ভারতের জলবায়ু ও জনজীবনে মৌসুমী বায়ুর প্রভাব আলোচনা করো। || মাধ্যমিক ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
![]() |
ভারতের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর |
উত্তরঃ ভারতের জলবায়ু ও জনজীবনে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব অপরিসীম। মৌসুমি বায়ু ভারতের জলবায়ু ও জনজীবনে অনেক ভাবে প্রভাব বিস্তার করে। তাই ভারতবর্ষকে মৌসুমি জলবায়ুর দেশ বলা হয়। ভারতের জলবায়ু ও জনজীবনে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব নিম্নলিখিত ভাবে আলোচনা করা হলো।
জনজীবনের মৌসুমি বায়ুর প্রভাবঃ
কৃষিকাজের ওপর প্রভাবঃ ভারতের কৃষিকাজ মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল।। ভারতের প্রধান কিছু চাষ যেমন- চা-কফি, রবার, ধান, পাট ইক্ষু, গম, বিভিন্ন তৈলবীজ, ডালজাতীয় ফসল ইত্যাদি সমস্ত ফসল মৌসুমি বৃষ্টিপাত এর উপর নির্ভর করে থাকে।
কৃষিভিত্তিক শিল্পস্থাপনঃ ভারতের কিছু কিছু শিল্পের ক্ষেত্রেও মৌসুমী বায়ুর বিশেষ প্রভাব রয়েছে। ভারতে কৃষিভিত্তিক শিল্প (বস্ত্রশিল্প, চিনি শিল্প, পাট শিল্প) স্থাপনেও মৌসুমি বায়ুর পরােক্ষ ভূমিকা রয়েছে।
অরণ্যসম্পদ সৃষ্টিঃ মৌসুমি বায়ুজনিত বৃষ্টিপাতেরতারতম্য ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল ও পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলে প্রচুর অরণ্যসম্পদ সৃষ্টি করেছে। ভারতের অরণ্য সম্পদের ক্ষেত্রও মৌসুমী বায়ুর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব দেখা যায়।
মৃত্তিকার ওপর প্রভাবঃ মৃত্তিকা সৃষ্টি, মৃত্তিকার গঠন বৃষ্টিপাইত্যাদি নানান বিষয় নির্ভর করে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর।
অর্থনৈতিক বিকাশঃ
ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশসাধনে মৌসুমি বায়ু প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে সাহায্য করে।তাই ভারতকে মৌসুমি জলবায়ুর দেশ বলা হয়। এর প্রভাবগুলি নীচে আলােচনা করা হল।
আর্দ্র পরিবর্তন ও শুষ্ক শীতকালঃ ভারতে গ্রীষ্মকালে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম
মৌমুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং শীতকাল উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে শুষ্ক থাকে।
বৃষ্টিপাতের অসমবন্টনঃ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পশ্চিম উপকূল, উত্তর পূর্বভারত, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি স্থানে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে। অপরদিকে রাজস্থানের মরু অঞল ও পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্বালে বৃষ্টিচ্ছায় অঞল স্থানে বৃষ্টির পরিমাণ কম। তাই মৌসুমি বায়ুর প্রভাব ভারতের জলবায়ুতে বৃষ্টিপাতে অসমবণ্টন লক্ষ করা যায়।
বৃষ্টিপাতঃ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারতে 90% বৃষ্টিপাত হয়। ভারতের অধিকাংশ বৃষ্টিপাত মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঘটে থাকে। ভারতের বর্ষাকাল - মৌসুমী বায়ুর আগমন, বিচরণ ও গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
ঋতু পরিবর্তনঃ
মৌসুমি বায়ুর আগমণ ও প্রত্যাগমন-এর ওপর নির্ভর করে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ ও শীত চারটি ঋতু চক্রাকারে আবর্তিত হয়।
উষ্ণতাঃ দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমণে গ্রীষ্মকালের শেষে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে উষ্ণতা কিছুটা হ্রাস করে ও উত্তপূর্ব মৌসুমি বায়ুর ফলে শীতের প্রভাববৃদ্ধি পায়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগঃ মৌসুমি বায়ুর অনিয়মিত ও অনিশ্চয়তার জন্য অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টির কারণে কোথাও বন্যা আবার কোথাও খরা সৃষ্টি হয়।
ঘূর্ণাবাত সৃষ্টিঃ শরৎকালে মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমণের সময় এবং সমুদ্রবায়ুর
সংঘর্ষে বঙ্গোপসাগরে বা আরবসাগরে ঘূর্ণবাত সৃষ্টি হয়।
ভারতের জনজীবনের মৌসুমি বায়ুর প্রভাব :-
কৃষিকাজের ওপর প্রভাবঃ ভারতের কৃষিকাজ মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল।। ভারতের প্রধান কিছু চাষ যেমন- চা-কফি, রবার, ধান, পাট ইক্ষু, গম, বিভিন্ন তৈলবীজ, ডালজাতীয় ফসল ইত্যাদি সমস্ত ফসল মৌসুমি বৃষ্টিপাত এর উপর নির্ভর করে থাকে।
কৃষিভিত্তিক শিল্পস্থাপনঃ ভারতের কিছু কিছু শিল্পের ক্ষেত্রেও মৌসুমী বায়ুর বিশেষ প্রভাব রয়েছে। ভারতে কৃষিভিত্তিক শিল্প (বস্ত্রশিল্প, চিনি শিল্প, পাট শিল্প) স্থাপনেও মৌসুমি বায়ুর পরােক্ষ ভূমিকা রয়েছে।
অরণ্যসম্পদ সৃষ্টিঃ মৌসুমি বায়ুজনিত বৃষ্টিপাতেরতারতম্য ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল ও পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলে প্রচুর অরণ্যসম্পদ সৃষ্টি করেছে। ভারতের অরণ্য সম্পদের ক্ষেত্রও মৌসুমী বায়ুর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব দেখা যায়।
মৃত্তিকার ওপর প্রভাবঃ মৃত্তিকা সৃষ্টি, মৃত্তিকার গঠন বৃষ্টিপাইত্যাদি নানান বিষয় নির্ভর করে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর।
অর্থনৈতিক বিকাশঃ ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশসাধনে মৌসুমি বায়ু প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে সাহায্য করে।
এছাড়াও ভারতীয় জীবনযাত্রা, খাদ্যাভাস, খরা- বন্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও মৌসুমী বায়ু বিশেষ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।।
Tags :