সব নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে না কেন ? | নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ গুলি লেখো।
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর |
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা
ক্লাস টেনের ভূগোল প্রথম অধ্যায়
"বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ " এর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন- " সব নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে না কেন ? বা নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ গুলি কী কী? " এর উওর তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।।
আজকের বিষয় :
• নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে না কেন ব্যাখ্যা করো
• নদীর ব-দ্বীপ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশগুলি লেখ।
• বদ্বীপ সৃষ্টি তিনটি অনুকূল পরিবেশ লেখ
• ভারতের পশ্চিমবাহিনী নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা করো
সব নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে না কেন ? | নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ গুলি লেখো।
উওর : নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার জন্য নদীতে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার সেই বৈশিষ্ট্য গুলো যদি নদীতে এবং নদীর মোহনা অঞ্চলে না থাকে, তাহলে সেই নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে না। নিম্নলিখিত আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানবো যে, সব নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনা কেন এবং নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ গুলি কী কী?।
নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে কেন ?নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ গুলি -
◆ পলির পরিমাণ : নদী মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার জন্য প্রথম শর্তটি হলো - নদীতে জলের পরিমাণ খুব বেশি থাকতে হবে। নদীর অধিক পরিমান জল,নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করে। যেই নদীতে জলের পরিমাণ যত বেশি থাকবে, সেই নদীর ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয় ক্ষমতা ততোই বেশি থাকবে। নদীর বহন ক্ষমতা বেশি থাকলে নদীর জলের মাধ্যমে বিভিন্ন পদার্থ যেমন- নুড়ি,কাকড়, বালি ইতালি পদার্থ তার মোহনা অঞ্চলে বেশি পরিমাণে সঞ্চয় করতে পারে। যা বদ্বীপ গঠনে বিশেষভাবে সাহায্য করে। সুতরাং, নদীর মোহনায় বদ্বীপ গঠনের ক্ষেত্রে জলে পরিমাণ বেশি হতে হবে।
◆ বিপরীতমুখী স্রোত ও বায়ুর অনুপস্থিতি : অনেক সময় নদীর মোহনা অঞ্চলে বিপরীতমুখী স্রোতের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যার জন্য নদীর জলের সঙ্গে মিশে থাকা বিভিন্ন পদার্থ গুলি, মোহনা অঞ্চলে যেখানে সঞ্চিত হয়েছিল, সেই পদার্থ গুলি বিপরীতমুখী সমুদ্রস্রোত ও বায়ুর জন্য সেখান থেকে অপসারিত হয়। এভাবে সেই বিপরীতমুখী স্রোত ও বায়ুর দ্বারা সঞ্চিত পদার্থ গুলি অপসারিত হওয়ার ফলে, নদীর মোহনা অঞ্চলে কোনো বদ্বীপ গড়ে ওঠে না। তাই নদীর বদ্বীপ গঠনের ক্ষেত্রে নদীর মোহনা অঞ্চল বিপরীতমুখী স্রোত ও বায়ু মুক্ত হওয়া দরকার।।
◆ অগভীর সমুদ্র বা মোহনা অঞ্চল : নদীর মোহনায় বদ্বীপ গঠনের জন্য একটি অন্যতম প্রাকৃতিক দিক হলো, মোহনা অঞ্চলের অগভীরতা। নদীর মোহনা অঞ্চল যদি খুব বেশি পরিমাণে গভীর না হয় তাহলে, নদীর জলের সঙ্গে যদি খুব অল্প পরিমাণ পলিও মিশে থাকে, তাহলে সেই পরিমাণ পলি সঞ্চয় করার মাধ্যমেও ধীরে ধীরে নদী তার মোহনা অঞ্চলে বদ্বীপ সৃষ্টি করতে পারবে।। কিন্তু নদীর মোহনার অংশ যদি খুব বেশি পরিমাণে গভীর হয়, তাহলে নদীর বদ্বীপ গঠনের ক্ষেত্রে খুব বেশি পরিমাণে পলি সঞ্চয় করতে হবে, যা অনেক সময় নদী করে উঠতে পারে না। যার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই নদীর মোহনায় কোন বদ্বীপ দেখতে পাওয়া যায় না। কারণ সেখানকার মোহনা অঞ্চল অত্যন্ত গভীর হয়।
◆ লবনতা : নদী যখন কোনো সমুদ্রে মিশে,তখন যদি সেই সমুদ্রের জলের সঙ্গে লবণের পরিমাণ খুব বেশি পরিমাণে থাকে, তাহলে নদীর পলি বালি ও অন্যান্য পদার্থের সঙ্গে খুব দ্রুত জমাট বাঁধতে শুরু করে। যার জন্য খুব অল্পসময়ের মধ্যেই নদীর মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে।। কিন্ত মোহনা অঞ্চলে যদি জলের সঙ্গে লবণের পরিমাণ কম থাকে, তাহলে নদীর সঞ্চিত পদার্থ গুলি জমাট বাঁধতে অনেক সময় নেয়। এবং সেই সময়ের মধ্যেই সেখানকার বিপরীতমুখী সমুদ্রস্রোত এবং বায়ু, নদীর সঞ্চিত পদার্থ গুলিকে সেখান থেলে অপসারিত করে যার।। ফলে সেগুলো বদ্বীপ গঠনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। তাই মোহনা অঞ্চলে জলের সঙ্গে লবণের পরিমাণ বেশি থাকলে,তা বদ্বীপ গঠনের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
সুতরাং : নদী ও তার মোহনায় অঞ্চলে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য গুলো যদি বতর্মান থাকে তাহলে,সেই নদীর মোহনায় খুব তাড়াতাড়ি বদ্বীপ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। ভারতের পশ্চিমবাহিনী নদী গুলি ক্ষেত্রে এরুপ বৈশিষ্ট্য না থাকায়, ভারতের পশ্চিমবাহিনী নদী গুলির মোহনায় বদ্বীপ গড়ে ওঠে না বা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
Tags :