কোশ বিভাজন কাকে বলে? || অ্যামাইটোসিস, মাইটোসিস এবং মিয়োসিস কোশ বিভাজন কোশ বিভাজন কাকে বলে?
![]() |
'জীবনের প্রবাহমানতার' অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর |
কোশ বিভাজন কাকে বলে?
উওরঃ যে পদ্ধতিতে একটি কোশ হইতে দুই বা অধিক অপত্য কোষের সষ্টি হয় তাহাকে কোষ বিভাজন বলে।
কোশ বিভাজন কয় প্রকার এবং কী কী?
উওরঃ কোশ বিভাজন প্রধানত তিন প্রকার।
যথা - ১- অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজন,২-মাইটোসিস কোশ বিভাজন
৩-মিয়োসিস কোশ বিভাজন।
অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজনঃ
যে প্রক্রিয়ায় বেম তন্তু গঠন ছাড়াই,নিউক্লিয় পর্দার অবলুপ্তি না ঘটে কোষের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম সরাসরিভাবে বিভাজিত হয়ে দুই বা তার অধিক অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়,তাকে অ্যামাইটোসিস বা প্রথম কোষ বিভাজন বলা হয়। কিছু নিম্ন শ্রেণীর জীব যেমন ব্যাকটেরিয়া, ঈস্ট ইত্যাদি কোষে এমাইটোসিস ঘটে।
গুরুত্ব ; নিম্নশ্রেণির জীবদের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে।
মাইটোসিস বা সমবিভাজন কোশ বিভাজনঃ
যে প্রক্রিয়ায় দেহ মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে সমসংখ্যম ক্রোমোজোম বিশিষ্ঠ সমগুন সম্পন্ন দুটি নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি হয়, থাকে মাইটোসিস বলা হয়।
স্থানঃ উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গে,অর্থাৎ ভাজক কলা এবং প্রাণীদের সমগ্র দেহে ও ভ্রূণের পরিস্ফুটন এর সময়।
গুরুত্ব:
• সদৃশ বিভাজনঃ মাইটোসিস পদ্ধতিতে উৎপন্ন নতুন অপত্য নিউক্লিয়াসটি মাতৃ নিউক্লিয়াসের মতো সম আকৃতি ও সমগুন সম্পন্ন।
• জীবের আকার ও আয়তন বৃদ্ধিঃ
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে দেহে নতুন অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। যার ফলে জীব দেহের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি পায়।
• ক্ষতস্থান পূরণঃ মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে কোনো ক্ষতস্থান,নতুন কোষ এর মাধ্যমে পূরণ হয়।
• অযৌন জননঃ মাইটোসিস প্রক্রিয়া এর মাধ্যমে নিম্নশ্রেণির এককোশী জীবরা তাদের অযৌন জনন সম্পন্ন করে। এবং এর মাধ্যমে তারা নিজেদের বংশবিস্তার করে।
• নিউক্লিয় - সাইটোপ্লাজমীয় অনুপাত বজায় রাখা:
• মাইটোসিস কোষ বিভাজন কোষে নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম এর আয়তনের অনুপাত বজায় রাখে।
মিয়োসিস কোশ বিভাজনঃ
যে কোশ বিভাজন পদ্ধতিতে একটি জনন মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস পরপর বিভাজিত হয়ে, জনন মাতৃকোষের অর্ধেক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট চারটি নতুন অপত্য কোষ সৃষ্টি করে,তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলা হয়।
মিয়োসিস কোশ বিভাজন স্থানঃ প্রধানত জীবের জনন মাতৃকোষ অর্থাৎ জীবের গ্যামেট গঠনকালে জনন মাতৃকোষ এ ঘটে। উদ্ভিদ দেহের ডিম্বক,পরাগধানী ও স্পেরোনোজিয়াস।
মিয়োসিস কোশ বিভাজন গুরুত্বঃ
১ • ক্রোমোজোম সংখ্যার হ্রাসঃ মিয়োসিস পদ্ধতিতে উৎপন্ন অপত্য কোশের প্রতিটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা কমে গিয়ে জনন মাতৃকোশের অর্ধেক হয়ে যায়। যা জীবের প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা নির্দিষ্ট বা ধ্রুবক রাখার জন্য আবশ্যিক।
২ • গ্যামেট উৎপাদনঃ
মিয়োসিসের কোষ বিভাজনের ফলে জনন মাতৃকোষ থেকে গ্যামেট উৎপাদন হয়। এই প্রক্রিয়াকে গ্যামেটোজেনেসিস বলা হয়।
৩• নতুন বৈশিষ্ট্যের সঞ্চারঃ মিয়োসিস কোষ বিভাজনের ফলে প্রজাতির মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের সঞ্চার হয়। যা আসলে জীব বৈচিত্রের প্রসার ঘটায় এবং জৈব অভিব্যক্তিতে সাহায্য করে।
৪ • প্রকরণঃ মিয়োসিসের ফলে ক্রসিংওভারের সময় ক্রোমাটিডের অংশের বিনিময় ঘটায় জিনের সজ্জা-বিন্যাস বা সজ্জা-প্রকরণেও পুনর্বিন্যাস ঘটে, যার জন্য অপত্য জীবের মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হয়। এই নতুন বৈশিষ্ট্য সঞ্চারনের ফলে - যে নতুন সৃষ্টি হওয়া জীবের মধ্যে যে অভিন্নতা দেখা যায়, তাকে প্রকরন বলা হয়।