গুরু নাটকের সুভদ্র চরিত্রটি সম্পর্কে আলোচনা করো।
![]() |
একাদশ শ্রেণির বাংলা গুরু নাটকের প্রশ্ন উত্তর 2023 |
উওরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গুরু নাটকে,তিনি প্রথার সঙ্গে শিশুমনের যে দ্বন্দ্ব বা মেলবন্ধন,সেটা তিনি সুভদ্র চরিত্রে স্পষ্ট ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। গুরু নাটকে সুভদ্রের যেসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ করতে পারি, তাহল-
কৌতুহলী মানসিকতাঃ-
সুভদ্র যে একজন কৌতুহলী বালক সেটা আমরা এখান থেকে জানতে পারি যে, অচলায়তনের উত্তর দিকের এক জানালা যেটা কেউ কখনোই খুলে দেখেনি বা যেটা খোলার সাহস কেউ করতে পারেনি, সেখানে সমুদ্র নিজের কৌতুহলের বশে সেই জানালাটাও খুলে ফেলে।।
কুসংস্কারে বিশ্বাসঃ-
গুরু নাটকে অচলায়তন হলো এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে ধর্মীয় কুসংস্কার, বিভিন্ন নিয়ম কানুন খুব কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হতো। তাই অচলায়তনের অন্যান্য শিক্ষার্থীর মতো সুভদ্রের মনেও কুসংস্কার তার থাবা বসাতে পেরেছিল। কিন্তু সুভদ্র যখন নিজের কৌতুহলবশে উত্তর দিকে জানালা খুলে ফেলে,তখন তার মনে থাকা কুসংস্কার হঠাৎ করে জেগে ওঠে এবং সে কারণেই তার মনে হয় যে, উত্তর দিকে জানালা খোলা জন্য একজটা দেবীর অভিশাপ তার লাগবে এবং সে দেবীর অভিশাপ থেকে বাচতে সুভদ্র তার প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছিল।।
মানসিক দ্বন্দ্বঃ-
উত্তর দিকের জানলা খোলার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ ছ-মাস মহাতামসের বিধান দেন মহাপঞ্চক অন্যদিকে তাকে আড়াল করতে চেয়েছে পঞ্চক এবং আচার্য। আর এই দ্বন্দ্বেই ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সুভদ্র। পঞ্চকরা তাকে নিয়ে গেলেও মহাতামস ব্রত পালন করার জন্য আবার উপাধ্যায়-মহাপঞ্চকের কাছে ফিরে আসে সুভদ্র। নাটকের শেষে অচলায়তনের প্রাচীর ভেঙে পড়ায় তার প্রায়শ্চিত্ত শেষ না হওয়ার ফলে সুভদ্র রীতিমতো দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়। কিন্তু সুভদ্রকে অভয় দেন দাদাঠাকুর। পঞ্চক সুভদ্রকে চারিদিকের দরজা-জানলা খুলে দেওয়ার জন্য আহবান জানায়| নাট্যদ্বন্দ্ব অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সুভদ্রের মানসিক দ্বন্দ্বমুক্তিরও নিশ্চিত ইঙ্গিত থাকে সেই আহবানে।।