ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের অবদান কি ছিল | এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা
আজকে আমরা দশম শ্রেণীর ইতিহাস ( wb class 10 history ) দ্বিতীয় অধ্যায় " সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের অবদান কি ছিল? " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের অবদান কি ছিল? এই প্রশ্নটি তোমাদের মাধ্যমিক পরিক্ষায় 4 নম্বরের ( class 10 history question answer ) জন্য এসে থাকে। আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে তোমরা এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা কি ছিল? তার একটি খুব সুন্দর ইতিহাস নোট ( wb class 10 history notes in Bengali ) এখান থেকে পেয়ে যাবে।
ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের অবদান কি ছিল | এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা
উওর :
◆ ভূমিকা : ভারতের সরকারি উদ্যোগে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের,আগে মূলত বেসরকারী উদ্যোগেই পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের উদ্যোদটা অনেক বেশি নেওয়া হয়েছিল। সেসময়কার কিছু কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি নিজের উদ্যোগেই পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ভূমিকা নিয়েছিল। তাদের মতো সেসময়ে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীরাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। এবং সেগুলো তারা সঠিকভাবে পালনও করেছিল।
◆ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের উদ্যোগ : ভারতের মূলত খ্রিস্টান মিশনারী এসেছিলেন তাদের খ্রিস্টধর্ম প্রচার করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু খ্রিস্টান মিশনারীরা দেখেছিলেন বা বুঝতে পেরেছিলেন যে, এদেশের বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ ই ইংরেজিতে লেখা বাইবেল পাঠ করতে পারে না। যার ফলে তারা বাইবেলের মাহাত্ম্য বা বাইবেলের বিষয়বস্তু কখনোই বুঝতে পারতো না। খ্রিস্টান মিশনারীরা এই কথাটা বুঝতে পেরেই তারা এদেশে ইংরেজি স্কুল অথবা পাশ্চাত্য ধাচের বিদ্যালয় স্থাপনের নীতি গ্রহণ করেছিল। যাতে এদেশের লোকেরা ইংরেজি শিখে তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেল পাঠ করতে পারে। এবং খ্রিস্টান ধর্মের পবিত্রতা বা ভালো দিক গুলি দেখে তারা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করতে পারে।
পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিস্থান স্থাপন -
◆ শ্রীরামপুর মিশনের উদ্যোগ : এদেশের পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের জন্য সেই সময়কার বিখ্যাত তিনজন খ্রিস্টান মিশনারী, উইলিয়াম ওয়ার্ড,উইলিয়াম কেরি এবং জোশুয়া মার্শম্যান - যারা শ্রীরামপুর ত্রয়ী নামে পরিচিত,তারা তিনজন মিলে 1800 খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও তারা তিনজন মিলে পরবর্তীকালে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রায় 126 টি বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। এবং এই উদ্যোগটি ছিল সম্পূর্ণ ভাবে তাদের নিজস্ব। এক্ষেত্রে তারা হয়তো কোনো রকম সরকারি সহযোগিতা পাননি বা পেলেও তা খুবই কম। তাদের প্রতিষ্ঠিত এই সমস্ত বিদ্যালয়ে প্রায় 10,000 ছাত্ররা পাশ্চাত্য শিক্ষার সুযোগ পেয়েছিল।
◆ লন্ডন মিশনারীদের উদ্যোগ : লন্ডন মিশনারি সোসাইটির সদস্য রবার্ট মে তিনি ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি প্রথমে 1795 খ্রিস্টাব্দে চুচুড়ায় একটি ইংরেজী বিদ্যালয় এবং তার পরবর্তী কালে ভারতের অন্যান্য স্থানে 36 টি ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।
◆ মিশনারি ও উচ্চ শিক্ষা : ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীরা অনেক ইংরেজি স্কুল স্থাপন করেছিল। কিন্তু তারা শুধুমাত্র প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা বিস্তারেই উদ্যোগ নেননি। বরং তারা ভারতে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারেও ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। যেমন -
• 1818 খ্রিস্টাব্দে ব্যাপ্টিস্ট মিশনের উদ্যোগে শ্রীরামপুর কলেজ তৈরি করা হয়।
• এরপর 1836 খ্রিস্টাব্দে স্কটিশ মিশনের উদ্যোগে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউট যা পরবর্তীকালে স্কটিশ চার্চ কলেজ নামে পরিচিত হয়,সেটি তাদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
• বেলজিয়ামের মিশনারিদের উদ্যোগে 18345 খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও লরেটো হাইস স্থাপিত হয়।
◆ উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রথমস খ্রিস্টান মিশনারীরা ভারতে তাদের পবিত্র খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এবং তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল পাঠের জন্য,এ দেশের জনসাধারণের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের উদ্যোগ নিলেও,পরবর্তীকালে তাদের ধর্মীয় উদ্দেশ্যে অন্য রূপ ধারণ করে। এবং তাদের গ্রহণ করা নানা উদ্যোগের মাধ্যমে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা লাভের নানা দিক উন্মোচিত হয়।।
Tags :