জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদের মূল বক্তব্যগুলি সমালোচনা সহ আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর

0

জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদের মূল বক্তব্যগুলি সমালোচনা সহ আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর


জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদের মূল বক্তব্যগুলি সমালোচনা সহ আলোচনা করো। | একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর
একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উওর


আজকের এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আমরা একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় " জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ " একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় " জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিক বিভিন্ন মতামত এবং তাদের মতবাদের সমালোচনা " সম্পর্কে আলোচনা করবো। একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে বড় প্রশ্ন হিসেবে " জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বাদের মূল বক্তব্যগুলি সমালোচনা সহ আলোচনা করো। " প্রশ্নটি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই প্রশ্নটা তোমাদের মন দিয়ে পড়া উচিত।।

আজকের বিষয় : 

• জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কিত অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতবাদ
• জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত অভিজ্ঞতাবাদী মতামত কি? 
• জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত অভিজ্ঞতাবাদী মতবাদ বলতে কী বোঝায়?
• জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদের মূল বক্তব্যগুলি সমালোচনা সহ আলোচনা করো।

 

জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বাদের মূল বক্তব্যগুলি সমালোচনা সহ আলোচনা করো।

ভূমিকা : জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে পাশ্চাত্য দর্শনের দুটি মতবাদ রয়েছে একটি হলো বুদ্ধিবাদ এর মতবাদ এবং অপরটি হল অভিজ্ঞতাবাদী মতবাদ। জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকরা যে মতবাদ দিয়েছেন,তাই অভিজ্ঞতাবাদী মতবাদ নামে পরিচিত। অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকরা জ্ঞানের উৎপত্তি সংক্রান্ত যে সমস্ত মতামত দিয়েছেন, তা হল - 

◆ জ্ঞানের উৎস বিষয়ক মতবাদ : অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মূল বক্তব্য হলো - প্রকৃত ও যথার্থ জ্ঞানের একমাত্র উৎস হলো ইন্দ্রিয়ানুভব। আমাদের প্রকৃত ও যথার্থ জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে কোনো বুদ্ধির প্রয়োজন নেই। অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতে জ্ঞান সম্পূর্ণরূপে ইন্দ্রিয় প্রত্যক্ষ থেকে উৎপন্ন হয়। এবং প্রত্যক্ষপূর্ব অনুগ্রহ কোনো সহজাত ধারণা মানব মনে উপস্থিত নেই।।

◆ জ্ঞানের বিষয় : অভিজ্ঞতাবাদীরা প্রাকৃতিক বিজ্ঞান,পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণরের ওপর বা বাস্তব ব্যাপার বিষয়ক জ্ঞানের উপর প্রাধান্য দেন। 

◆ বচনের স্বীকারোক্তি : নরমপন্থী অভিজ্ঞতাবাদীরা দুই ধরনের বচন স্বীকার করে থাকেন। যথা - 

প্রথমতঃ পূর্বতঃসিদ্ধ,বিশ্লেষক যা অবশ্যম্ভব জ্ঞানকে ব্যক্ত করে। যেমন -সকল মানুষ হয় মরণশীল। 

• দ্বিতীয়তঃ হলো পরতঃসাধ্য - সংশ্লেষক যা আপতিক জ্ঞানকে ব্যাক্ত করে। যেমন- আমার হয় মিষ্টি।


◆ জ্ঞানের স্বরূপ : বিচারবাদী দার্শনিক কান্ট জ্ঞানের ক্ষেত্রে দুটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছিলেন। একটি হলো তথ্যবিষয়ক বা নতুনত্বমূলক জ্ঞান এবং অপরটি হল আবশ্যিক বা সার্বিক জ্ঞান। কান্টের মতে যে জ্ঞান শুধুমাত্র তথ্য বিষয়ক হবে তা জ্ঞান হবে না। অপরদিকে যে জ্ঞান শুধুমাত্র সার্বিক হবে কিন্তু তার তথ্য বিষয়ক হবে না? সেটাও প্রকৃত জ্ঞান নয়। কিন্তু অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকরা মনে করেন, প্রকৃত জ্ঞান কখনোই আবশ্যিক হবে না। প্রকৃত জ্ঞান হবে শুধুমাত্র তথ্য বিষয়ক। 

