জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা || নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর

0

 

জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা বা জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে বিসমার্কের অবদান বা ভূমিকা || নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর
জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা 

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় উনবিংশ শতকের ইউরোপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত (WBBSE Class 9 History Question Answer & Notes in Bengali ) অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ 4 মার্কের প্রশ্ন 'জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা বা জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে বিসমার্কের অবদান বা ভূমিকা' এর উওর ( WBBSE Class 9 Question Answer & Suggestion 2023 ) তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আর আমরা প্রতিদিন তোমাদের জন্য নোটস শেয়ার করে যাবো। তাই তোমরা আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকো।।


জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা বা জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে বিসমার্কের অবদান বা ভূমিকা


ভূমিকাঃ জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলার ক্ষেত্রে বিসমার্ক মূলত রক্ত ও লৌহ নীতি অনুসরণ করেছিলেন। বিসমার্কের লৌহের মতো কঠোর ও সূদৃঢ় মানসিকতা এবং  বিভিন্ন যুদ্ধে রক্ত ক্ষয়ের মাধ্যমেই জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র পরিণত করার শপথ নিয়েছিলেন। এবং বিসমার্কের এই কঠোর মানসিকতার জন্যই জার্মানি একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র পরিণত হয়েছিল।। 

জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা যেরুপ ছিল, তা হলো - ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ, স্যাডোয়ার যুদ্ধ এবং সেডানের যুদ্ধের মাধ্যমেই মূলত বিসমার্ক জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে পেরেছিলেন। 

জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা -

ডেনমার্কের সঙ্গে যুক্তঃ 

জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে সবার প্রথমে ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ প্রয়োজন ছিল  কারণ ডেনমার্কের অন্তর্গত হলস্টেন এবং শ্লেজউইগ জার্মানির অন্তর্গত না হলে জার্মানি একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হতো না। এই কারণে বিসমার্কের নেতৃত্বে ডেনমার্ক এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে শুরু হয়।।এই দুটি প্রদেশ দখলের জন্য বিসমার্ক অস্ট্রিয়ার সঙ্গে মিলিত হয়ে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তাকে অনায়াসে পরাজিত করে। এরপর ভিয়েনার সন্ধি অনুসারে ডেনরাজ ডাচিদ্বয়ের উপর প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার যৌথ অধিকার স্বীকার করতে বাধ্য হন কিন্তু স্থান দুইটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে গ্যাস্টিন চুক্তি দ্বারা একটি সাময়িক মীমাংসা হয়। স্থির হয় যে, শ্লেজউইগ থাকবে প্রাশিয়ার আধিপত্যে আর হলস্টেইনের উপর কর্তৃত্ব থাকবে অস্ট্রিয়ার।

সাডোয়ার যুদ্ধঃ 

জার্মানির ঐক্য সাধনে ক্ষেত্রে শ্লেজউইগ এবং হলস্টিনকে উদ্ধার করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এই দুটি প্রদেশ আইনত ডেনমার্কের অধীন ছিল। শ্লেজউইগ এবং হলস্টেইন সমস্যাকে কেন্দ্র করে বিসমার্কের প্রাশিয়া অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং এই যুদ্ধে প্রাশিয়া এবং অস্ট্রিয়া ডেনমার্কের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে।। কিন্তু শ্লেজউইগ এবং হলস্টিনের দখল করার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে প্রাশিয়া এবং অস্ট্রিয়ার মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে গেস্টিনের চুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হয়। গেস্টিনের চুক্তি অনুযায়ী শ্লেজউইগ প্রাশিয়া এবং হলস্টিন অস্টিয়ার অধীনে চলে যায়।। কিন্তু গ্যাস্টিনের চুক্তির পর বিসমার্ক অস্ট্রিয়াকে কূটনৈতিক দিক থেকে বিচ্ছিন্ন করেন এবং অস্ট্রিয়ার অধীন থেকে হলস্টিনকে উদ্ধার করে জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তিনি অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের কারণ খুঁজতে থাকেন।   1866 খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার হলস্টেইন প্রশ্নটি জার্মান রাষ্ট্রসঙ্ঘে উপস্থাপিত করলে তা গ্যাস্টিনের চুক্তিবিরোধী। এই অভিযোগে প্রাশিয়া হলস্টেনে সেনা পাঠায়। এর প্রতিবাদে অস্ট্রিয়া প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।। মাত্র ছয় সপ্তাহ এই যুদ্ধ কয়েকটি যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর 1866 খ্রিস্টাব্দের সাডোয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়া চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়।। 

সেডানের যুদ্ধঃ

স্যাডোয়ার যুদ্ধের ফলে জার্মান-ঐক্য আংশিকভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। বিসমার্ক বুঝেছিলেন যে, ঐক্যসাধনের জার্মান জাতির সম্পূর্ণ ঐক্যের পথে ফ্রান্সই প্রধান অন্তরায়। তাই ফ্রান্সকে বিচ্ছিন্ন করে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিসমার্ক যুদ্ধের অজুহাত খুঁজতে থাকেন। শীঘ্রই স্পেনের সিংহাসন নিয়ে ফ্রান্স ও প্রাশিয়ার মধ্যে এক বিবাদ উপস্থিত হয়। এই বিবাদের সূত্র ধরেই এমস টেলিগ্রামকে কেন্দ্র করে বিসমার্ক এমন অবস্থা সৃষ্টি করেন যে, ফ্রান্স নিজেই প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ইউরোপীয় শক্তিগুলি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ফ্রান্স সহজেই প্রাশিয়ার কাছে পরাজিত হতে থাকে। অবশেষে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে সেডানের যুদ্ধে ফ্রান্স (১ সেপ্টেম্বর, ১৮৭০ খ্রি.) সম্পূর্ণ পরাজিত হয়। ফ্রান্স ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে অপমানজনক শর্তে ফ্রাঙ্কফুর্টের সন্ধি করতে বাধ্য হয়। এবং এই সন্ধি অনুযায়ী ফ্রান্স জার্মানিকে মেট্জ দুর্গ ও আলসাস্-লোরেন অঞ্চল সম্ভব। দুটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

সুতরাং বলা যায়, বিসমার্কের জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে তার রক্ত ও লৌহ নীতির মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।।


ওপরের নোটটির PDF File টি ডাউনলোড করার জন্য নিচের লিঙ্কে ক্লিক করো

এখানে👉- জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা পিডিএফ ডাউনলোড


আশাকরি যে, আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় (WBBSE Class 9 History Question Answer & Notes in Bengali ) থেকে যে 'জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা বা জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে বিসমার্কের অবদান বা ভূমিকা' এর উওর দেওয়া হয়েছে তা তোমাদের ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিও।।


Tags : 

নবম শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস 9 ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | নবম শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | class 9 history first chapter notes |  wb class 10 history question answer | wb class 9 history suggestion 2023 | History question answer 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top