![]() |
নবম শ্রেণির বাংলা দাম গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নবম শ্রেণির বাংলা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত দাম গল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।। এর আগে একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা নবম শ্রেণির বাংলা দাম গল্পের সমস্ত ছোট প্রশ্ন উত্তর এবং কয়েকটি বড় প্রশ্ন উওর শেয়ার করেছিলাম। আজকের এই পোষ্টের ক্লাস 9 বাংলা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের বেশ কিছু বড় প্রশ্ন উত্তর,যেমন- দাম গল্পের মাস্টারমশাই চরিত্র,দাম গল্পের গল্পকথক বা সুকুমারের চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা ছাড়াও আরও কয়েকটি বড় প্রশ্নের উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।
দাম গল্পের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বড় প্রশ্ন উত্তর 2023 || Class 9 Daam Golper Long Questions Answers 2023
প্রশ্ন- দাম গল্পের মাস্টার মশাই চরিত্রটি আলোচনা করো
উওরঃ- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পটি মূলত একজন গণিতের শিক্ষককে নিয়ে রচিত হয়েছে। সেই গণিতের শিক্ষক ছিলেন গল্পকথকদের ছোটবেলার স্কুলের গণিতের শিক্ষক। গল্পকথকদের সেই মাস্টারমশাই হলেন দাম গল্পের প্রধান চরিত্র। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের মাস্টার মশাই চরিত্রটি একটি অসাধারণ চরিত্র। দাম গল্পের মাস্টারমশাইয়ের চরিত্রের নানা দিক এই চিত্রটিকে এক অসাধারণ চরিত্রে পরিণত করেছে।
যেমন-
গণিতে অসাধারণ পাণ্ডিত্যঃ-
দাম গল্পের শুরু হয় এক স্কুল জীবনের কাহিনী নিয়ে, যেখানে স্কুলের প্রত্যেকটি ছাত্র সেই শিক্ষককে ভয় করে।। স্কুলে যেখানে ছাত্ররা ঘন্টার পর ঘন্টা জটিল অংক গুলির সমাধান করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতো, সেখানে মাস্টারমশাই শুধু মাত্র একবার দেখে সেই অঙ্গগুলোকে ঝড়ের গতিতে ব্ল্যাকবোর্ডে খড়ি চালিয়ে তা ছবির মত সাজিয়ে তুলতেন। অনেক সময় ছাত্র এটা মনে করতো যে, পৃথিবীর সমস্ত অংকই হয়তো তার মুখস্ত। মাস্টারমশাই যখন সমস্ত জটিল অংক গুলি খুব সহজে ব্ল্যাকবোর্ডে সাজিয়ে তুলতেন,তখন ছাত্র রোমাঞ্চিত হয়ে তা দেখতেন। এবং এটা থেকেই প্রমাণিত হয় যে, মাস্টারমশাইয়ের গণিত বিষয়টিতে অসামান্য পান্ডিত্য ছিল।।
কড়া শাসন এবং কঠোর মানসিকতাঃ-
স্কুলের মাস্টার মশাই ছিলেন এমন একজন, যাকে নিয়ে স্কুলে এক অদ্ভুত বিভীষিকা ছিল।। যারা অংক বিষয়টিতে কাঁচা ছিল, তারা তো বটেই, যারা অংকতে ভালো ছিল অর্থাৎ 100 তে 100 পেত,তারা পর্যন্ত মাস্টারমশাই ভয়ে কাঠ হয়ে থাকতো।। মাস্টার মশাই মনে করতেন পুরুষ হয়ে অংক না পারাটা এক অপরাধ। যখনই কেউ কোন অংকে ব্যর্থ হত, তখনই তার পিঠের উপর নেমে আসতো এক ভয়ঙ্কর প্রহার। তিনি গলা ফাটিয়ে হুংকার দিতেন। আবার যদি কেউ তার ভয়ে চোখ দিয়ে জল ফেলতো, তাহলে তিনি বলতেন যে - তার পা ধরে পুকুরে ফেলে দিয়ে আসবেন। অনেকে মনে করতো যে, মাষ্টার মশাই-এর পক্ষে সেটাও সম্ভব। এবং এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, মাস্টারমশাই ছিলেন অত্যন্ত কড়া প্রকৃতির।।
প্রকৃত শিক্ষকঃ-
