সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো | 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন?

0

 সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো | 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন?  


সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো | 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন?


আমাদের ওয়েবসাইটে ক্লাস টেনের ইতিহাসের ( wb class 10 history ) বিভিন্ন অধ্যায়ের প্রশ্ন উওর শেয়ার করা হয়েছে। এর আগের কিছু পোস্টে আমরা দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় (class 10 history question answer )  " প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ " এর বেশ কিছু প্রশ্ন উওর এবং প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ে mcq question answers হিসাবে একটি free online mcq test ও শেয়ার করেছিলাম। আজকের এই পোস্টে মাধ্যমিক ইতিহাস বা দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় " প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ  অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর ( class 10 history notes in Bengali ) হিসাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো | 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন?" এই প্রশ্নটির  উওর শেয়ার করবো।

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো | 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন

উওর : ভারতে ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন, ব্রিটিশ শাসন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে সমস্ত উপজাতীয় বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল, তার মধ্যে সিধু ও কানুর নেতৃত্বে সংঘটিত হওয়া 1855 খ্রিস্টাব্দের সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল একটি অন্যতম উপজাতি বিদ্রোহ।

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ : 1885 খ্রিস্টাব্দে সিধু এবং কানহুর নেতৃত্বে  সাঁওতালরা ভাগনা ডিহির মাঠে জড়ো হয়ে সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা করেছিল। সাঁওতাল বিদ্রোহের করার পেছনে সাঁওতালদের একাধিক কারণ ছিল। যেমন - 


মহাজন' ও ব্যবসায়ীদের কারচুপি : সাঁওতালদের বিদ্রোহ করার পেছনে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং মহাজনদেরও হাত ছিল। নিরক্ষর বা অল্প শিক্ষিত সাঁওতালদের কিছু কিছু অসাধুরা মহাজনরা খুব বেশি বার্ষিক সুদের হারে ঋণ প্রদান করতো এবং সুদ গ্রহণ করে দেখা যেত,সেই অর্থ অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে। এভাবে সাঁওতালদের উপর ঋণের বোঝা প্রচুর পরিমাণ বেড়ে যেত। এছাড়াও সাঁওতালরা যখন কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোনো কিছু কিনতে যেত অথবা তাদের নিজেদের জমিতে উৎপন্ন কোনো ফসল বিক্রি করতে যেত, তখন ব্যবসায়ীরা ভূল বাটখারা ব্যবহার করে সাঁওতালদের সেখানেও ঠকাতে। সাঁওতালের আস্তে আস্তে এই জিনিসগুলো বুঝতে পারায় তাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। 

জমির উপর খাজনা বৃদ্ধি : ব্রিটিশ শাসন চালু হওয়ার পর ব্রিটিশ সরকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করেছিল। বাংলা,বিহার, উড়িষ্যায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর, সাওতাতদের উদ্ধার করা জমিতেও খাজনা ধার্য করা হয়। এই ব্যবস্থার আগে সাঁওতালরা, তাদের উদ্ধার করা জমিতে চাষ করার জন্য সরকারকে কোনরকম খাজনা দিতো না।  কিন্তু চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু হওয়ার পর তাদের উদ্ধার করা জমিতে চাষ করার জন্য অনেক খাজনা দিতে হতো। ফলে তাদের নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়।

অরণ্যের ওপর থেকে অধিকার হারানো : নতুন ভূমি রাজস্ব নীতির ফলে সাঁওতালরা অন্যের উপর থেকে তাদের চিরাচরিত অধিকার হারিয়ে ফেলেছিল। সাঁওতালরা অনেক ক্ষেত্রেই অরণ্যের উপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। যেমন অরণ্য থেকে ফল,সংগ্রহ পশুপাখি শিকার,জমি উদ্ধার করে সেখানে বিনা খাজনায় চাষ বাস করে জীবিকা নির্বাহ করা ইত্যাদি। কিন্তু নতুন ভূমি রাজস্ব নীতির পরে সাঁওতালরা তাদের এই অধিকার হারিয়ে ফেলে। ফলে সাঁওতালরা ব্রিটিশ শাসনের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।