◆ অধিবিদ্যা বিষয়ক জ্ঞান : অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিক হিউম এবং যৌক্তিক দৃষ্টিবাদীদের মতে অধিবিদ্য্যার জ্ঞান সম্ভব নয়।তাদের মতে অধিবিদ্যার বাক্য অর্থহীন এবং অধিবিদ্যা সম্ভব নয়।কেননা অধিবিদ্যায় যেসব বাক্য -যেমন আত্মা অমর,ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয় ইত্যাদি পাওয়া যায়, সেগুলো বিশ্লেষকও  নয় আবারও সংশ্লেষকও নয়।। এগুলি বিশ্লেষক নয়, কারণ এদের বিরোধী রয়েছে। যেমন- আত্মা অমর নয় এটা সম্ভব নয়। আবার এগুলো সংশ্লেষকও নয়। কারণ - আত্মা অনুভবে যাচাই যোগ্য নয়। কাজেই আধিবিদ্যক বাক্যে কোনো জ্ঞান ব্যক্ত হয় না।।

◆ মূল্য বিষয়ে বাক্য ; অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতে মূল্য বিষয়ক বাক্যের কোনো অর্থ নেই। কারণ তাদের মতে - মূল্য ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পাওয়া যায় না তাই মূল্যের কোনো বাস্তব সত্য নেই।  যখন বলি রামধনু সুন্দর -তখন আমরা রামধনুর সৌন্দর্য কোনো ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পাই না। কাজেই  মূল্য যেহেতু প্রত্যক্ষের বিষয় নয়,সেহতু মূল্যের কোনো বস্তুগত সত্বা নেই।।


◆ সহজাত ধারণা : অভিজ্ঞতাবাদীরা জ্ঞানের উৎপত্তির ক্ষেত্রে সহজাত ধারণার অস্তিত্বকে স্বীকার করেন।  কিন্তু জন লক এটি স্বীকার করলেও তিনি এটি অন্যভাবে স্বীকার করেছেন।। জন লকের মতে সহজাত ধারণা বলে কিছু নেই কিন্তু জন্মের সময় আমাদের মনে থাকে সাদা কাগজের মতো।।

◆ জ্ঞান লাভের পদ্ধতি : অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকরা জ্ঞান লাভের পদ্ধতি হিসেবে পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা এবং অবরোধ পদ্ধতির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকদের মতামতের সমালোচনা

কিন্তু অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিকরা জ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে যে মতামত দিয়েছেন,তা সম্পূর্ণভাবে দোষমুক্ত নয়। যেমন - 

প্রথমতঃ বলা যায়, বাস্তব জগৎ সংক্রান্ত জ্ঞান মাত্রই ইন্দ্রিয় অনুভবে পাওয়া যায় না। যেমন - " লাল ফুল ' এক্ষেত্রে লালত্ব ও ফুলত্বের ধারণা না থাকলে লাল ফুলের জ্ঞান হয় না। এখন লালত্ব এ ফুলত্ব ধারণা বুদ্ধিবাদ বা মনন ছাড়া সম্ভব নয়। কাজেই জ্ঞান গঠনের ব্যাপারে বুদ্ধির অবদানকে অস্বীকার করা যায় না।

দ্বিতীয়তঃ মিলের মতে অবশ্যম্ভব জ্ঞান বলে কোনো কিছু নেই। কিন্তু তার এই মত সমর্থন যোগ্য নয়। কারণ একথা সর্বজন স্বীকৃত যে, গনিত্ব  যুক্তি বিজ্ঞানের সূত্র গুলি আমাদের অবশ্যম্ভব জ্ঞান দেয়। তাছাড়া গাণিতিক বাক্য হলো আরোহলব্ধ সিদ্ধান্ত।  এই উক্তি প্রমাণ করে যে, ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে অবশ্যম্ভব জ্ঞান হতে পারে না  কারণ বুদ্ধি ছাড়া আরোহ বা অবরোহ অনুমান সম্ভব নয়।।

Tags : 

একাদশ শ্রেণীর দর্শন দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর | জ্ঞানের স্বরূপ এবং জ্ঞান সংক্রান্ত মতবাদ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উত্তর | class 11 philosophy question answer | wb class xi philosophy question and answer | class 11 philosophy | class 11 philosophy suggestion 2022 | Class 11 philosophy chapter 2 questions and answers in bengali | Wb Class 11 philosophy chapter 2 questions and answers in bengali


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top