দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ ( West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'স্মৃতিকথা কাকে বলে? স্মৃতিকথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব আলোচনা করো'র উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এবং পরবর্তীতে আমরা উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাস সহ আরও অন্যান্য বিষয়ের সমস্ত নোটস + অনলাইন মকটেস্ট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।
স্মৃতিকথা কাকে বলে? স্মৃতিকথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব আলোচনা করো
উওরঃ- যখন কোনো একজন ব্যক্তি কোনো উল্লেখযোগ্য বা ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সাক্ষী থাকে এবং সেই ব্যক্তি পরবর্তীকালে তার স্মৃতি মাধ্যমে সেই উল্লেখযোগ্য বা ঐতিহাসিক ঘটনা গুলি লিখিত আকারে প্রকাশ করে তখন তাকে স্মৃতিকথা বলে। স্মৃতিকথা হল ইতিহাসের একটি অন্যতম উপাদান। স্মৃতিকথা হলো এমন এক সাহিত্য যেখানে লেখক তার জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ থেকে বিভিন্ন স্মৃতি তুলে এনে তা লিখিত আকারে প্রকাশ করেন। অর্থাৎ এক কথায় স্মৃতিকথা গুলি হল এক ধরনের অতীতের স্মৃতিচারণ।।
স্মৃতিকথা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যঃ-
সত্য ঘটনার উল্লেখঃ-
বিভিন্ন স্মৃতিকথা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল,যখন লেখক কোনো স্মৃতিকথা লিখতে শুরু করেন তখন সেই লেখক তার জীবনের কোনো উল্লেখযোগ্য বা ঐতিহাসিক ঘটনা? যেখানে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন সে সমস্ত ঘটনাবলি পরবর্তীতে লিখিত আকারে প্রকাশ করেন। এবং তিনি যেই সমস্ত ঘটনা লিখিত আকারে প্রকাশ করেন তার মধ্যে বেশির ভাগ ঘটনাই সত্য হয়।। কখনো কোনো স্মৃতি কথার মধ্যে কোন কাল্পনিক বিষয়বস্তু যুক্ত করা হয় না। ফলে স্মৃতি কথাগুলি অন্যান্য সাহিত্যের তুলনায় অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ।
নির্দিষ্ট সময়সীমা স্থান ও চরিত্রের উল্লেখঃ-
স্মৃতিকথা গুলির আরো একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো স্মৃতিকথায় লেখক তার জীবনের স্মৃতি বা অতীতে ঘটনাবলি স্মরণ করে তার লিখিত আকারে প্রকাশ করেন। স্মৃতিকথা লেখার সময় লেখক স্মৃতিকথার মধ্যে বিভিন্ন ঘটনা,স্থান এবং সময়ের উল্লেখ যথাযথ উল্লেখ করে থাকেন। জনশ্রুতির অন্যান্য ভাগগুলিত তুলনায় স্মৃতিকথা এক্ষেত্রে অনেক গ্রহণযোগ্য। কারণ স্মৃতিকথার লেখক তার অতীতের স্মৃতি স্মরণ করে খুব সহজভাবেই তা লিখতে পারেন।
বিশেষ ঘটনা উপস্থাপনঃ-
স্মৃতিকথা গুলিতে লেখক তার জীবনে ঘটে যাওয়া বা এমন কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা,যেখানে লেখক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন সেই সমস্ত উল্লেখযোগ্য বা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী স্মৃতিকথার মধ্যে প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে লেখক বা লেখিকা তার জীবনে ঘটে যাওয়া সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য উল্লেখ করেন না। লেখক স্মৃতিকথায় কিছু সুনির্দিষ্ট ঘটনার প্রকাশ করে থাকেন। অধিকাংশ স্মৃতিকথার শিরোনামেই স্মৃতিকথার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে আভাস পাওয়া যায়। যেমন হিরণময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা উদ্বাস্তু, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে আসা গ্রাম ইত্যাদি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের শিরোনাম থেকেই আমরা সেই সমস্ত স্মৃতি কথার মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে পারি।।
লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশঃ-
স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের সবচাইতে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের লেখক সবসময় বিভিন্ন ঘটনাবলি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে নিজের দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ করেন। লেখক উত্তম পুরুষের ব্যবহার করে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা যেখানে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন সেই সমস্ত ঘটনায় তিনি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে তা বিচার বিশ্লেষণ করে তা নিজের মতো করে প্রকাশ করেন। এর ফলে অনেক সময়ই লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পাওয়ায় অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্যে অনেক রকমের মতবিরোধ সৃষ্টি হয়ে যায়। কারণ একই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন লেখক যদি তাদের নিজের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থটি প্রকাশ করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে একটি ঘটনার ই বিভিন্ন রূপ প্রকাশিত হয়।।
স্মৃতিকথা বিভিন্ন গুরুত্বঃ-
বর্তমানে স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থটিগুলি অনেক ক্ষেত্রেই যথেষ্ট পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন -
আধুনিক ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবেঃ-
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন, সেই সমস্ত ঘটনা নিয়ে তিনি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থটি লেখেন। অতীতকালে লেখা সেই সমস্ত স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ বর্তমানে বিভিন্ন ঐতিহাসিকগণ ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে এবং ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এই সমস্ত উপাদানগুলি ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ হলো স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের লেখক কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন যা তিনি পরবর্তীকালে নিজের স্মৃতি স্মরণ করে লিখিত আকারে প্রকাশ করেছেন। স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের যে সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ থাকে তার বেশির ভাগটাই সত্য হয়ে থাকে এবং তার চাইতেও বড় কথা হলো স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের নির্দিষ্ট স্থান, সময় এবং বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য বিবরণ দেওয়া থাকে যা ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।।
অতীতের বিভিন্ন ঘটনাবলী উল্লেখঃ-
স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থটি শুধুমাত্র ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নয়। স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের লেখক নিজের অতীতের স্মৃতি স্মরণ করে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে সেই সময়কার অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করে থাকেন। এর ফলে বর্তমান সময় থেকে সেসব স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের মাধ্যমে আমরা তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে পারি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় 1971 খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের অবস্থা কেমন ছিল তা সুফিয়া কামালের একাত্তরের ডায়েরী নামক স্মৃতিকথা থেকে জানতে পারা যায়। এই স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের সুফিয়া কামাল 1971 খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানের অত্যাচারের কথা উল্লেখ রয়েছে।।
আশাকরি, দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ (West Bengal Board Class 12 History Question Answer & Suggestion 2023 ) থেকে যে 'স্মৃতিকথা কাকে বলে? স্মৃতিকথার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব আলোচনা করো' সম্পর্কে নোট দেওয়া হয়েছে, তা তোমাদের কাজে আসবে।।
Tags :
দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উওর | দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | wb class 12 History question answer | wb class xii History question answer | hs History question answer & suggestion 2023