গল্পকথকদের সেই মাস্টারমশাই যে একজন প্রকৃত শিক্ষক ছিলেন, তা আমরা তার কঠোরতা থেকেই বুঝতে পারি। তিনি যতই কঠোর হোক না কেন, তিনি কঠোর হয়েছিলেন ছাত্রদের উন্নতির জন্য। তিনি ছাত্রদের গণিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করানোর ক্ষেত্রে চেষ্টা করেছিলেন। তিনি কঠোর নীতি প্রয়োগ করে ছাত্রদের গণিতে পারদর্শী করে তুলতে চেয়েছিলেন যাতে এই গণিতই তাদের উন্নতি এনে দিতে পারে।। এবং একজন প্রকৃত শিক্ষকের লক্ষণ এটাই যে, শিক্ষক সবসময়ই তার ছাত্রদের উন্নতির কথা ভাববেন।
অগাধ স্নেহ-মমতাঃ-
দাম গল্পের আমরা বেশিরভাগ অংশ জুড়ে সেই মাস্টারমশাইয়ের কঠোর দিকটা সম্পর্কে জানতে পারি। মাস্টার মশাইয়ের মধ্যে যে এক স্নেহ-মমতার সমুদ্র রয়েছে, সেটা আমরা এই গল্পের শেষ দিকে জানতে পারি।। গল্পকথক মাস্টারমশাইয়ের কঠোরতার বিষয়টিকে নিয়ে গল্প লিখলেও মাস্টারমশাই তা নিয়ে একটু দুঃখ করেন না। বরং তিনি তাতে খুশি হন। গল্পের শেষ দিকে যখন তিনি বাংলাদেশে তার ছাত্রের সঙ্গে পূনরায় দেখা করেন, তখন আমরা মাস্টারমশাইয়ের এমন একটি দিক দেখতে পাই, যা আমরা ভাবতেও পারিনা। পূনরায় দেখা হওয়ার সময় সময় গল্পকথকের মনে হয়, তিনি স্নেহ-মমতার এমন এক মহাসমুদ্রের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন, যার সামনে কটি মণিমাণিক্য বা সংসারের সকল ঐশ্বর্যও কম পড়বে।। এরকম ভাবেই নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায় রচিত দাম গল্পের মাস্টারমশাই চরিত্রের নানা দিক গুলি এই চরিত্রটিকে একটি অসামান্য চরিত্রে পরিণত করেছে।।
প্রশ্ন- দাম গল্পের সুকুমার চরিত্রটি আলোচনা করো বা দাম গল্পে গল্পকথক এর চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো
উওরঃ- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচিত দাম গল্পের দ্বিতীয় প্রধান চরিত্র হলো গল্পের কথক সুকুমার। দাম গল্পের শুরু থেকেই আমরা গল্পকথকের চরিত্রের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে দেখতে পাই। যেমন -
গণিতে কাঁচাঃ-
অকপট স্বীকারোক্তি সুকুমার চরিত্রের একটি বৈশিষ্ট্য। বর্তমানে তিনি একটি কলেজের বাংলার অধ্যাপক কিন্তু শৈশবে যে তিনি অকপট গণিতে দক্ষ ছিলেন না, তা অকপটে বলতে দ্বিধা করেননি। আবার বক্তৃতা করার সময় অন্যের উক্তিকে বার্নার্ড শ-এর নামে চালিয়ে দিয়েছেন— তাও সহজেই স্বীকার করেছেন তিনি। এতে কথকের অকপট সারল্যই প্রমাণ করেছে।
শিক্ষকের প্রতি ভক্তি এবং ভয়ঃ-
শৈশবে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের অত্যধিক কঠোর শাসনের মাস্টারমশাইয়ের প্রতি কারণেই মাস্টারমশাইকে অত্যন্ত ভয় করতেন ভয় ও ভক্তি কথক। তবে এরই মধ্য দিয়ে মাস্টারমশাইয়ের প্রতি ভক্তিরও প্রকাশ ঘটেছে কথকের উক্তিতে—“মনে হলো, স্নেহ-মমতা-ক্ষমার এক মহাসমুদ্রের ধারে এসে দাঁড়িয়েছি।” অঙ্কে মাস্টারমশাইয়ের আশ্চর্য দক্ষতার কথাও তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন।
আত্মসমালোচনা এবং অনুশোচনাঃ-
একটি পত্রিকার ফরমাশ পূরণ করতে গিয়ে কথক একবার শৈশবের অঙ্কের মাস্টারমশাইকে বিদ্রুপ করে গল্প লিখে দশ টাকা উপার্জন করেন। কিন্তু পৌঢ় বয়সে সেই মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে অনুভব করেন মাস্টারমশাই ছাত্রকে আত্ম-অনুশোচনা স্মরণে রেখেছেন শুধু নয়, সেই বিদ্রুপাত্মক রচনাকেও তিনি সযত্নে রেখে দিয়েছেন আর ছাত্রের উন্নতিতে তিনি গর্ব অনুভব করছেন। তখন আত্ম-অনুশোচনায় দগ্ধ হয়েছেন কথক, লজ্জায় মাস্টারমশাইয়ের চরণে নত হয়েছে তাঁর মাথা। এভাবেই ‘দাম’ গল্পে গল্পকথক সুকুমারবাবুর চরিত্রের উত্ত বৈশিষ্ট্যগুলি প্রতিফলিত হয়েছে। কথকের আত্মোপলব্ধি শেষপর্যন্ত তাকে একজন আদর্শ মানুষে পরিণত করেছে।
