আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " চারটি নদীকেন্দ্রিক সভ্যতার নাম লেখ এই সভ্যতা গুলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল কেন? " এর উওর শেয়ার করবো।
চারটি নদীকেন্দ্রিক সভ্যতার নাম লেখ| এই সভ্যতা গুলির নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠার কারণ | প্রাচীন সভ্যতা গুলি কেন নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল
উওর :
◆ নদীমাতৃক সভ্যতা কাকে বলে : প্রাচীনকালের আদিম মানুষেরা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে,তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার জন্য যে সমস্ত প্রাচীন সভ্যতা গুলির গড়ে তুলেছিলেন,তাদের নদীমাতৃক সভ্যতা বলে।
চারটি প্রধান নদীমাতৃক সভ্যতা গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
১- হরপ্পা সভ্যতা,
২- মিশরীয় সভ্যতা,
৩- মেসোপটেমীয় সভ্যতা
৪) এবং চৈনিক সভ্যতা।
◆ নদীতীরে সভ্যতা গড়ে ওঠার কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ -
• নদীতীরে সভ্যতা বিস্তারের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধা থাকে। যার কারণে নদীর তীরে বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতা গুলি গড়ে উঠেছিল। নদীতীরে সভ্যতা গুলি গড়ে ওঠার পেছনে কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ হলো -
আরও পড়ে দেখো
ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের 40+ MCQ,SAQ
◆ অনুকূল আবহওয়া : নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আবহাওয়া হতো খুবই মনোরম প্রকৃতির যা মানুষের বসবাসের ক্ষেত্রে খুবই সুবিধাজনক ছিল। আদিম মানুষেরা এই জিনিসটা বুঝতে পেরেই নদী তীরবর্তী অঞ্চলে তাদের বসতি স্থাপন করতে শুরু করে।
◆ জলের যোগান : নদীতীরে বাস করার ফলে আদিম মানুষের জলের অভাব হতো না। যার ফলে তাদের জলের খোঁজ করার জন্য দূরদূরান্ত পর্যন্ত যেতে হতো না এবং তারা খুব সহজেই নদী থেকেই তাদের ব্যবহারের জল সংগ্রহ করতে পারতেন।
◆ উর্বর কৃষিজমি : নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ার কারণে সেই মাটিতে কৃষিকাজ ভালো হয়। এবং এই ব্যাপারটা আদিম মানুষ খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিল। যার ফলে তারা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করে সেখানে কৃষিকাজের শুরু করেছিল।।
◆ কৃষিতে জলসেচের সুবিধা :
নদী তীরবর্তী অঞ্চলের উর্বর জমিতে কৃষি কাজ শুরু করার পর, যখন সেই কৃষিতে জলের যোগান হত,তখন প্রাচীন মানুষের নদী থেকেই বিভিন্ন খাল কেটে, নদীর জল সেই খালের মাধ্যমে নিজেদের জমিতে সেচ করতো।
◆ যাতায়াতের সুবিধা : নদীপথে বা জলপথের মাধ্যমে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে কম সময়ে এবং কম পরিশ্রম লাগতো। তাই আদিম মানুষেরা পণ্য পরিবহন এবং নিজেদের যাতায়াতের সুবিধার ক্ষেত্রে নদীপথকেই বেছে নিয়েছিল। এবং নদীর তীরেই তারা নিজেদের বসতি স্থাপন করেছিল।।
◆ খাদ্যের যোগান : নদীর তীরে বসবাস করার ফলে আদিম মানুষের খাদ্যের খুঁজেও দূর-দূরান্ত পর্যন্ত হেঁটে যেতে হতো না। কারণ তারা নদী থেকেই মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণী খাদ্য হিসেবে সংগ্রহ করতে পারতেন। গুহায় থেকে বন্যপ্রাণী শিকার করার থেকে, নদীর তীরে সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য, তাদের বেশি খাদ্যের সন্ধান করতে হতো না। যার ফলে তারা নদীর তীরেই তাদের বসতি গড়ে তুলেছিলেন।
◆ পানীয় জলের সুবিধা : নদীর তীরে বাস করার ফলে আদিম মানুষের কোনোভাবে পানীয় জলের অভাব হতো না। নদীর জলকেই তারা পানীয় জল হিসেবে সেই সময় ব্যবহার করতে পারতেন।
• এছাড়াও নদীর তীরে প্রাচীন সভ্যতা গড়ে ওঠার পেছনে -
• নিরাপত্তা, পশুপালন এবং অন্যান্য নানা কারণ ছিল।
◆ উপসংহার : উপরিক্ত কারণ ছাড়াও আরও নানা কারণে আদিম মানুষেরা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলকে নিজেদের বসতি স্থাপন করার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিল। এবং এভাবে বসতি স্থাপন করার ফলেই ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রাচীন নদীমাতৃক সভ্যতা গুলি গড়ে উঠেছিল।
Tags :