থ্যালাসেমিয়া কাকে বলে? কারণ, লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা || দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

0

 

থ্যালাসেমিয়া কাকে বলে? কারণ, লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা || দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর



আজের এই পোস্টের মাধ্যমে দশম শ্রেণির তৃতীয় অধ্যায় বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ ( WBBSE Class 10 Life Science Question Answer & Notes in Bengali ) অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় 'থ্যালাসেমিয়া কাকে বলে? কারণ, লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা' করবো এবং সেই সঙ্গে কিছু প্রশ্নের উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আর আমরা প্রতিদিন মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নোটস শেয়ার করে যাবো। তাই তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকো।।

থ্যালাসেমিয়া কাকে বলে? কারণ, লক্ষণ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা 


উওরঃ থ্যালাসেমিয়া হলো একটি বংশগত রোগ। জিনগত ত্রুটির ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনে পরিমাণ কমে গেলে মারাত্মক রক্তাল্পতা দেখা যায়। তাই রোগীকে যথা সময়ে বার বার রক্ত না দিলে - সেই রোগী মারা যায়। হিমোগ্লোবিনের অভাবের জন্য রক্তে অক্সিজেন বহন ক্ষমতা কমে যায়, তাই রোগীকে বার বার রক্ত বদলাতে হয়। বার বার রক্ত বদলানোর ফলে রোগীর দেহে লোহার সঞ্চয় ঘটতে থাকে। এভাবে দেহে লোহা জমার ফলে-দেহের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যেমন :- হৃৎপিণ্ড, যকৃত, অন্তক্ষরা গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একে ভূ- মধ্যসাগরীয় রক্তাল্পতা বলে।।

থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণঃ 


এটি একটি অটোজোমাল জিনগত প্রচ্ছন্ন রোগ। মানুষের 16 নং ক্রোমোজোমে অবস্থিত দুইটি পৃথক জিন।

যথা : HBA1 ও HBA2 এর দুইটি অ্যালিলে বিযুক্তির জন্য মিউটেশন ঘটলে আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং চারটি অ্যালিলে মিউটেশন ঘটলে আলফা থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগ হয়।।। অপরদিকে 11 নম্বর ক্রোমোজোম জোড়ার দুইটি মিউন্যান্ট বিটা - গ্লোবিন জিন থাকলে বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগ হয়।।।

থ্যালাসেমিয়া কত প্রকার এবং কি কি?


পূর্ণবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন প্রোটিন দুই প্রকার পলিপেপটাইড শৃংখল দ্বারা গঠিত হয়  যাদের নামকরণ করা হয় আলফা এবং বিটা। এদের উপর নির্ভর করে থালাসেমিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া। মানবদেহে 16 নং ক্রোমোজোমের হিমোগ্লোবিনের আলফা পলিপেপটাইড  শৃংখল সঠিকভাবে গঠিত না হলে যে প্রকার থ্যালাসেমিয়া হয়, তাকে বলা হয় আলফা থালাসেমিয়া। এবং অপরদিকে 11 নং ক্রোমোজোম জোড়ার দুটিতেই মিউন্যান্ট বিটাগ্লোবিন জিন থাকলে বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর বা ভূমধ্যসাগরীয় রক্তাল্পতা বা কুলির রক্তাল্পতা রোগটি হয়।।

থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষনঃ 


থ্যালাসেমিয়া রোগটির একাধিক লক্ষণ রয়েছে। এই লক্ষণগুলি মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো - 

দৈহিক বৃদ্ধির হ্রাসঃ যাদের শরীরে এই থালাসেমিয়া রোগটি রয়েছে তাদের দৈহিক বৃদ্ধি কম হয় অথবা তাদের দৈহিক বৃদ্ধি থেমে যায়। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত মানুষের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয় না।

অস্বাভাবিক বৃদ্ধিঃ থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে অস্থিমজ্জা, প্লিহা ও যকৃত ইত্যাদির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে।

কালচে মূএঃ যেসব ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত, সেইসব ব্যক্তির শরীর থেকে কালচে মুত্র নির্গত হতে দেখা যায়। পারে।

এছাড়াও হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে ত্রুটি ও রক্তাল্পতা দেখা যায়, যা হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া নামে পরিচিত।

প্রশ্নঃ থ্যালাসেমিয়া রোগীকে বারবার রক্ত দিতে হয় কেন?


উওরঃ থ্যালাসেমিয়া হলো এমন একটি জিনগত রোগ যেই রোগে শরীরে তীব্র অ্যানিমিয়া দেখা যায়। আলফা থ্যালাসেমিয়ায় আলফা পলিপেপটাইড শৃংখল এর গঠন ত্রুটিপূর্ণ হয় আবার বিটা থ্যালাসেমিয়ায় বিটা পলিপেপটাইড শৃংখল এর গঠন ত্রুটিপূর্ণ হয়। এই প্রকার ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন যুক্ত RBC -এর আয়ু মাত্র 50 থেকে 60 দিন। এবং এই হিমোগ্লোবিনের অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা খুবই কম থাকে যার ফলে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের বারবার রক্ত দিতে হয়। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের বারবার রক্ত দান করার ফলে তাদের শরীরে লোহার সঞ্চয় হতে থাকে।। এবং এই লোহার সঞ্চয়ের জন্য যকৃত, হৃদপিণ্ড,অন্তঃক্ষরা তন্ত্র ইত্যাদি বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং থাইরক্সিন হরমোনের ক্রিয়াশীলতা কমে যায়। ফলে হার্টফেল,অস্বাভাবিক হার্টের রোগ ইত্যাদি দেখা যায়।।


Tags: দশম শ্রেণির জীবনবিজ্ঞান প্রশ্ন উওর | class x life science question answer | Madhyamik life science suggestion 2023 | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্ন উওর | ক্লাস টেন জীবন বিজ্ঞান তৃতীয় অধ্যায় বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ প্রশ্ন উওর


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top