প্রশ্ন- 'মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে এইটুকু আমার নগদ লাভ।'- কিভাবে? কার নগদ লাভ হয়েছিল? মাস্টারমশাই সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত বক্তার কেমন অনুভূতি হয়েছিল?
উওরঃ- আলোচ্য উক্তিটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দাম গল্পের একটি প্রধান চরিত্র বা গল্পকথক সুকুমার বাবুর। গল্পকথক ছোটবেলায় যেই স্কুলে পড়তেন, সেই স্কুলে অঙ্কের মাস্টার মশাইকে নিয়ে এক বিভীষিকা ছাত্রদের মধ্যে সব সময়ই দেখা যেত। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর পর বড় হয়ে গল্পকথক একটি পত্রিকায় গল্প লেখার সুযোগ পান। সেখানে গল্পলেখক তাদের ছোটবেলাকার সেই মাস্টার সম্পর্কে গল্প লিখে মাস্টারমশাইয়ের নানা দিক তুলে ধরেন। গল্পকথকের সেই গল্পটা জনপ্রিয় হওয়ায় পত্রিকা কর্তৃপক্ষ সেই গল্পের বদলে গল্পকথককে 10 টাকা দক্ষিণা রূপে দিয়েছিল। এই ঘটনার পর গল্পকথক ভেবেছিলেন যে, তার স্কুলের মাস্টারমশাইয়ের কঠিন এবং কড়া শাসন তাকে অংক শেখাতে পারেননি। তার ওপর গল্পকথক যেটুকু জানতেন, সেটুকু ভুলে গিয়েছিলেন মাস্টারমশাইয়ের ভীতির কারণে। তাই গল্পকথক মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে সেরকমভাবেও কিছু পাননি। কিন্তু যখন তিনি মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখলেন, তখন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাকে 10 টাকা দিয়েছিল। এখানে সেই 10 টাকাই ছিল মাস্টারমশাই কাছ থেকে গল্পকথকের পরোক্ষভাবে নগদ লাভ।। তাই গল্পকথক রসিকতার ছলে বলেছিলেন- 'মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে এইটুকু আমার নগদ লাভ।'
পরিণত বয়সে মাস্টারমশাইয়ের প্রতি কথকের মনোভাব সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিল। একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে বক্তব্য রাখতে কথক বাংলাদেশের প্রান্তিক এক কলেজে গিয়েছিলেন। সেখানে বক্তব্য শেষে সবাই যখন তাঁর বক্তব্যের প্রশংসা করছেন—তখন একটি ছেলে খবর দেয় বাইরের মাঠে এক বৃদ্ধ মাস্টারমশাই সম্পর্কে কথকের সাক্ষাৎ চান। সেইমতো বাইরে গিয়ে কথক তাঁর শৈশবের মাস্টারমশাইয়ের দেখা পান। মাস্টারমশাইয়ের ‘সুকুমার’ বলে ডাকে প্রথমে ভীত হলেও পরে ভয় কেটে যায়। মাস্টারমশাইয়ের কথায় কথক জানতে পারেন যে, মাস্টারমশাইকে নিয়ে তার লেখাটি পরম যত্নে মাস্টারমশাই রেখে দিয়েছেন এবং ছাত্রের উন্নতিতে মাস্টারমশাই গর্বিত। তিনি কথকের বক্তব্যেরও প্রশংসা করেন। তখনই কথক বুঝতে পারেন তিনি স্নেহ-মায়া-ক্ষমার মহাসমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাই শেষ অবধি কথকের অনুভূতি হয় যে, শৈশবের মাস্টারমশাই প্রকৃতই ছাত্রদরদি।
প্রশ্ন- 'ছবির মত অংকটা সাজিয়ে দিয়েছেন'- কার সম্পর্কে উক্তিটি করা হয়েছে? তিনি কিভাবে অংকটা সাজিয়ে দিতেন? তাকে ছবির মতো বলার কারণ কি?
