একাদশ শ্রেণির ইতিহাস নোট : মৌর্য ও ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য ও তুলনামূলক আলোচনা

0

 মৌর্য ও ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লেখ | মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের তুলনামূলক আলোচনা

মৌর্য ও ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লেখ | মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের তুলনামূলক আলোচনা


আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর তৃতীয় অধ্যায়ের রাজনৈতিক বিবর্তন শাসনকার্য ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণার একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " মৌর্য ও ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লেখ, বা মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের তুলনামূলক আলোচনা,অথবা - মৌর্য সাম্রাজ্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের মধ্যে পার্থক্য বা বৈসাদৃশ্য "  এই প্রশ্নের উওর একাদশ শ্রেণির ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।

মৌর্য ও ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লেখ | মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের তুলনামূলক আলোচনা

 ◆ মৌর্য সাম্রাজ্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য :

সুবিশাল সাম্রাজ্য : 

• মৌর্য সাম্রাজ্যের ক্ষেত্রে আমরা তার সুবিশাল আয়তনের বিষয়টি দেখতে পারি। মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এবং তার পরবর্তী বংশধররা তাঁদের সাম্রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যদিও ওখানে উল্লেখ করা দরকার যে,সম্রাট অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের পর তার সম্রাজ্যবাদনীতি ত্যাগ করেছিলেন। 

• অন্যদিকে ম্যাসিডনীয়া সম্রাটরাও সাম্রাজ্যবাদনীতি গ্রহন করার মাধ্যমে তাদের প্রতিবেশী ক্ষুদ্র গ্রিক পলিস গুলি এবং অন্যান্য অঞ্চলগুলি একে একে দখল করে তাদের ম্যাসিডনীয় সাম্রাজ্যের আয়তন সুবিশাল করে তুলেছিলেন। 

বংশানুক্রমিক শাসন ব্যবস্থা : 

• মৌর্য সাম্রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা ছিল বংশানুক্রমিক। এই বংশানুক্রমিক শাসনব্যবস্থা অনুসারেই চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পর তার পুত্র বিন্দুসার মৌর্য বংশের সিংহাসনে বসে ছিলেন। 

• অন্যদিকে একই প্রথা অনুযায়ী ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের শাসন ক্ষমতাও বংশানুক্রমিকভাবে হতো। বংশানুক্রমিক ভাবেই ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের শাসন ক্ষমতা দ্বিতীয় ফিলিপ,তৃতীয় আলেকজান্ডারের মতো সকল ম্যাসিডোনিয়া সম্রাটের হাতে গিয়েছিল। 

শাসন কাঠামো : 

• মৌর্য সাম্রাজ্যের মত এতো সুবিশাল একটি সাম্রাজ্য পরিচালনা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের একাএ পক্ষে কখনোই সম্ভব ছিল না। এজন্য তিনি তার সম্রাজ্য বিকেন্দ্রীভূর শাষনব্যবস্থা গড়ে তোলেন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রীমন্ডলী, অধ্যক্ষ,বলাধ্যক্ষ অন্যান্য কর্মচারীদের নিয়োগ করে তিনি তার রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। 

• অন্যদিকে ম্যাসিডোনিয়া সম্রাটরাও ঠিক একই পদ্ধতি অনুসারে তাদের সাম্রাজ্যর পরিচালনা করতেন।। ম্যাসিডনের সম্রাটরা বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে তাদের সাম্রাজ্যর পরিচালনা করতেন। 

স্থাপত্য ও শিল্পকলা

• মৌর্য সম্রাটদের আমলে বিভিন্ন নির্মাণকাজে উৎকর্ষ লক্ষ্য করা যায়। মৌর্য রাজাদের শাসনকালে বিভিন্ন প্রাসাদ-দুর্গ,স্তম্ভ ইত্যাদি নির্মিত হয়েছিল। অর্থাৎ মৌর্য সাম্রাজ্যে স্থাপত্য ও শিল্পকলার বিকাশ হয়েছিল। 

