![]() |
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় অধ্যায় আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহের ( WBBSE Class 11 history chapter 2 questions and answers in bengali ) একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর ( WBBSE Class 11 history chapter 2 questions and answers ) একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ "মেহেরগড় সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনা || মেহেরগড় সভ্যতা উত্থান, বিভিন্ন কেন্দ্র, চূড়ান্ত বিকাশ এবং মেহেরগড় সভ্যতার অবসান সম্পর্কে আলোচনা "এর উওর একাদশ শ্রেণির ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
মেহেরগড় সভ্যতা সম্পর্কে আলোচনা || মেহেরগড় সভ্যতা উত্থান, বিভিন্ন কেন্দ্র, চূড়ান্ত বিকাশ এবং মেহেরগড় সভ্যতার অবসান সম্পর্কে আলোচনা
মেহেরগড় সভ্যতাঃ
প্রাচীনকালে পৃথিবীজুড়ে যে সমস্ত প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল,তার মধ্যে একটি অন্যতম সভ্যতা ছিল মেহেরগড় সভ্যতা। মূলত এটিই ছিল ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা। ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিম অংশে যে গ্রামীণ সংস্কৃতির পত্তন ঘটেছিল,তাই মূলত মেহেরগড় সভ্যতা নামে পরিচিত। ভারতের সেই প্রাচীন সভ্যতা'র একটি প্রধান কেন্দ্র, 'মেহেরগড়ে' সভ্যতার প্রাচীনতম নিদর্শন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল বলে সেই প্রাচীনতম সভ্যতার নামকরণ করা হয়েছে "মেহেরগড় সভ্যতা"।
মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কারঃ
মেহেরগড় সভ্যতার আবিষ্কার করেছিলেন একজন ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ জা ফ্রাঁসোয়া জারিজ। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান রিচার্ড মিডোর সঙ্গে ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ জা ফ্রাঁসোয়া জারিজ ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে বালুচিস্তানের পশ্চিমে অবস্থিত,সিন্ধু উপত্যকার কাচ্চি সমভূমিতে খোঁড়াখুঁড়ি করে মেহেরগড় সভ্যতার প্রাচীনতম নিদর্শন গুলি খুঁজে পেয়েছিলেনন।।
মেহেরগড় সভ্যতার বিকাশের সময়কালঃ
মেহেরগড় সভ্যতা ৭টি পর্বে বিকশিত হয়েছিল।
• মেহেরগড় সভ্যতার প্রথম পর্যায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ।
• দ্বিতীয় পর্যায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ।
• তৃতীয় পর্যায়ের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ।
• মেহেরগড় সভ্যতার সভ্যতার চতুর্থ পর্যায় থেকে সপ্তম পর্যায় পর্যন্ত সময়কাল ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দ পর্যন্ত।
মেহেরগড় সভ্যতার বিভিন্ন কেন্দ্রঃ
মেহেরগড় সভ্যতার প্রধান কেন্দ্র ছিল মেহেরগড়। এখানেই এই সভ্যতার প্রথম নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে বলে এর নামকরণ হয়েছে মেহেরগড় সভ্যতা। মেহেরগড় ছাড়া এই সভ্যতার আরও বিভিন্ন কেন্দ্র ছিল। এই কেন্দ্রগুলির অধিকাংশই সিন্ধু উপত্যকার কাচ্চি সমভূমিতে অবস্থিত। এই সভ্যতার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রগুলি হল তরকাইকেল্লা, শেরিখান তরকাই, কাচ্চিবেগ, মুন্ডিগাক, পেরিয়ানো ঘুনডাই, রানা ঘুনডাই, কিলেগুল মহম্মদ, নৌসেরা, আমরিনাল, নুন্দরা, কুল্লি, কোটদিজি, গাজিশাহ, থারো প্রভৃতি।
মেহেরগড় সভ্যতার সভ্যতার চূড়ান্ত পরিণতি ও অবসানঃ
মেহেরগড় সভ্যতার চূড়ান্ত বিকাশ হয়েছিল মূলত চতুর্থ থেকে সপ্তম পর্যায়ে। মেহেরগড় সভ্যতা ছিল মূলত একটি প্রাচীম গ্রামীণ সভ্যতা। ধীরে ধীরে মেহেরগড় সভ্যতা চতুর্থ থেকে সপ্তম পর্যায়ে গ্রামীন থেকে একটি উন্নত সভ্যতার পরিণত হতে শুরু করে। সেই সময় বালুচিস্তানের সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতায় চূড়ান্তভাবে বিকশিত হয়। অধ্যাপক ড. ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, ড. দিলীপ চক্রবর্তী, ড. শিরিন রত্নাগর প্রমুখ ঐতিহাসিক পরবর্তীকালের সিন্ধু সভ্যতাকে পূর্ববর্তী মেহেরগড় সভ্যতার উত্তরসূরি বলে মনে করেন। ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় মনে করেন যে, মেহেরগড়ের নগরায়ণ পরবর্তী সিন্ধু সভ্যতায় পরিণত রূপ লাভ করেছিল। দীর্ঘ অস্তিত্বের পর আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দের কাছাকাছি সময়ে নানা অজানা কারণে ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা 'মেহেরগড় সভ্যতার' অবসান ঘটে।