উওরঃ-
• স্কুল জীবনের ঘটনা নিয়ে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের আলোচ্য প্রশ্নে গল্পকথক এর ছোটবেলার স্কুলের সেই অংকের মাস্টার মশায়ের সম্পর্কে উক্তিটি করা হয়েছে।
• গল্পকথকের স্কুলের মাস্টার মশাই ছিলেন অংকে অত্যন্ত পারদর্শী। স্কুলের ছেলেরা যেসকল জটিল অংক নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েও সমাধান করতে ব্যর্থ হতো,মাস্টারমশাই সেই সমস্ত অংক একবার মাত্র দেখতেন এবং তারপর ঝড়ের গতিতে হাতে খড়ি নিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে তা করতে শুরু করতেন। ঝড়ের গতিতে এগিয়েছ যেতে তার হাতের খড়ি। খসখস করে করে চলার পথে যদি কখনো হাতের খড়ি ভেঙে যেতো, তাহলে তিনি বিরক্ত হয়ে তা ছাত্রদের দিকে ছুড়ে দিতেন।। এবং একটি খড়ি শেষ হলেই আরেকটি খড়ি নিজের হাতে তুলে নিতেন।। এবং এভাবে দ্রুততার সঙ্গে তিনি যে কোনো অংক ব্ল্যাকবোর্ডে ছবির মত সাজিয়ে দিতেন।।
• এবং মাষ্টার মশাইয়ের এই সমস্ত কাজ ই গল্পকথকের মনে হতো যে, মাস্টারমশাই সমস্ত অংক গুলিকে ব্ল্যাকবোর্ডে ছবির মত সাজিয়ে দিতেন। কারণ - চিত্রশিল্পী তার অনায়াস দক্ষতায় কোনো চিত্রকে ফুটিয়ে তোলেন ক্যানভাসে। সেই চিত্র দর্শককে মুগ্ধ করে। আলোচ্য গল্পের মাস্টারমশাই তেমনই সাবলীল দক্ষতার সঙ্গে জটিল অঙ্কগুলিকে কষে দিতে পারতেন। মাস্টারমশাইয়ের বুদ্ধিদীপ্ত চোখের ঝকঝকে দৃষ্টিতে অঙ্কের জটিল তত্ত্বও সহজ হয়ে ধরা পড়ত বোর্ডে। ফলে মাস্টারমশাই যখন বোর্ডে অঙ্কগুলি কষে দিতেন তখন ছাত্ররা মুগ্ধ হয়ে যেত এবং ছবির মতোই সুন্দর লাগত বোর্ডে কষা অঙ্কটিকে। ছবি যেমন দর্শকের মনে আলাদা অনুভূতি সৃষ্টি করে, তেমনই মাস্টারমশাইয়ের কষা অঙ্কও ছেলেদের মনকে ভাবিয়ে তুলত। কথক তাই 'ছবির মতো' কথাটি বলেছেন।
প্রশ্ন- 'আমাকে অমর করে দিয়েছে'- কে? কাকে? কিভাবে অমর করে দিয়েছে?