• অন্যদিকে ম্যাসিডনীয়া সম্রাটারাও সাম্রাজ্য বিস্তারের পাশাপাশি কিছু নির্মাণকার্য করেছিলেন। আলেকজান্ডার 70 টি নতুন শহর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। এছাড়াও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থাপত্য ও শিল্পকলার বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যায়। 

মৌর্য সাম্রাজ্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের মধ্যে পার্থক্য বা বৈসাদৃশ্য | মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্য তুলনামূলক আলোচনা


ভূমিকাভারতের প্রাচীন সাম্রাজ্য গুলির মধ্যে মৌর্য সাম্রাজ্য এবং প্রাচীন গ্রিসের সাম্রাজ্য গুলির মধ্যে ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যে ছিল উল্লেখযোগ্য। 

মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্য তুলনামূলক আলোচনা - 

অবস্থানগত পার্থক্য - 

• মৌর্য সাম্রাজ্য ছিল প্রাচীন ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য সাম্রাজ্য।

• ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য ছিল প্রাচীন গ্রিসের একটি উল্লেখযোগ্য সাম্রাজ্য।।

প্রতিষ্ঠাতা : -

• মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য 324 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নন্দ বংশের শেষ শাসক ধননন্দ কে পরাজিত ও হত্যা করে তিনি মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 

• প্রাচীন গ্রিসের ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ক্যারানাস। তৃতীয় অ্যামিন্টাস  সর্বপ্রথম একটি ঐক্যবদ্ধ ও দারুন শক্তিশালী ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সঠিক শাসন পরিকাঠামো :

• চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তার বিশাল আয়তন মৌর্য সাম্রাজ্যে একটি সুদক্ষ শাসন পরিকাঠামোর তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

• কিন্তু,অন্যদিকে ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের সম্রাটরা তাদের বিশাল আয়তন ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের সেরকমভাবেও একটি সঠিক শাসনব্যবস্থা বা প্রশাসনিক পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেননি।

স্থায়িত্বগত পার্থক্য : 

• ভারতের মৌর্য সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল প্রায় এক শতাব্দী পর্যন্ত। 324 খ্রিস্টপূর্বাব্দ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য এই সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। এবং 232 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে বৃহদ্রথের মৃত্যুর পরেই সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। 

• অন্যদিকে ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব মৌর্য সাম্রাজ্যের তুলনায় অনেক কম। ম্যাসিডনীয়া সম্রাট দ্বিতীয় ফিলিপের সিংহাসনারোহণের সময় থেকে শুরু করে তৃতীয় আলেকজান্ডারের মৃত্যু পর্যন্ত এই সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল প্রায় 36 বছর। 

ধর্মের প্রসার :

• মৌর্য সাম্রাজ্যের একজন শ্রেষ্ঠ শাসক সম্রাট " অশোক " এর আমলে সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটাতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। ছিলেন অর্থাৎ মৌর্য সাম্রাজ্যের ধর্মের প্রসার দেখা দিয়েছিল। 

• ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্যের ক্ষেত্রে কোনো ম্যাসিডনীয় সম্রাট ই ধর্মের প্রসারে অথবা ধর্ম নিয়ে তাদের কোনো কার্যকলাপ দেখা যায়নি। 

সভ্যতা ও সংস্কৃতি : 

• মৌর্য শিল্পকলায় বিদেশি শিল্পকলার প্রভাব থাকলেও,মৌর্য সাম্রাজ্যের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তা ছিল সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থাৎ বিদেশি প্রভাবমুক্ত। 

• অন্যদিকে ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের সভ্যতা ও সংস্কৃতির ছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সমন্বয়।

 Tags :

মৌর্য ও ম্যাসিডোনিয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য লেখ | মৌর্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের তুলনামূলক আলোচনা | মৌর্য সাম্রাজ্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্যের মধ্যে পার্থক্য বা বৈসাদৃশ্য | মৌর্য সাম্রাজ্য ও ম্যাসিডনীয়া সাম্রাজ্য সাদৃশ্য | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 | একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের নোট 2024 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top