Advantage And Disadvantage Of Eggs In Bengali |
আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা আপনাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক ( New Health Tips In Bengali ) একটি পোস্ট শেয়ার করবো। আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের Advantage And Disadvantage Of Eggs In Bengali || ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করবো।। আজকের এই ব্লগ থেকে আপনি ডিম খেলে কী কী হয় বা ডিমের Advantage And Disadvantage Of Eggs In Bengali || ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতার সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু জানতে পারবেন।
Advantage And Disadvantage Of Eggs In Bengali || ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে-
যদি আপনি খুব অল্পতেই বিভিন্ন ছোটখাটো রোগের শিকার হয়ে পরেন, তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম। আপনার শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ডিম আমাদের অনেক উপকার করে থাকে।। ডিমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২ ও সেলেনিয়াম, জিঙ্ক থাকে, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই আমাদের শরীর খুব অল্পতেই সর্দি-কাশি ,জ্বরের মতো রোগগুলিতে বার বার আক্রান্ত হয়ে পড়ি না।।
চোখ ভালো রাখার ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
বতর্মান সময়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই চোখের নানান সমস্যায় ভুগছেন। এর কারণ হতে পারে আমাদের শরীরে ভিটামিন এ - এর অভাব। কারণ ভিটামিন আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করতে এবং ভালো রাখতে ভিটামিন এ খুবই উপকারী।। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে, যা আমাদের শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব হতে দেয় না। এবং এর ফলে আমাদের দৃষ্টিশক্তি দীর্ঘদিন ভালো থাকে।। ডিমে থাকা কেরোটিনয়েড আর ল্যুটেন যা বয়স হয়ে গেলে চোখের এক বড় সমস্যা,ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।। এবং সেই সঙ্গে চোখের ছানিও হওয়ার আশঙ্কাও কম করে।।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
যারা শরীরের ওজন কমানোর চেষ্টায় রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে ডিম একটি খুবই উপকারি খাদ্য।
কারণ ডিম খেলে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা থাকে এবং এর ফলে আমাদের বার বার খিদে পায়না।। যার ফলে অন্য খাবার গ্রহণে আপনার আগ্রহ কমে যায়।। তাই বার বার খিদে না পাওয়ায় আপনি আপনার খাওয়া কমিয়ে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপকার পেতে পারেন।।
পেশিজনিত ব্যথা কমাতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা
আজকের সময়ে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন বয়সেই শরীরের পেশিতে ব্যথা হয়ে থাকে।। পেশির ব্যথা থেকে মুক্ত পেতে ডিম আমাদের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার।। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও উচ্চমাত্রায় প্রোটিন, ভিটামিন ডি থাকে যা যা শরীরের পেশিকে ভালো রাখে এবং পেশি জনিত ব্যথার থেকে আমাদের আরাম দেয়। তাই আপনার কোনো কাজের ফলে যদি পেশিতে কোনো ব্যথা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি ডিম খেতে পারেন।।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
ডিম খাওয়ার আরও একটি উপকারিতা হলো এই যে - ডিম আমাদের ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের হাত থেকেও বাঁচতে সাহায্য করে।।
ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ডিমে থাকা ভিটামিন ই বিশেষ সাহায্যকারী। ডিমে ভিটামিন-ই থাকে যা আমাদের ত্বক এবং কোষের ফ্রি র্যাডিকেল ধংস করে আমাদের শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও ভিটামিন ই নতুন কোষ গঠন করতে সাহায্য করে। অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে নিয়মিত ভাবে ডিম খাওয়ার ফলে মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।।
হার্টের সুরক্ষায় ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
বতর্মানে সময়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। হার্টের সমস্যা থেকে বাঁচতেও আমরা ডিম খেতে পারি।।
ডিম আমাদের হার্ট ভালো রাখতেও যথেষ্ট উপকার করে। এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে ডিম হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। যার ফলে আমাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক কম হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।। পাশাপাশি ডিম শরীরে রক্ত চলাচল সচল আর স্বাভাবিক রাখে।
রক্ত স্বল্পতায় ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
যারা বিভিন্ন কারণে রক্ত স্বল্পতার মতো ভয়ানক রোগে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে ডিম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার হতে পারে। অনেক সময় যাদের শরীরে রক্ত কম থাকে তাদের আয়রনে ওষুধ খেতে বলা হয়। যদি আপনি আয়রনের ওষুধ না খেয়ে ডিম খান তাহলেও আপনার রক্তস্বল্পতার সমস্যা দূর হবে।। ডিম হল একটি আমিষ জাতীয় খাদ্য যাতে উচ্চ মাত্রায় আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
ডিমের হলুদ কুসুমে আছে প্রচুর পরিমানে খনিজ পুষ্টি এবং ভিটামিন যা আমাদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে দূরে রাখে।।
শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
আমাদের সাস্থ্যই হলো আসল সম্পদ। কিন্তু যখন আমাদের শরীর ই অসুস্থ হয়ে পরে তখন সেই সম্পদের মানে কী দাড়ায়?
