মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়? || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
![]() |
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের ( WB Class 11 history chapter 2 question answers in bengali ) আদিম মানব থেকে প্রাচীন সভ্যতা সমূহের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ( Class 11 history chapter 2 questions and answers ) " মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়? " প্রশ্নটির উওর ক্লাস 11 ইতিহাস নোট হিসাবে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়? || একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
ভূমিকাঃ প্রাচীনকালে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, তার মধ্যে অন্যতম হল মিশরীয় সভ্যতা। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে মিশরীয় সভ্যতাই হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দ বা তারও আগে আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে নীলনদের উভয় পাশে মিশরীয় সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। মিশরে সভত্যার উদ্ভব এবং মিশরীয় সভ্যতার বিকাশের পেছনে নীলনদের যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এজন্যই মিশরীয় সভ্যতা বা মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়। মিশরকে নীলনদের দান বলার পেছনে যে প্রধান কারণ গুলি রয়েছে, তা হলো -
মরুভূমির গরম থেকে মুক্তিঃ মিশরের পূর্বে রয়েছে আরব মরুভূমি এবং পশ্চিমে রয়েছে সাহারা মরুভূমি। মরুভূমির গরম থেকে মিশরীয়দের শুধুমাত্র নীল নদ ই রক্ষা করেছে। এই দুটি মরুভূমির মাঝখান দিয়ে নীলনদ প্রবাহিত হওয়ার কারণে, নীলনদের উপকূলের সবুজ গাছপালার জন্যেই মিশরীয়রা মরুভূমির তীব্র গরম থেকে রক্ষা পায়।।
কৃষির প্রসারঃ প্রতিবছর বন্যার ফলে নীলনদের উভয় পাশে পলি সঞ্চিত হয়ে যে বিস্তীর্ণ উপত্যকা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা থেকেই কৃষিকাজের কাজের সূচনা হয় এবং তখনও যথেষ্ট কৃষির প্রসার ঘটে।। নীল নদ থেকে মিশরীয়রা কৃষিতে জলসেচের সুবিধা পেত। যার ফলে তাদের কৃষিতে জলসেচের কোনো অসুবিধা হতো না। এবং সেকারণেই তারা কৃষিতে যথেষ্ট উন্নতি করতে পেরেছিল।
শিল্প বাণিজ্যের বিকাশঃ প্রাচীনকালে নীল নদীর উভয় তীরে যে সমস্ত কৃষিপণ্য উৎপন্ন হতো, সেই সমস্ত কৃষি পণ্যে এবং শিল্প ও কারিগরদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পণ্যের উপর ভিত্তি করেই প্রাচীন মিশরে বাণিজ্যের বিকাশ ঘটেছিল। সেই বাণিজ্যের বিকাশ ঘটেছিল মূলত নীল নদের ওপর ভিত্তি করেই। নীলনদের মাধ্যমে বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজগুলি দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন জিনিস আমদানি এবং রপ্তানি করতো।
যোগাযোগের সুবিধাঃ নীলনদ থাকার জন্য মিশরের জলপথে দূর-দূরান্তের দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং পণ্য পরিবহন করা,,একস্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করা ইত্যাদি কাজ গুলি খুবই সহজ ছিল।
নগর ও বাণিজ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠিতঃ নীলনদের উভয় দিকেই ছিল আরব এবং সাহারা মরুভূমি। শুধুমাত্র নীল নদের তীরবর্তী অঞ্চলেই মরুভূমির উষ্ণ জলবায়ু ছাড়া অনুকূল জলবায়ু ছিল। এবং সেই অনুকূল জলবায়ুর জন্যই নীল নদীর উভয় তীরে শহর, নগর, বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে ওঠে।।
উপসংহারঃ উপরিক্ত কিছু কারণ ছাড়াও আরও নানা কারণে নীলনদের উভয় তীরে মূলত প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার উদ্ভব এবং বিকাশ ঘটেছিল। একারণেই গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস মিশরকে নীলনদের দান বলে অভিহিত করেছেন।।