উওরঃ- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত দাম গল্পের থেকে গৃহীত আলোচ্য প্রশ্নটিতে গল্পের কথক সুকুমার তার স্কুলের মাস্টার মশাইকে অমর করে দিয়েছেন।
গল্পকথক সুকুমার ছোটবেলায় যে স্কুলে পড়তেন, সেই স্কুলের যিনি অংকের শিক্ষক ছিলেন,তিনি এতটাই কঠিন ছিলেন যে, তার ভয়ে স্কুলের মধ্যে এক বিভীষিকা ছিল। যারা অংকে কাঁচা ছিল, তারা তো সাধারণভাবেই অঙ্কের তাঁর ভয়ে থাকতেন। কিন্তু যারা অংকে 100 তে 100 পেত, তারা পর্যন্ত অঙ্কের মাস্টার মশাইয়ের ভয়ে কাঠ হয়ে থাকতো। আমাদের গল্পকথক কোনোকালেই অংক বিষয়টিতে ভালো ছিলেন না, তাই তিনি সর্বদাই অঙ্কের মাস্টার মশাইকে ভয় করতেন। তাছাড়া স্কুলে অঙ্কের মাস্টার মশায়ের সেই কড়া শাসনের মাধ্যমে গল্পকথক যেটুকু পারতেন, সেটুকুও ভুলে গিয়েছিলেন। এভাবে টানাটানি করে স্কুল জীবন পাড় করার পর, গল্পকথক একবার একটি পত্রিকাকে গল্প লেখার সুযোগ পান। সেখানে তিনি স্কুলের মাস্টারকে নিয়ে একটি গল্প লেখেন। এবং সেই গল্পে তিনি মাস্টার মশাইয়ের সেই কড়া শাসনের নানা দিক তুলে ধরেন। গল্পটি অল্প সময়ের মধ্যেউ অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এবং এই জনপ্রিয়তার মধ্যে দিয়েই গল্পকথক নিজের অজান্তেই তিনি তাদের সেই মানুষটাকে অর্থাৎ স্কুলের সেই অঙ্কের মাস্টার মশাইকে অমর করে ফেলেন।।
এই ঘটনার কিছু বছর পর কথক বাংলার এক কলেজে অতিথিরূপে বক্তব্য রাখতে গেলে মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে দেখা হয় কথক তথা ছাত্রের। অবাক বিস্ময়ে ছাত্র দেখে যে, বৃদ্ধ মাস্টারমশাই ছাত্রের লেখা শতচ্ছিন্ন পত্রিকাটি সযত্নে রেখে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় ছাত্রের উন্নতিতে মাস্টারমশাই গর্বিত হয়েছেন। ছাত্র অনুভব করে স্নেহ-ভালোবাসার গুণে মাস্টারমশাই নিন্দাকে শ্রদ্ধার্ঘ্যে রূপান্তরিত প্রাসঙ্গিকতা করেছেন। আবার মাস্টারমশাই বলেছেন— “তোমরাই তো আমাদের গর্ব, আমাদের পরিচয়। কিছুই দিতে পারিনি, খালি শাসন করেছি, পীড়ন করেছি।" এতেই বোঝা যায় ছাত্রের প্রতি শিক্ষকের স্নেহ-মায়া-মমতার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন মাস্টারমশাই। ছাত্রের পরিচয়েই যে মাস্টারমশাইয়ের পরিচয় অনেকাংশে লুকিয়ে থাকে, সে কথাই মাস্টারমশাইয়ের বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে। তাই তাঁর উদ্ধৃত বক্তব্যটি আজও সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক।
আশাকরি, নবম শ্রেণির বাংলা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা দাম গল্পের যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, তা তোমাদের কাজে লাগবে।।
Tags : দাম গল্পের মাস্টার মশাই চরিত্র | দাম গল্পের সুকুমার চরিত্র | দাম গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর ২০২৩ | নবম শ্রেণির বাংলা দাম গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর ২০২৩| ক্লাস 9 বাংলা দাম গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর 2023 | class 9 daam golper boro proshno uttor 2023 | Class 9 Daam Golper Long Questions Answers