"আনন্দমঠ" উপন্যাসটি কিভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে সাহায্য করেছিল? || স্বদেশপ্রেমের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কি ভূমিকা ছিল ?

0

দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা বড় প্রশ্ন উত্তর || মাধ্যমিক ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

"আনন্দমঠ" উপন্যাসটি কিভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে সাহায্য করেছিল? || স্বদেশপ্রেমের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কি ভূমিকা ছিল ?
দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা বড় প্রশ্ন উত্তর

"আনন্দমঠ" উপন্যাসটি কিভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে সাহায্য করেছিল? || স্বদেশপ্রেমের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কি ভূমিকা ছিল ? 


উঃ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 1882 আনন্দমঠ উপন্যাসটি রচনা করেন।এই উপন্যাস বা গ্রন্থের মূল উপদেশ হল - স্বদেশপ্রেমই হল শ্রেষ্ঠপ্রেম/ স্বদেশপ্রেমই হল শ্রেষ্ঠধর্ম।এই গ্রন্থের মূল চরিত্র ভবানন্দের মুখ দিয়ে তিনি বলেছেন, আমরা অন্য মা মানিনা-"জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী" আমরা বলি জন্মভূমিই হল জননী।এটি সেভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল তা হল-


i)এটি স্বদেশ প্রেম, দেশমাতা আদর্শ প্রভৃতির ধারণার উদ্ভব ঘটায়। কারণ এই গ্রন্থে বলা হয় যে-"দেশমাতার হলেন মা, দেশপ্রেম হল ধর্ম,দেশসেবা হল পূজা"।  আনন্দমঠ উপন্যাসের দেশ সম্পর্কিত বা দেশমাতা সম্পর্কিত এই সমস্ত কথা তুলে ধরা হয়, তার মাধ্যমে আনন্দমঠ উপন্যাসটি সমগ্র দেশবাসীর মনে দেশ মাতার প্রতি ভক্তি এবং দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে। ফলে সকলের মনে নিজের দেশের প্রতি যে ভালোবাসা জন্মে, তা দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল।। কারণ একমাত্র দেশপ্রেম ই পারে সকলের মনে নিজের দেশের জন্য কিছু করে দেখানোর ইচ্ছা জাগিয়ে তুলতে পারে। স্বদেশপ্রেম ছাড়া কখনই দেশের জন্য ত্যাগ সম্ভব নয়। 


এবং সেই স্বদেশপ্রেমের প্রসার ঘটেছিল বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ উপন্যাসটি। এই স্বদেশ প্রেমের জন্যেই নিজের দেশকে রক্ষার জন্য বা দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সকলে স্বাধীনতার লড়াই বা বিভিন্নে বিপ্লবে সামিল হয়েছিল।।

ii)এই গ্রন্থে জন্মভূমিকে মাতৃরূপে কল্পনা করে "বন্দেমাতরম" সঙ্গীতটি রচনা করা হয়। এই সঙ্গীত পরাধীন ভারতে বিপ্লবী মন্ত্র ও উৎসাহদানকারী সঙ্গীতে পরিণত হয়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচিত বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি তৎকালীন সময়ে স্বাধীনতাকামী এবং বিপ্লবীদের জাতীয় সংগীত হিসেবে পরিণত হয়েছিল।।


iii) বাংলায় মুসলিম রাজশস্তির পতন ও ইংরেজ রাজত্বের প্রতিষ্ঠা এক নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে। এই সংকটকালে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশমাতার মুস্তির জন্য সম্ভান দলের আবির্ভাব ঘটে। সুতরাং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত আনন্দমঠ উপন্যাসটি দেশের ও যুব সম্প্রদায়কে স্বদেশভক্তি, ত্যাগ ও সেবা ধর্মে উদ্বুদ্ধ করে। 

iv)বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর এই উপন্যাসের মাধ্যমে ইংরেজ শাসনকালে পরাধীন ভারতবর্ষের দুঃখ-দুর্দশার ছবি তুলে ধরেছেন। ভারতবাসীর দুঃখ-দুর্দশার নানা কারণের মধ্যে একটি কারণ ছিলো ব্রিটিশদের শাসন।


v) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ উপন্যাসে যে বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি ছিল সেই, সঙ্গীতটি বিপ্লবীদের মধ্যে এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, যুদ্ধক্ষেত্রে ইংরেজ সেনা কামান দাগলেও দেশপ্রেমিক সন্তান দল তার মধ্যে বন্দেমাতরম গান গেয়ে এগিয়ে যায়। বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি গাইতে গাইতে তারা মৃত্যুকে খুব সহজেই বরণ করে নিতে। এক কথায় বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দে মাতরম সংগীতটি তৎকালীন বিপ্লবী সন্তানদের মৃত্যু ভয়কেও কেড়ে নিয়েছিল।।

উপসংহারঃ সবশেষে বলা যায় যে, বাঙালির জাতীয়তা গঠন ও দেশের যুবসম্প্রদায়কে স্বদেশভস্তি, ত্যাগ ও সেবাধর্মে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচিত আনন্দমঠ উপন্যাসের অবদান বাঙালি জাতির জাতীর জীবনগঠনে ও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।

Tags: দশম শ্রেণির ইতিহাস সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা বড় প্রশ্ন উত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর | class x history suggestion 2023 | class 10 history question answer & notes



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top