প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? | এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ?

0

 প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? | এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ?

প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? | এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ?


আজকে আমরা দশম শ্রেণীর ইতিহাস ( wb class 10 history ) দ্বিতীয় অধ্যায় " সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা " এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? অথবা এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ? " এর উওর  তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? বা শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ?এই প্রশ্নটি তোমাদের মাধ্যমিক পরিক্ষায় 4 নম্বরের ( class 10 history question answer ) জন্য এসে থাকে। আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে তোমরা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? তার একটি খুব সুন্দর ইতিহাস নোট ( wb class 10 history notes in Bengali ) এখান থেকে পেয়ে যাবে।

প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? |এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ?

ভূমিকা : 1813 খ্রিস্টাব্দের আগে ব্রিটিশ সরকার এদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে অর্থাৎ ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের কোনো রকম অর্থ ব্যয় এর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কিন্তু 1810 খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল মিন্টো ভারতীয়দের শিক্ষার শোচনীয় অবস্থার কথা একটি রিপোর্টে তুলে ধরেন। এই রিপোর্টে তিনি কোম্পানির কাছে ভারতীয় শিক্ষার উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন করেন। গভর্নর-জেনারেল মিন্টোর সাথে সাথে খ্রিস্টান মিশনারীরা ভারত ও ইংল্যান্ডে কোম্পানির শিক্ষানীতির তীব্র সমালোচনা করেছিল, যার ফলে সরকার 1813 খ্রিস্টাব্দে সনদ আইন পাস করে। 1813 খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট এর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয় যে,ব্রিটিশ সরকার এবার থেকে প্রতিবছর এক লক্ষ টাকা ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় করবে।


সরকারের এই ঘোষণা করার পর সেই সময়কার, শিক্ষার সঙ্গে জড়িত কিছু উচ্চবিত্ত ব্যক্তির মধ্যে তর্কের সৃষ্টি হয়,যে সরকার এই এক লক্ষ টাকা প্রতি বছর ভারতের কোন ধরনের শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যয় করবে। অর্থাৎ সেই এক লক্ষ টাকা প্রাচ্য নাকী পাশ্চাত্য শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে,,সেই সম্পর্কেও 1820 এর দশকে যে বিতর্কের সূচনা হয়,তাকেই প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক অথবা প্রাচ্য পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলা হয়

প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্কের সৃষ্টি : 1813 খ্রিস্টাব্দে সনদ আইন পাস হওয়ার পর, 1820 খ্রিস্টাব্দে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্কের সূচনা হয়। এরপর গঠিত হয় 1823 খ্রিস্টাব্দের জনশিক্ষা কমিটি অথবা কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন। এই কমিটির সদস্যদের মূলত এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল যে, কোম্পানির খরচ করা সেই এক লক্ষ টাকা প্রতি বছর ভারতের ক্ষেত্রে কোন ধরনের শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে। তা নিয়ে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদী এই দুই দলের মধ্যে সেই সময়ে যে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল, তাকেই ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিতর্ক অথবা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলে। 


প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদী কাদের বলা হয়?

যারা সেই সময়ে প্রাচ্য ভাষায় অর্থাৎ সংস্কৃত আরবি-ফারসি ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার প্রসারে সেই এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার কথা বলেছিলেন তাদের বলা হতো প্রাচ্যবাদী অথবা ওরিয়েন্টালিস্ট। এদের মধ্যে ছিলেন এইচ.টি. প্রিপেন্স, উইলসন, কোলব্রুক প্রমুখ। এবং অন্যদিকে ছিলেন লর্ড মেকলে,চার্লস গ্রান্ট, আলেকজান্ডার ডাফ,সন্ডার্স কোলভিন প্রমুখ পাশ্চাত্যবাদীরা, যারা এদেশে আধুনিক ইংরেজি শিক্ষার  প্রসারে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তাদের বলা হতো পাশ্চাত্যবাদী অথবা অ্যাংলিসিস্ট। 

প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্কের বা দ্বন্দ্বের অবসান 1820 এর পর আস্তে আস্তে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে এই বিতর্ক আকার বড় আকার ধারণ করতে থাকে।  এই জিনিসগুলো  লর্ড উইলিয়াম বেন্টিং খুব ভাল করেই বুঝতে পেরেছিলেন। এবং তিনি এই জিনিসটির নিষ্পত্তি চাইতেন।  এরপর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিং এর আইন সচিব এবং জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস বেবিংটন মেকলে 2 ফেব্রুয়ারি 1835 সালে একটি প্রতিবেদন পেস করে, যা মেকলে মিনিট নামে পরিচিত। টমাস বেবিংটন মেকলে তার মেকলে প্রতিবেদন এর ইংরেজি শিক্ষার প্রসারমেই সরকারি শিক্ষা নীতি হিসেবে গ্রহণ করার আবেদন জানায়। এই নিয়ে বহু তর্কবিতর্কের পর অবশেষে সরকার মেকলের প্রতিবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারি শিক্ষা নীতি হিসেবে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকেই মেনে নেয়। এবং প্রতি বছর ভারতের শিক্ষার ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকা পাশ্চাত্য ধাচের শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়


উপসংহার

পরিশেষে বলা যায়, 1810 খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল মিন্টোর প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো অর্থ ব্যয় করার একটি ভেবে দেখেন এবং তার হাত ধরেই 1817 খ্রিস্টাব্দে সনদ আইন পাশ হয় এবং সনদ আইন পাস হওয়ার পর 1823 খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে জনশিক্ষা কমিটি অথবা কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন। এবং জনশিক্ষা কমিটির সদস্যদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া এই প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্কের অবসান ঘটে কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন এর সভাপতি টমাস বেবিংটন মেকলের " মেকলে মিনিট অথবা মেকল প্রতিবেদনের মাধ্যমে।


Tags : 

প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিতর্ক বলতে কী বোঝো? | এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্ব বলতে কী বোঝ? | প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদী কাদের বলা হয়? | ক্লাস 10 ইতিহাস প্রশ্ন উওর দ্বিতীয় অধ্যায় | ক্লাস 10 ইতিহাস বড় প্রশ্ন উওর দ্বিতীয় অধ্যায় | দশম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর দ্বিতীয় অধ্যায় | দশম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা বড় প্রশ্ন উত্তর | সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা প্রশ্ন উত্তর | class 10 history 2 nd chapter notes | মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | wb class 10 history question answer | wb class 10 history suggestion | History question answer|  class 10 history 2nd chapter question answer | class 10 history question answer | wb class 10 history notes in Bengali | history notes | class 10 history notes


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top