ভাইকম সত্যাগ্রহ কাকে বলে? |
উওরঃ ভাইকম সত্যাগ্রহ কাকে বলে তা বোঝার আগে আমাদের দলিত শ্রেণী বলতে কি বোঝায় সে জিনিসটা বোঝা উচিত। সাধারণত দলিশ্রি বলতে অনগ্রসর অনুন্নত সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া বা একটি বিশেষ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে জীবন যাপন করা সম্প্রদায়কে দলিল শ্রেণী বা দলিল সম্প্রদায় বলা হতো। ভারতের বিভিন্ন স্থানের দলিত সম্প্রদায় ছিল। যেমন -বাংলায়,দক্ষিণ ভারতে, মধ্য ভারত প্রভৃতি।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে দলিয় সম্প্রদায় বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। দক্ষিণ ভারতে যে দলিত শ্রেণী বসবাস করত তাদের ইঝবা ও পুলায়া নামে ডাকা হতো। দক্ষিণ ভারতের ইঝবা ও পুলায়া সম্প্রদায় স্থানীয় নেতা শ্রী নারায়ণ গুরুর নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু করেছিল তাই ভাইকম সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।
ভাইকম সত্যাগ্রহ সম্পর্কে বিবরণঃ
দক্ষিণ ভারতের ত্রিবাঙ্কুরের ভাইকম নামক গ্রামে একটি বড় মন্দির ছিল সেই মন্দিরে প্রবেশ করতো দূরের কথা সেই মন্দিরের চারপাশ দিয়ে যে রাস্তা ছিল সেই রাস্তা দিয়ে দক্ষিণ ভারতের দলিত সম্প্রদায় চলাফেরা পর্যন্ত করতে পারত না। সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষদের দ্বারা এরকমভাবে অবহেলিত দক্ষিণ ভারতের দলিত সম্প্রদায় তাদের অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থন এবং স্থানীয় কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে পরিচালিত দক্ষিণ ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের এই মন্দিরে প্রবেশ সংক্রান্ত আন্দোলন ই "ভাইকম সত্যাগ্রহ" নামে পরিচিত।।
আন্দোলনে বাধাঃ
আন্দোলনকারীরা কেশব মেনে নেতৃত্বে ৩০ শে মার্চ সত্যাগ্রহ শিবির থেকে মিছিল বের করে ভাইকমের মন্দিরের দিকে এগোতে শুরু করে। পুলিশ যাত্রা পথে সত্যাগ্রহীদের মিছিল আটকে দেয় এবং সত্যাগ্রহীদের গ্রেফতার করে।। মন্দিরের দরজা নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের জন্য খুলে দেওয়ার বিষয়টিকে স্থানীয় কয়েকজন প্রতিক্রিয়াশীল বর্ণ হিন্দু মেনে নিতে পারেননি।।তাই তারা চেয়েছিলেন যাতে দলিত শ্রেণী কখনোই মন্দিরে প্রবেশ করতে না পারেন। এজন্য তারা দলিত শ্রেণীর ভাইকম সত্যাগ্রহকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এজন্য তারা সত্যাগ্রহের সমর্থক কংগ্রেসিদের সামাজিক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া সত্যাগ্রহে যোগদানকারীদের শিক্ষক বা আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ না করা বা তাদের ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এইভাবে মূলত প্রথম পর্বের ভাইকম সত্যাগ্রহ থেমে যায়।