টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

0

টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে আলোচনা করো। || একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর

টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে আলোচনা করো। || টমাস হবসের সামাজিক চুক্তি মতবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো
একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর


আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় " রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও তার শাসনযন্ত্র " ( WB Class 11 history chapter 4 question answers in bengali ) এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বা বিষয় " টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে আলোচনা করো। অথবা,টমাস হবসের সামাজিক চুক্তি মতবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো' বিস্তারে আলোচনা করবো। এবং এই বিষয়ে একটি সুন্দর নোট তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। তোমাদের সামনের ইতিহাস পরিক্ষার জন্য একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন হিসাবে যে প্রশ্ন গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে 'টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে আলোচনা করো। বা টমাস হবসের সামাজিক চুক্তি মতবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো' প্রশ্নট একটি। তাই এই প্রশ্নটি তোমাদের মন দিয়ে পড়া উচিত।।


টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে আলোচনা করো। || টমাস হবসের সামাজিক চুক্তি মতবাদ সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকাঃ চুক্তিবাদী দার্শনিকদের মধ্যে একজন টমাস হবস তার আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কিত সমস্ত মতবাদ গুলি 1651 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত লেভিয়াথান নামক গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। এখানে আমরা টমাস হবসের আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কিত মতবাদ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারি। টমাস হবসের আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কিত মতবাদ গুলি হল - 

প্রকৃতির রাজ্যঃ টমাস হবসের মতে রাষ্ট্র সৃষ্টির আগে মানুষ প্রাক সামাজিক অবস্থায় বসবাস করতো। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সৃষ্টির আগে সমাজের অস্তিত্ব ছিল। মানুষ যে প্রাকসামাজিক অবস্থায় বসবাস করতো সেখানে কোন নিয়ম কারণ বা আইন-কানুন ছিল না বলে সেখানে মানুষের জীবন ছিল অনিয়ন্ত্রিত বা স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর। 

 তখন মানুষের জীবন ছিল নিঃসঙ্গ, দরিদ্র, ঘৃণ্য এবং স্বল্পস্থায়ী। মানুষ এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং শান্তির খোঁজে রাষ্ট্র সৃষ্টি কথা ভাবে। এবং মানুষ নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে রাষ্ট্রের সৃষ্টি করে। 

সার্বভৌমিকতাঃ আদিম মানুষ নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে সমস্ত ক্ষমতা কোনো একজন ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংসদের হাতে অর্পণ করেন। এবং পূর্ণ ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংসদ হলেন সার্বভৌম শক্তির কেন্দ্রস্থল। মানুষ চুক্তির মাধ্যমে যে ব্যক্তির হাতে সর্বশক্তি তুলে দেয়,সেই হলো চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী। এবং তার নির্দেশ ই হলো চূড়ান্ত আইন। এবং কেউই সেই আইনের  বিরোধিতা করতে পারবে না। এভাবে মানুষ চুক্তি করার মাধ্যমে যে একজন ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা তুলে দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র সৃষ্টি করে বলে টমাস হবস উল্লেখ করেছেন।।

8888

আচরম আনুগত্যঃ টমাস হবসের মতে মানুষের নিজেদের স্বার্থের ক্ষেত্রে অর্থাৎ নিজেদের নিরাপত্তা এবং নিজেদের সম্পত্তি রক্ষার জন্যই তারা সমস্ত সার্বভৌম ক্ষমতা একজন ব্যক্তিগত ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংসদের হাতে তুলে দিয়েছে এবং সেকারণেই নিজেদের শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষার প্রয়োজনে প্রত্যেককে সেই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তি অথবা ব্যক্তি সংসদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতে হবে। একবার রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠলে তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কথা বলার কোনো অধিকার থাকতে পারে না অর্থাৎ জনগণের পক্ষ থেকে সার্বভৌম শক্তির বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন বা প্রতিবাদ অধিকার জনগণের নেই। কারণ চূড়ান্ত সার্বভৌম ক্ষমতার যেকোনো ধরনের চুক্তির ঊর্ধ্বে।।

রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ শাসন ব্যবস্থা হিসেবে রাজতন্ত্রঃ টমাস হবসের মতে অভিজাততন্ত্র,রাজতন্ত্র এবং গণতন্ত্র -এই তিন প্রকার শাসন ব্যবস্থার মধ্যে রাজতন্ত্র ই হল রাষ্ট্রের পক্ষে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ শাসনব্যবস্থা। সমাজে শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষার জন্য রাজতন্ত্র সবচাইতে কার্যকরী শাসনব্যবস্থা বলে তিনি উল্লেখ করেছন। এক্ষেত্রে তিনি প্রাচীন এথেন্সের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে এসেন্সের পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে নির্দেশ করেছেন। 

টমাস হবসের রাষ্ট্রচিন্তার সমালোচনাঃ

 টমাস হবস তার রাষ্ট্রচিন্তা যে সমস্ত মতামত ব্যক্ত করেছেন, সেই মতামত গুলিকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচনা করা হয়। যেমন- 

কাল্পনিক মতবাদঃ প্রকৃতির রাজ্য সম্পর্কে হবসের মতবাদ সম্পূর্ণ কাল্পনিক। এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। 

একপক্ষের চুক্তি অসম্ভবঃ চুক্তি হয় সর্বদা একাধিক পক্ষের মধ্যে। কিন্তু হবস তাঁর আলোচনায় বলেছেন যে, চুক্তি হয়েছিল কেবল একপক্ষের মধ্যে। এটি সম্পূর্ণ অবাস্তব বিষয়।

888

নিন্দুকের দৃষ্টিভঙ্গিঃ হবস সর্বদা নিন্দুকের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মানব চরিত্রের কেবলমাত্র ত্রুটিপূর্ণ দিকগুলিই প্রত্যক্ষ করেছেন। মানুষের চরিত্রের বিভিন্ন ভালো দিকগুলি তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। 

চরম ক্ষমতাকে সমর্থনঃ হবস রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমিকতার নামে বাস্তবক্ষেত্রে রাষ্ট্র বা সরকারের চরম স্বৈরাচারী ক্ষমতাকেই সমর্থন করেছেন। এক্ষেত্রে টমাস হবস রাষ্ট্রের স্বৈরাচারীতাকে সমর্থন করেছেন।

টমাস হবসের সামাজিক চুক্তি মতবাদ এর গুরুত্বঃ 

টমাস হবসের রাষ্ট্র সম্পর্কিত যে সমস্ত মতবাদ রয়েছে, সেগুলিকে বিভিন্নভাবে সমালোচনা করা হলেও তার কিছু গুরুত্ব রয়েছে।  যেমন— 

আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্রের ভিত্তিঃ হবস উল্লেখ করেছেন যে, মানুষের নিজের প্রয়োজনে রাষ্ট্রের এবং চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষের প্রতি আনুগত্য জানানো কর্তব্য। এভাবে তিনি ইউরোপের শক্তিশালী আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। 

আধুনিক সার্বভৌম তত্ত্বের প্রবক্তাঃ সার্বভৌমতত্ত্ব বলতে আধুনিক কালে আমরা যা বুঝি তার প্রবক্তা হলেন হবস। তিনি সার্বভৌমিকতার সংজ্ঞা প্রদান করেন এবং এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।

ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রঃ টমাস হবস রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমর্থন করেছেন.. তিনি রাষ্ট্রকে ধর্মের উপরে স্থান দিয়েছেন। বর্তমানে প্রকৃতপক্ষেই প্রত্যেক রাষ্ট্রের ধর্ম নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন।। 

888888

Tags : 

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | WB Class 11 History Question Answer | wb class xi history Notes | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর চতুর্থ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উএর | WB Class 11 History Question Answer & Notes | Class 11 History 8 Mark Question Answer | wb Class 11 History Notes | WB Class 11 History Suggestion 2022

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top