যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির অষ্টম অধ্যায় সরকারের বিভিন্ন রূপ

0

 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির অষ্টম অধ্যায় সরকারের বিভিন্ন রূপ
একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সরকারের বিভিন্ন রূপ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণির অষ্টম অধ্যায় সরকারের বিভিন্ন রূপ (WBBSE Class 11 Political Science Question Answer Chapter 8 In Bengali ) ( Forms Of Government ) থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় 'যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।' এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে? যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে?

উওরঃ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কিত যে সমস্ত সঙ্গে রয়েছে তার মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্চ যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা হল, 

যুক্তরাষ্ট্র বলতে এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে একটি সাধারণ সরকার ও কতগুলি আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে এমনভাবে ক্ষমতা বঞ্চিত হয় যে, তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং তাদের প্রত্যেকের শাসন বিভাগীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে জনগণকে শাষণ করে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি হল যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যঃ 

যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কিত বার্চ যে সংজ্ঞা দিয়েছেন সেই সংজ্ঞাকে বিশ্লেষণ করলে আমরা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের অথবা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করতে পারি। যেমন - 

দুই প্রকারের সরকারের অস্তিত্বঃ 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার মূলত দুই ধরনের সরকার নিয়ে গঠিত হয়। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় দুই ধরনের সরকার এর অস্তিত্ব রয়েছে। যথা কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক ভাষার সরকারগুলি স্বতন্ত্র থাকে। মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনেই আঞ্চলিক সরকারগুলি কাজ করে । কিন্তু তা সত্ত্বেও আঞ্চলিক সরকার কিছুটা স্বতন্ত্র থাকে। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা,রাজনৈতিক ব্যবস্থা স্বাধীনতা ও সংস্কৃতিগত প্রভৃতি কারণে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে অন্যদিকে সামাজিক,অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক,ধর্মীয়,ভাষাগত প্রভৃতি পার্থক্যের জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলি স্বতন্ত্রভাবে কার্য করে থাকে।।

কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকার গুলির মধ্যে ক্ষমতার বন্টনঃ

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হলো এই প্রকারের শাসন ব্যবস্থায় সংবিধান অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা বন্টিত হয়। এরুপ শাসন ব্যবস্থায় কোন সরকারের হাতে কতটা ক্ষমতা থাকবে সেই ক্ষমতা গুলি সংবিধান অনুসারে নির্ধারিত হয়ে থাকে এবং কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার সংবিধান অনুসারে তাদের ক্ষমতা গুলি মেনে চলতে বাধ্য। প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক নীতি, মুদ্রা ব্যবস্থার বিষয় গুলি কেন্দ্রীয় সরকার এবং স্থানীয় ক্ষেত্রে স্থানীয় শান্তিরক্ষা,কৃষি, জলসেচ, শিক্ষার মতো বিষয় আঞ্চলিক সরকারের হাতে থাকে।।

সংবিধানের প্রাধান্যঃ

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার অথবা শাসন ব্যবস্থা সংবিধানের প্রাধান্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য। এরূপ শাসনব্যবস্থা যদি সংবিধানের প্রাধান্য না থাকে, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে তাদের নিজের ক্ষমতা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হবে এবং সেই বিরোধের নিষ্পত্তি জন্য কোন তৃতীয় পক্ষ থাকবে না। যার ফলে একটি রাষ্ট্রের শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় যেহেতু সংবিধান অনুসারেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে তাদের ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে দেয়া থাকে সেই কারণে সংবিধানকে প্রাধান্য দিয়েই কোনো প্রকার সরকারের মধ্যে কোনো বিরোধের সৃষ্টি হয়না।

লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের অস্তিত্বঃ

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুন্ন রাখার জন্য এবং সরকারের বিভিন্ন কার্যকলাপ এর সুবিধার্থে এরুপ ব্যবস্থায় লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। 

দ্বিনাগরিকত্বের স্বীকৃতিঃ

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দু-প্রকার সরকারের অস্তিত্ব থাকায় নাগরিকরা উভয় সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে। এইভাবে আনুগত্য প্রদর্শন করার ফলে নাগরিকরা একদিকে যেমন সমগ্র দেশের নাগরিক, অন্যদিকে তেমনি নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যের নাগরিক বলে বিবেচিত হয়। এই ব্যবস্থাকে দ্বিনাগরিকত্ব বলা হয়। তবে অনেকে দ্বিনাগরিকত্বকে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য বলে মনে করেন না।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভাঃ

কেউ কেউ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করেন। আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে সাধারণত উচ্চকক্ষে রাজ্যসমূহের প্রতিনিধিরা এবং নিম্নকক্ষে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা থাকেন। তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা যুক্তরাষ্ট্রের আবশ্যিক বৈশিষ্ট্য নয়।

যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের অবস্থিতিঃ 

যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতার পরিধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এক বা একাধিক আঞ্চলিক সরকারের বিরোধ দেখা দিতে পারে। এই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সংবিধানের ব্যাখ্যা প্রদান একান্ত প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালতের হাতে অর্পণ করা হয়। সাংবিধানিক আইনসমূহের যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে সংবিধানকে রক্ষা করাই হল যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের প্রধান কর্তব্য। তাই এরূপ আদালতকে সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা ও অভিভাবক বলে অভিহিত করা হয়।


Tags : 

একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বড় প্রশ্ন উত্তর | ক্লাস 11 রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উওর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সরকারের বিভিন্ন রূপ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর | wb class 11 political science question answer  | wb class xi political science question answer | wb class 11 political science  question answer & notes in Bengali | wbbse class 11 political science chapter 8 question answer in Bengali 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top