বেগার শ্রম : বেগার শ্রম বলতে বোঝায় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করা। অনেক ক্ষেত্রেই সাঁওতালদের বিনা পারিশ্রমিকে এ কাজ করতে বাধ্য করা হতো। যদি তারা বেগার শ্রম দিতে রাজি না হতো,তাহলে তাদের ওপর নানা রকম শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করা হতো। 

প্রশাসনের অসহযোগিতা : সাঁওতালদের উপর হওয়া নানা শোষণ অত্যাচার এবং অন্যায় কাজ গুলোর বিরুদ্ধে যখন তারা আইন-আদালত পুলিশ প্রশাসনের কাছে তার বিরুদ্ধে নালিশ করতো বা সেসব অত্যাচারের জন্য সঠিক বিচার চাইতো, তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রশাসন নিজেদের সাথে স্বজাতি ইংরেজদের অথবা উচ্চবিত্ত জমিদার ও মহাজনদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য,উপজাতি সাঁওতালদের কোনো রকম সাহায্য করতো না। 

সাঁওতালদের নিজস্ব নীতি-নিয়ম পরিবর্তন ; বিভিন্ন উপজাতি সমাজে  তাদের নিজেদের কিছু সামাজিক নিয়ম- নীতি অথবা ধর্মীয় রীতি-নীতি প্রচলিত থাকে। ব্রিটিশ শাসনের আগে সাঁওতাল দের ক্ষেত্রেও তা-ই ছিল। কিন্তু ব্রিটিশ শাসনের পরে সাঁওতালদের এই সামাজিক নিয়মকানুন পরিবর্তন করে সেখানে জটিল ব্রিটিশ নিয়মকানুন প্রচলন করা।। যার ফলে এখানে সাঁওতালদের আবেগে অথবা মানসিক দিক দিয়ে আঘাত করা হয়।


উপসংহার : উপরোক্ত নানা কারণ ছাড়াও আরও এক বা একাধিক কারণে সাঁওতালরা এসব শোষণ অত্যাচারের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে বিদ্রোহের দিকে পা বাড়ানো কথা ভাবতে শুরু করে।। এবং শেষ পর্যন্ত যখন তাদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যায়, তখন তারা সিঁদুর ও কানহু নামের দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে 1855 খ্রিষ্টাব্দের 30 শে জুন ভাগনা ডিহির মাঠে প্রায় 10,000 সাঁওতাল মিলে তাদের সাঁওতাল বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এবং এভাবেই শুরু হয় 1855 খ্রিষ্টাব্দের সাঁওতাল বিদ্রোহ।


আশাকরি উপযুক্ত আলোচনা থেকে তোমরা " সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো | 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন? কী ছিল - সেই সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ clear-cut ধারণা এবং " 1855 খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়েছিল কেন? প্রশ্নটির সঠিক উত্তর পেয়ে গেছো।  যদি আজকের এই ব্লগ পোস্ট থেকে তোমাদের একটুও হেল্প হয়ে থাকে,তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ে দেখতে পারো।

 Tags ; 

প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ অধ্যায়ের বড় প্রশ্ন উওর | ক্লাস টেনের প্রতিরোধ ও বিদ্রোহপ্রশ্ন উওর | ক্লাস 10 প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বড় প্রশ্ন উওর | দশম শ্রেণির প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বড় প্রশ্ন উত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন | মাধ্যমিকের ইতিহাসের বড় প্রশ্ন উত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন | wb class 10 history question answer  | wb class 10 history short question answer | wb class 10 history saq question answer | wb class 10 history mcq question answer | Madhyamik History question and answer | Madhyamik History question and answer Bengali | history question answer | history saq | history question answer | class 10 history short question answer | class 10 history question answer | history question answer | class 10 history question answer | class 10 history notes | wb class 10 history notes in Bengali | wb class 10 history question answer chapter 3 | wb class 10 history chapter 3 question answer in Bengali 


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top