হলো গণতন্ত্র। সিসেরোর মতে উক্ত তিন প্রকারের সরকার যখন তখন দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়তে পারে। এজন্য তিনি উক্ত তিন প্রকার সরকারের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা এক প্রকার মিশ্র সরকারের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে যেই মিশ্র সরকার হবে জনকল্যাণ কামী।।

বিশ্বনাগরিকতত্বঃ সিসেরো বিশ্বজনীন আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমগ্র বিশ্বকে একটিমাত্র রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সিসেরো সমগ্র বিশ্বকে নিয়ে একটি মাত্র রাষ্ট্র সমবায় বা কমনওয়েলথ গড়ে তোলার আদর্শ প্রচার করেন। তার মতে সমগ্র বিশ্বজুড়ে একটিমাত্র রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠিত হলে সকল মানুষ সেই রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ভোগ করবে এবং সেই রাষ্ট্রের ধনী-দরিদ্র সকলেই রাষ্ট্রের কাছ থেকে সমান অধিকার লাভ করবে।।

জনকল্যাণঃ সিসেরো এমন একটি রাষ্ট্র গঠনের কথা বলেছেন যা হবে সমাজ কল্যাণকামী।  একটি রাষ্ট্রের ন্যায় পরায়ণতা,সাম্য,,প্রাকৃতিক আইন প্রভৃতির প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরী। মানুষের নিজের প্রয়োজনেই বিবর্তনের পথ ধরে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সুতরাং মানবকল্যাণ ই হল রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য।।


Tags : একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর | আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহ বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 11 history question answer | class 11 history suggestion 2022 | Class 11 history chapter 2 questions answers in bengali | WB Class 11 history notes 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top