আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কাকে বলে | আত্মজীবনী অথবা স্মৃতিকথাকে কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে?

0

আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কাকে বলে |  আত্মজীবনী অথবা স্মৃতিকথাকে কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে? 


আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কাকে বলে |  আত্মজীবনী অথবা স্মৃতিকথাকে কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে?
ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর


 Table Of Contents 

 • আত্মজীবনী কাকে বলে? 
 • স্মৃতিকথা কাকে বলে
 • আত্মজীবনী অথবা স্মৃতিকথাকে
কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে?
• ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার গুরুত্ব 


আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কাকে বলে | আত্মজীবনী অথবা স্মৃতিকথাকে কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে? 

স্মৃতিকথা : স্মৃতিকথা কথা বলতে প্রধানত বোঝায় লেখককে জীবনে ঘটে যাওয়ার জন্য স্মৃতিমূলক ঘটনার বর্ণনা যা সাহিত্য আকারে লেখা অথবা, যে  অ-উপন্যাসধর্মী সাহিত্যে লেখক তার জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন স্বৃতি মূলক ঘটনার কাহিনি তুলে ধরেন,তাকে বলে স্মৃতিকথা। 

যেমন - দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের " ছেড়ে আসা গ্রাম "  হিরণময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের " উদ্বাস্তু " হলো কিছু বিখ্যাত স্মৃতিকথা। 

আত্মজীবনী : আত্মজীবনী হলো সেই ধরনের অ-উপন্যাসধর্মী সাহিত্য যেখানে লেখকের জীবনে ঘটে প্রায় সমস্ত ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়ে থাকেন। যেমন, বিপিনচন্দ্র পালের " সত্তর বছর ", সরলা দেবী চৌধুরানীর " জীবনের ঝরাপাতা " এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের " জীবনস্মৃতি " হলো বিখ্যাত কিছু আত্মজীবনী।

▪ আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার মধ্যে মূল পার্থক্য হলো এটাই যে,আত্মজীবনীতে লেখক তাঁর জীবনের প্রায় সমস্ত ঘটনার উল্লেখ করে থাকেন। কিন্তু স্মৃতিকথায় লেখক শুধুমাত্র তার জীবনের বিশেষ কিছু স্মৃতির কথা উল্লেখ করে থাকেন। 

• আত্মজীবনী হলো লেখকের জীবন কাহিনীর আখ্যান অন্যদিকে স্মৃতিকথা হলো লেখকের জীবনের কিছু স্মরণীয় ঘটনার কাহিনি। 


স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনী কে কিভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান রূপে ব্যবহার করা যায়? | ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার গুরুত্ব

আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার অথবা ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে স্মৃতিকথা এবং আত্মজীবনীর গুরুত্ব রয়েছে অনেকখানি। ইতিহাস চর্চার অন্যান্য উপাদান গুলির মত স্মৃতিকথা এবং আত্মজীবনী গুরুত্বপূর্ণ,,তার কারণ 

প্রথমতঃ আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা মূলক গ্রন্থ আমরা বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ পেয়ে থাকি। যা আমাদের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।। কারণ আত্মজীবনীমূলক ও স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের আমরা যে সমস্ত ঘটনার বিবরণ পাই, তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সত্য হয়। 

দ্বিতীয়তঃ আত্মজীবনীমূলক বা স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থের আমরা ইতিহাসের এমন কিছু ঘটনার বিবরণ পেয়ে থাকি,যা তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন সংবাদপত্র অথবা ইতিহাস চর্চার অন্য কোনো উপাদানে পাইনা। 

তৃতীয়তঃ এই ধরনের রচনা সমাজের নানা স্তরের বিভিন্ন মানুষের কথা উল্লেখ করা থাকে। এছাড়াও থাকে বিভিন্ন সামাজিক ঘটনার উল্লেখ। লেখক আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথায় সেই সমস্ত ঘটনার উল্লেখ করে থাকে, যা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। 

বিপিনচন্দ্র পালের " সত্তর বৎসর ", দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের " ছেড়ে আসা গ্রাম " হিরণময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের " উদ্বাস্তু " - এইসমস্ত আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা মূলক গ্রন্থে আমরা ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ পেয়ে থাকি। যেমন বিভিন্ন বিপিনচন্দ্র পালের লেখা সত্তর বছর এ আমরা পুরনো কলকাতার কথা, ব্রাহ্মসমাজের ইতিহাস,বাঙালির জাতীয়তাবাদে দীক্ষা গ্রহণের কথা, শ্রী হট্ট জেলার পপ্ল গ্রামের নানা ঘটনার সেসব কথা জানতে পারি,,যা হয়তো সেই সময়ের কোনো পত্রপত্রিকায় সেরকম ভাবেও লেখা ছিল না। 


▪ এছাড়াও আমরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বাস্তু নামক স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থে দেশভাগ ও উদ্বাস্তু সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা জানতে পারি। 

▪ একইভাবে দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে আসা গ্রাম নামক স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থেও উদ্বাস্তু, দেশভাগ, দেশভাগের সেই সময়কার পরিস্থিতি কেমন ছিল, দেশের  জনগণের কি অবস্থা হয়েছিল সেই সমস্ত ঘটনার কথা জানতে পারি। সুতরাং এই সমস্ত সাহিত্যের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তবে ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা ব্যবহারকারীদের একথা মনে রাখা উচিত যে, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় লেখক সবসময়ই এখানে নিজের বক্তব্য পেশ করেন। এবং নিজের মানসিকতা বা দ‍ৃষ্টিভঙ্গি থেকে8 বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার সব কাহিনী ই যে সত্য হবে, অনেক সময় লেখক ইচ্ছে করেও কিছু ঘটনা হয়তো পরিবর্তন করতে পারেন। এছাড়াও যেহেতু এসব সাহিত্য হল পুরোনো ঘটনার লেখনি, সুতরাং লেখার সময় হয়তো বিভিন্ন সাল, তারিখের ভুল হতেও পারে। তাই আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা মূলকগ্রন্থ ইতিহাস চর্চার উপাদান রূপে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে, পাঠককের বিভিন্ন সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।


Tags :

আত্মজীবনী কাকে বলে? | স্মৃতিকথা কাকে বলে | আত্মজীবনী অথবা স্মৃতিকথাকে | কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে? |  ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসেবে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার গুরুত্ব | ইতিহাসের ধারণা অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস টেন ইতিহাসের 4 মার্কের প্রশ্ন উওর | wb class 10 history question answer | class 10 history suggestion |class 10 history notes | Madhyamik history question answer

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top