আমাদের সার্বিক সুস্থতায় জন্য কোলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। দেহে কোলাইনের ঘাটতি হলে আমাদের লিভারের সমস্যা হয়ে থাকে।। শরীরে এই কোলাইনের ঘাটে দূর করার ক্ষেত্রে ডিম যথেষ্ট উপকারী।। ডিমে প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রাম কোলাইন থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।। তাই ডিম খেলে আমাদের লিভার, স্নায়ু, এবং যকৃত সুস্থ বা ভালো থাকে।।
এনার্জির ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
ডিম আমাদের শরীরে এনার্জি জোগায়।। শরীরের সমস্ত ক্লান্তি দূর করতে, আপনার শরীরে এনার্জি পাওয়ার জন্য সকালে একটা সিদ্ধ ডিম ই যথেষ্ট। ডিমে প্রচুর পরিমান ভিটামিন বি থাকে যা আমাদের গ্রহন করা খাদ্যকে শক্তিকে রুপান্তর করে।। ডিমে থাকা ভিটামিন বি আমাদের শক্তির ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা খুব ভারী কাজ করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ভাবে ডিম খাওয়াটা অনেক উপকারের।।
দাঁত ও হাড়ের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার উপকারিতা-
ডিম আমাদের দাঁত ও হাড়ের ক্ষেত্রেও অনেক উপকারী। ডিম আমাদের দাঁত এবং হাড়ের ক্ষয় হয়ে যাওয়া, এর গঠন এবং দীর্ঘ সময় পযর্ন্ত এর কোনো ক্ষতি না হওয়া থেকে আমাদের দাঁত এবং হাড়কে বাঁচায়। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস থাকে, যা আমাদের হাড় এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ এবং মজবুত করে। তাই হাড় এবং দাঁতকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন ফসফরাস প্রয়োজন যা আমরা ডিম থেকে পেয়ে থাকি।। তাই হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে প্রতিদিন ডিম খাওয়া প্রয়োজন।
ডিম খাওয়ার কিছু অপকারিতা (Disadvantage Of Eggs)
ডিম খাওয়া আমাদের পক্ষে উপকার হলেও এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কীছু সাবধান হওয়া উচিৎ।
ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের - কিছু জিনিস নিয়ে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। যেমন - ডিমের সঙ্গে আমাদের টকদই, কলা, মধু, দুধ, এবং লেবু ইত্যাদি না খাওয়াই উচিৎ।। কারণ সেক্ষেত্রে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।।
যেমন -
1 - লেবু ও ডিম একসঙ্গে খেলে রক্তজালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেখান থেকে আমাদের হার্ট অ্যার্টাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
2 - সেদ্ধ ডিমের সঙ্গে টকদই বা ডিম পোচের সঙ্গে টকদই ভুল করেও আমাদের একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।। কারণ এই দুটি খাবার একসঙ্গে খেলে আমাদের হজম করতে সমস্যা হয়।।
3 - ডিম ও মধু দুটোই আমাদের শরীরের পক্ষে অন্তত উপকারী। কিন্তু এই দুটো খাবার একসঙ্গে খাওয়াটা উচিৎ নয়।। ডিম ও মধ একসঙ্গে খেলে সেটা আমাদের কিডনির উপর মারাত্মক চাপ ফেলে। সেখান থেকেই দানা জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়।।
4 - কলা এবং ডিম একসঙ্গে খেলেই ভয়ংকর সমস্যা হতে পারে।। এটি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শুরু করে পেটের যাবতীয় সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।। কলা এবং ডিম একসঙ্গে খেলে এটি আমাদের হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে।। তাই ডিমের সঙ্গে কলা না খাওয়াই ভালো।।
5- যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ায় একটু সাবধান হতে হবে। কারণ
হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের কোলেস্টেরল গ্রহণ সীমিত করা উচিত। ডিমের প্রতি কুসুমে প্রায় ১4 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। তাই ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।।
6- যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রেও ডিম খাওয়ায় কিছুটা সাবধান হতে হবে।। কারণ ডিম তাদের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা তৈরি করতে পারে।।
আশাকরি যে, আজকের এই ব্লগ থেকে আপনি "advantage And Disadvantage Of Eggs In Bengali || ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা" সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি জানতে পেরে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।। এবং এই পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।