![]() |
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর |
বিদ্রোহ | পাবনা কৃষক বিদ্রোহ |
---|---|
বিদ্রোহের প্রধান নেতা | ঈশানচন্দ্র রায় |
যার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়েছিল | হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে। |
বিদ্রোহের স্থান | বর্তমান বাংলাদেশের পাবনার ইউসুফশাহী পরগনা, ময়মনসিংহ, ত্রিপুরা, বাখরগঞ্জ,ফরিদপুর,রাজশাহী প্রভৃতি। |
বিদ্রোহের কারণ | পাবনা জেলার সাধারণ কৃষকদের ওপর সেখানকার স্থানীয় জমিদারদের শোষণ এবং অত্যাচার। |
বিদ্রোহের সূত্রপাত | ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দ |
বিদ্রোহের অবসান। | ১৮৭৩-৭৪ খ্রিষ্টাব্দে। |
পাবনা কৃষক বিদ্রোহের বিবরণঃ-
১৮৫৯/৬০ খ্রিস্টানদের নীল বিদ্রোহ হয়ে যাওয়ার পর বাংলার বা বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলার কৃষকের উপর সেখানকার স্থানীয় জমিদারদের শাসন অত্যাচার নতুন বৃদ্ধি পায়। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দের দশম আইনে কৃষককে তার জমির মালিকানা এবং পাট্টা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে স্থানীয় জমিদাররা সরকারের সেই আইন ফাঁকি দিয়ে সেখানে কৃষকদের নিজেদের ইচ্ছেমতো করে উচ্ছেদ এবং ক্রমাগত খাজনা বাড়াতে শুরু করে। এছাড়াও জমির মাপে কারচুপি করে সেখানকার কৃষকদের জমিতে নতুনভাবে বিভিন্ন উপকর বসানো হতো। এইভাবে বিভিন্ন ধরনের জমির কর,উপকর, জমি থেকে উচ্ছেদ ইত্যাদি কাজের জন্য পাবনা জেলার কৃষকরা সেখানকার স্থানীয় জমিদারদের উপর যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষুব্ধ হন। এর ফলে সেখানে কৃষকদের মনে বিদ্রোহের দানা বাধতে শুরু করে।
এই ক্ষোভের থেকেই ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে পাবনা বিদ্রোহ শুরু হয়। পাবনা বিদ্রোহকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সেখানকার বিদ্রোহীরা ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে দি-পাবনা-রায়াত লিগ গঠন করে। পাবনা বিদ্রোহের অন্যতম নেতা ছিলেন ঈশান রায় যিনি বিদ্রোহী রাজা নামে পরিচিত ছিলেন। এছাড়াও পাবনা বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন ক্ষুদিমোল্লা, শম্ভুনাথ পাল প্রমুখ।
পাবনা কৃষক বিদ্রোহের ফলাফলঃ-
স্থানীয় জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংঘটিত হওয়া ১৮৭০ খ্রিস্টাবদের পাবনা বিদ্রোহ সেরকম ভাবেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল আনতে পারেনি। পাবনা কৃষক বিদ্রোহ যখন ঢাকা, ময়মনসিংহ, ত্রিপুরা, বাখরগঞ্জ,ফরিদপুর,রাজশাহী প্রভৃতি জেলাতে ছড়িয়ে পড়ে, তখন সরকার এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পাবনা কৃষক বিদ্রোহ দমনে উদ্যোগ নেয়।
যার ফলে ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে তীব্র পুলিশি দমন নীতি এবং সেই সময়ে বাংলার দুর্ভিক্ষের কারণে ক্রমে পাবনা কৃষক বিদ্রোহ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে এই বিদ্রোহ সমাপ্ত হয়।