'নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যাংশেউল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো || একাদশ শ্রেণির বাংলা নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর
![]() |
একাদশ শ্রেণির বাংলা নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই ব্লগে আমরা একাদশ শ্রেণির বাংলা ( wb class 11 Bengali ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতার " একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন " 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যাংশেউল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো। অথবা, “হায়, পাগলিনী জনা।”—পাঠ্য পত্র অনুসরণে ‘পাগলিনী’ জনার চরিত্র বিশ্লেষণ করো। " প্রশ্নটি সম্পর্কে বিস্তারিত ভালো আলোচনা করবো। তোমাদের সামনের পরিক্ষায় নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতা থেকে বড় প্রশ্ন হিসাবে 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যাংশেউল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো " প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকের এই ব্লগটি মন দিয়ে পড়ো।
'নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যাংশেউল্লিখিত জনা চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো। অথবা, “হায়, পাগলিনী জনা।”—পাঠ্য পত্র অনুসরণে ‘পাগলিনী’ জনার চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
ভূমিকাঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত বীরাঙ্গনা কাব্য-এর একাদশ পত্র ‘নীলধবজের প্রতি জনা’- এর কেন্দ্রীয় চরিত্র বলেন মহেশ্বরপুরির রানী 'জনা'। নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতায় আমরা কবিতার কেন্দ্রীয় চরিত্র জনাকে, বিভিন্নভাবে দেখতে পাই । জনা চরিত্রের মধ্যে লুকিয়ে থাকা একাধিক বৈশিষ্ট্য,,জনাকে এই কবিতা একটি আদর্শ নারী হিসেবে তুলে ধরেছে। কবিতায় জনার চরিত্রের যে বিশেষ দিক গুলো সম্পর্কে আমরা জানতে পারি, তা হল -
মাতৃপ্রেমঃ নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতায় প্রথমেই আমরা জনাদ মাতৃপ্রেমের দিকটি সম্পর্কে জানতে পারি। পান্ডবদের হাতে নিজের একমাত্র পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর পর, জনা সম্পূর্ণ ভাবে পূত্রশোকে ভেঙে পরেন। জনা নিজের পুত্র প্রবীরকে এতটাই ভালোবাসতেন যে, প্রবীরের মৃত্যুর পর জনা নিজের মনেই প্রবীরকে উদ্দেশ্য করে নানা কথা বলেছিলেন।। এছাড়াও,পুত্রের হত্যাকারীর সঙ্গে স্বামী যখন সখ্য স্থাপন করেছেন, তখন অসহায় জনা আর-কোনে খুঁজে না পেয়ে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছেন—“ছাড়িব এ পোড়া প্রাণ জাহবীর জলে।” প্রতিবাদ ও বীরধর্মের অনন্য মিশেলে জনার মাতৃসত্তা এই পত্রকবিতায় এক মহাকাব্যিক রূপ পেয়েছে।
প্রতিবাদীঃ জনা ছিলেন একজন প্রতিবাদী নারী। জনার মধ্যে ছিল প্রতিশোধস্পৃহা। নিজের একমাত্র পুত্র প্রবীরের হত্যাকারী অর্জুনের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার কথা জনা ভেবেছিলেন। জনা ভেবেছিলেন হয়তো রাজা নীলধ্বজ অর্জুনের ওপর প্রতিশোধ নেবেন।। কিন্তু তিনি যখন সেটা না করে, অর্জুনকে নিজের রাজঅতিথী হিসেবে গ্রহণ করেন, তখন জনা অর্জুন সম্পর্কে নানা যুক্তিসম্পন্ন কথা বলে, রাজা নীলধ্বজকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করেন যেম অর্জুন কখনোই কোনো বীর ছিল না। তাই যে এই অভ্যর্থনার যোগ্য নয়। এরকম ভাবে নানা মন্তব্য করার মাধ্যমে জনা অর্জুনকে একজন বীর হিসেবে অভ্যর্থনা জানানোর তীব্রে বিরোধীতা করেছেন।।
শাস্ত্র জ্ঞানঃ জনার আর-একটি গুণ শাস্ত্র-বেদ-পুরাণ-ইতিহাস সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর গভীর জ্ঞান | তিনি অর্জুনের বংশগরিমার অসারতা এবং মহাভারত রচয়িতা ব্যাসদেবের চারিত্রিক হীনতা প্রমাণ করার জন্য সচেষ্ট হয়েছেন | একইভাবে তিনি পাণ্ডব-কৌরব বংশের ইতিহাসকে এবং সত্যবতী পুত্র ব্যাসদেবের নির্লজ্জতাকে অনায়াসে বিবৃত করেছেন।
ক্ষত্ৰধৰ্মঃ জনা যেহেতু ক্ষত্রিয়কুলবধূ এবং ক্ষত্রিয়কুলবালা, তাই তিনি স্বামীকে বারবার উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন পুত্রহস্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজন করার জন্য। এর মধ্য দিয়েই তিনি ক্ষত্রধর্ম রক্ষার প্রচেষ্টা করেছেন।
স্বামীভক্তিঃ রাজা নীলধ্বজ পুত্রের হত্যাকারী অর্জুনকে রাজঅতিথি হিসেবে গ্রহণ করায়, জনা অর্জুনের
বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করে,রাজা নীলধ্বজের কাছে সঠিক বিচার চান। কিন্তু এরপর ই দেখা যায়, জনা বুঝতে পারেন যে,তার এই সমস্ত কথা বৃথা। কারণ তিনি কখনোই তার স্বামীর ওপরে যেতে পারবেন না অথবা তার স্বামী যা করছেন, তিনি কখনোই তার বিরোধিতা করতে পারবেন না।। জনা নিজের স্বামীকে গুরুজন হিসেবে ভক্তি করেন। এবং সেই কারণেই তিনি কখনই নিজের গুরুজঙ্কে অসম্মান করে তার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না।।
Tags :