শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ ব্যাখ্যা করো || সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

0

শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ ব্যাখ্যা করো || সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর

শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ ব্যাখ্যা করো || সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা বড় প্রশ্ন উত্তর


উওর : উনিশ শতকে বাংলায় ধর্ম যখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে তখন বাঙালি জাতিকে ধর্ম ভাবনার এক নতুন পথের দিশা দেখান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। তিনি ছিলেন আর পাঁচটা সাধারণ দরিদ্র পরিবারের মানুষের মতো। সাধাসিধে এই মানুষটির মনে ছিল নির্ভেজাল আধ্যাত্মিক চেতনা যা তিনি সহজ-সরল ভাষায় ব্যাখ্যা করতেন

 তার এই ব্যাখ্যায় আকৃষ্ট হতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালীন শিক্ষিত-অশিক্ষিত আপামর বাংলা সমাজ। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের সমস্ত বাণী পরবর্তীকালে নিসৃত বাণী কথামৃত " গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এই গ্রন্থের মাধ্যমে আমরা শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সর্বধর্ম সমন্বয়ের দিকটি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাই। যেমন- 


শ্রী শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ধর্মচিন্তাঃ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের ধর্মচিন্তা বলতে বোঝায়,  তিনি কি আদতেও কোনো বিশেষ একটি ধর্মেই বিশ্বাসী ছিলেন কিনা বা তিনি শুধুমাত্র একটি ধর্মকেই নিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করেন না। -  এক্ষেত্রে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি বিশেষ একটি ধর্মকেই নিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করতেন না। এজন্য তিনি বলেছিলেন যত মত তত পথ। যেকোনো একটি ধর্মকে অবলম্বন করে সেই ধর্ম অনুযায়ী সঠিক পথে চলে পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হওয়া যায়। তার মতে সব ধর্মই সত্য। আমাদের ধর্ম আলাদা হলেও আমাদের লক্ষ্য সবার একই। অর্থাৎ পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হওয়া। এজন্য তিনি কোনো বিশেষ একটি ধর্মকে গ্রহণ করতে বলেননি। তিনি বলেছিলেন যেকোনো একটি ধর্ম গ্রহণ করে পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হতে। 

সব ধর্মই সমানঃ সর্বধর্ম সমন্বয়ের ক্ষেত্রে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো সব ধর্মই সমান। যদিও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব কথাটিকে এভাবে বলেননি। কিন্তু তিনি যেভাবে এই বিষয়টিকে দেখতেন,সেটা হলো -শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব কখনোই কোনো ধর্মকে ছোট-বড়ো করে দেখেননি। রামকৃষ্ণদেবের কাছে সব ধর্মই ছিল সমান। হিন্দু হোক বা মুসলিম, যেকোন ধর্মের সাহায্যে মানুষ সঠিক পথে পরিচালিত হয়ে পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হতে চায়। এজন্যি মানুষ বিভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করে। সুতরাং কোনো ধর্মই ছোট বা কোনো ধর্ম বড়ো নয়। সেজন্য শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেব সকল ধর্মকেই সম্মান করতেন।


জাতিভেদ প্রথার বিরোধিতাঃ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের মতে প্রত্যেক মানুষই হলো শক্তির আধার। তাই তিনি প্রত্যেক মানুষের সমান মর্যাদা দান এর কথা প্রচার করেছিলেন। যার ফলে সেই সময় সমাজে যে সামাজিক জাতিভেদ প্রথা বা অস্পৃশ্যতা ছিল, সেটা অনেকটাই হ্রাস পায়।

মানুষসেবাঃ শ্রী শ্রীরামকৃষ্ণ  পরমহংসদেবের কাছে মানুষের ধর্মের চেয়ে মানুষের মানবতাবোধটাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তার মতে ধর্ম নয়, মানুষের মনুষ্যত্বই হলো গুরুত্বপূর্ণ। এবং সেজন্যই শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কাছে ধর্মমতেরল একটি বিশেষ দিক হলো মানবতাবোধ। 

উপসংহারঃ সবশেষে বলতে হয় যে,ভারতীয় নবজাগরণে রামকৃষ্ণ দেবের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তিনি সর্বধর্ম সমন্বয় আদর্শকে আমাদের কাছে প্রতিষ্ঠা করেছেন। 

Tags : 

ক্লাস 10 ইতিহাস প্রশ্ন উওর দ্বিতীয় অধ্যায় | ক্লাস 10 ইতিহাস বড় প্রশ্ন উওর দ্বিতীয় অধ্যায় | দশম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উওর দ্বিতীয় অধ্যায় | দশম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা বড় প্রশ্ন উত্তর | সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা প্রশ্ন উত্তর | class 10 history 2 nd chapter notes | মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | wb class history notes | wb class history question answer | wb class history suggestion 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top